করোনায় স্বজনহারাদের জন্য বিনামূল্যে কাউন্সেলিং ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ‘কথা বলো কথা বলি’

0
78
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য বিনামূল্যে কাউন্সেলিং ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ‘কথা বলো কথা বলি’

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য বিনামূল্যে কাউন্সেলিং ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ঘোষণা করা হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওএইচডিআইআর ফাউন্ডেশন এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সংগঠন ‘মনের খবর’ যৌথভাবে এ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

সোমবার (৮ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সংগঠন ‘মনের খবর’।

উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যে কাজটি মনের খবর এর মাধ্যমে আগষ্ট থেকে চলছে, সেই কাজটি দেশের মানুষের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।‘ শুধু তাই নয় , মনের খবরকে সাধুবাদ ও জানান তিনি।

‘কথা বলো, কথা বলি’ সেবা গ্রহণের জন্য গ্রাহককে হটলাইন ০১৪০৭৪৯৭৬৯৬ নম্বরে ফোন করে সিরিয়াল নিতে হবে। শুক্রবার এবং সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত যেকোনো দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হটলাইন নম্বরে ফোন করে সিরিয়াল নেওয়া যাবে।

সংগঠনটির কর্মকর্তারা জানান, করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে পারিপারিক জীবন, রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপ, আন্তঃরাষ্ট্রীয় ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এর প্রকোপ থেকে বাদ যায়নি আমাদের জনজীবনও। গ্রাম থেকে শুরু করে রাজধানী সব মানুষ এক অনিশ্চয়তার সামনে যেন থমকে যায়। করোনার ভয়াল থাবায় অনেকেই হারিয়েছে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ কাছের মানুষকে।

করোনাক্রান্ত পরিবারের মানুষের মধ্যে মানসিক যেসব ক্ষতি হতে পারে তা উল্লেখ করে আয়োজক সংগঠনের কর্মকর্তারা বলেন, আর্থিক অনিশ্চয়তা, চাকরি বা ব্যবসায় ক্ষতি, লকডাউন, চিকিৎসার অপর্যাপ্ততা মানুষকে এক নতুন বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। এর মধ্যে কিছু মানুষ প্রিয়জন হারিয়ে, চাকরি হারিয়ে, ব্যবসা বন্ধ হয়ে একেবারে হতাশায় নিমজ্জিত হতে থাকেন। গবেষণা মতে হতাশা ও বিষণ্নতা ছাড়াও মানুষের মধ্যে প্যানিক অ্যাটাক, আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ, নিদ্রাহীনতা, মাদকাসক্তিসহ নানা মানসিক সমস্যার প্রকোপ বেড়ে যায়। তাদের পাশে থাকার আহ্বান জানান আয়োজকরা।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউর মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোরশেদ। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. ঝুনু শামসুন নাহার, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল, বিএসএমএমইউর মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহিদ, বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান। ছিলেন বাংলাদেশের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী।

এ সময় সাইকোলজিক্যাল সাপোর্টের গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তারা বলেন, সরকারি হিসাব মতে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭ হাজারের বেশি মানুষ। দেখা যায়, গ্রামের তুলনায় শহরের মানুষের মধ্যে কমিউনিটি সাপোর্ট, সামাজিক বন্ধন, বৈরী পরিবেশে থাকার অভিজ্ঞতা কম হওয়ায় তাদের মধ্যে মৃত্যুশোক সামলানোর ক্ষমতা ও অন্যান্য মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত দুর্বল। কিন্তু গ্রাম বা শহর উভয় পরিবেশের মানুষের মধ্যেই এসকল সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই, সব মানুষের জন্যই প্রয়োজন উপযুক্ত সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট।

তারা আরও জানান, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের খ্যাতনামা এবং অভিজ্ঞ সাইকিয়াট্রিস্ট, সাইকিয়াট্রি রেসিডেন্টস এবং সাইকোলজিস্টরা করোনায় স্বজনহারাদের বিনামূল্যে কাউন্সেলিং ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করবেন।

শরীফুল সাগর।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪
Previous articleগবেষণা: শহরের মানুষের শোক সামলানোর ক্ষমতা কম
Next articleরোগের নাম শুনলেই ভয় ভয় লাগে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here