আমরা কি মহামারী উত্তরণে মানসিক ভাবে প্রস্তুত?

আমরা কি মহামারী উত্তরণে মানসিক ভাবে প্রস্তুত?
আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা মহামারীর এই সংকট থেকে মুক্ত হয়ে কিভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায় সে বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারছে না।

মানুষ অভ্যাসের দাস। আমরা এক সময় করোনা মহামারীর কারণে দিশেহারা জীবন যাপন করছিলাম। মহামারীর দুঃসময়ে কিভাবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখবো এবং জীবন যাপন করবো সেটি নিয়ে অত্যন্ত মানসিক পীড়ার মাঝে ছিলাম। সামাজিক মেলামেশা বন্ধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্ম ক্ষেত্র সব ক্ষেত্রেই এখনো রয়েছে বিধি নিষেধ। স্বাভাবিক জীবনে অকস্মাৎ আসা এই পরিবর্তন আমাদের মাঝে চরম উদ্বিগ্নতা এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছে। তবে সময়ের সাথে সাথে আমরা মহামারীকে মেনে নিয়ে জীবনে সামনে এগিয়ে যাবার মানসিক সাহস এবং সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছি। ধীরে ধীরে আমাদের মাঝে মহামারী নিয়ে জীবন যাপনের অভ্যাস কষ্টদায়ক হওয়া সত্ত্বেও গড়ে উঠেছে। এখন আমরা বাইরে বের হলে মাস্ক পরতে অভ্যস্ত হয়েছি। সামাজিক মেলামেশা কমিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া আগে গৃহ বন্দী জীবন মানসিক চাপ এবং একাকীত্ব আমাদের যেন জাপটে ধরেছিল। এখন পরিবারের সবাইকে নিয়ে অধিক সময় ঘরে থাকার অভ্যাসটিও বেশ মনোরম হয়ে উঠেছে। এক দিক থেকে মানসিক চাপ কিছুটা হলেও কমিয়ে আমরা এই অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে পেরেছি। কিন্তু এখন সময় এসেছে মহামারী উত্তরণে মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের।

আমাদের মধ্যে এখন অনেকে এই অবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মানসিক শক্তি জুটিয়ে উঠতে পারছেন না। সরকার জন সাধারণের মাঝে করোনা টিকা করণ শুরু করেছে।  যদিও করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে এই মুহূর্তেই আমরা সুরক্ষা ব্যবস্থা ত্যাগ করতে পারবোনা, কিন্তু নিজেদের ও সমস্ত পৃথিবীর মানুষের জন্য আমরা মহামারী মুক্ত একটি পৃথিবী কল্পনা করতেই পারি। কিন্তু একই সাথে আমাদের মানসিক প্রস্তুতি ও নিতে হবে যেন আমরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি। ঘরে থেকে কাজ করা, অনলাইন ক্লাশ, সামাজিক মেলামেশা থেকে দূরে থাকা এসব অবস্থা পুনরায় বদলাতে চলেছে। তাই আমাদের প্রয়োজন যথেষ্ট পরিমাণ মানসিক শক্তি যা এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানাতে পারবে এবং আরও একবার পরিবর্তিত অবস্থার সাথে মানিয়ে নেবে।

পরিবর্তনের এই সময়ে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল নিজের মাঝে পরিবর্তিত অবস্থাকে মেনে নেওয়ার মানসিক পরিবর্তন। উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং সব কিছুর প্রতি নমনীয় মনোভাব প্রদর্শন এবং মেনে নেওয়া ও মানিয়ে নেওয়ার অভ্যাসই পরিবর্তিত অবস্থায় অভিযোজিত হওয়ার মূল মন্ত্র। পরিস্থিতির সাথে করনীয় কাজ গুলি করার পাশাপাশি নিজের মনকে হালকা রাখতে এবং খুশী থাকতে যা কিছু করনীয়, করুন। যদি কেউ আপনাকে নিয়ে সমালোচনা করে, এড়িয়ে চলুন। উৎসাহ প্রদান করলে ইতিবাচক মনোভাবের সাথে স্বাগত জানান। কিন্তু নিজের মনকে নেতিবাচক চিন্তা মুক্ত রাখুন এবং শুভ চিন্তার বিকাশ ঘটান।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

 

Previous articleরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়লে বাড়ে মানসিক সুস্থতার হার
Next articleআত্মসমালোচনার অভ্যাস: ফাঁদ নাকি আশীর্বাদ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here