দুঃখ ও বিষণ্ণতার পার্থক্য : বিষণ্ণতায় আক্রান্ত কিনা যেভাবে বুঝবেন

0
120
মানসিক অস্বস্তি কমানোর জন্য যা করতে পারেন

সময়ে সময়ে, সবাই দুঃখ অনুভব করে। দুঃখ একটি স্বাভাবিক আবেগ যা সাময়িকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হওয়া বা যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। কিন্তু বিষণ্ণতা আলাদা বিষয়।

জীবনের এক বা একাধিক ঘটনায় মানুষ দুঃখ বোধ করতে পারে। যেমন চাপ অনুভব করা, হঠাৎ ব্যক্তিগত ব্যর্থতা বা প্রিয়জনের মৃত্যু। অন্যান্য আবেগের মতো, দুঃখ অস্থায়ী এবং সাধারণত সময়ের সাথে সাথে দূর হয়ে যায়।

কিন্তু যখনই এটা দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয় তখনই এটা বিষণ্ণতায় রুপ নেয়। যারা দুঃখী তারা হয়তো কান্নাকাটি করে, তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলে, অথবা হাস্যরস ব্যবহার করে নিজেদের প্রফুল্ল করে কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু যদি বিষণ্ণতা পেয়ে বসে তখন আর ওই ব্যক্তি নিজের স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিক রাখতে পারে না।

ক্লিনিকাল বিষণ্নতা হল একটি দীর্ঘমেয়াদী মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি প্রায় প্রতিদিনই দুঃখের তীব্র অনুভূতি অনুভব করে, যা সামাজিক, পেশাগত এবং স্বাভাবিক কার্যকারিতার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিকে ব্যাহত করে। অর্থাত দুঃখ আর বিষণ্ণতার মূল পার্থক্য হলো একটা অস্থায়ী অন্যটা অধিক স্থায়ী।

আপনি দু:খিত বা হতাশাগ্রস্ত কিনা তা আমি কীভাবে/কখন বুঝবেন?

যখন আপনি পরিবার, বন্ধূ-বান্ধব বা অন্যান্যদের মাঝে থেকেও দুঃখিত অনুভব করবেন, তাদের হাসিখুসির মাঝেও নিজেকে প্রফুল্ল করতে পারবেন না তখন বুঝতে হবে আপনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছেন।

দুঃখিত যে কেউ একা থাকাকালীন সময়ে অধিক দুঃখ অনুভব করে। সামাজিক পরিবেশে মিশলে আস্তে আস্তে করে নিজের দুঃখটা সারিয়ে তুলতে পারে কিন্তু বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হলে সর্বক্ষণই দুঃখ অনুভব হয়। ব্যক্তি প্রচণ্ডরকম হতাশায় নিমজ্জিত হন। হতাশা একটি আবেগের চেয়ে বেশি; এটি একটি মানসিক রোগ।

যাদের ক্লিনিকাল বিষণ্ণতা আছের তারা দুঃখিতদের চেয়ে প্রবলভাবে অসহায়ত্ব, নিরাশা এবং নিজেকে মূল্যহীন বোধ করেন। তারা ভিতরে ভিতরে একটি ‘শূন্য’ অনুভূতি বর্ণনা করতে পারে এবং বিশ্বাস করতে পারে যে জীবন বেঁচে থাকার যোগ্য নয়।

দুঃখিত একজন ব্যক্তি কোনো কিছুর জন্য অনুশোচনা বা অনুশোচনা অনুভব করতে পারে, কিন্তু তারা কোনো প্রকার মূল্যহীনতা বা অপরাধবোধের স্থায়ী অনুভূতি অনুভব করতে পারে না। একজন দুঃখী ব্যক্তি কাঁদতে পারে, কিছু সময় একা কাটাতে পারে, তারপর অল্প সময়ের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। কিন্তু দুঃখি ব্যক্তি তা পারে না।

এক্ষেত্রে এই বিষণ্ণতা সপ্তাহ বা মাসব্যাপী স্থায়ী হয়ে থাকতে পারে। ক্লিনিকাল বিষণ্ণতা একটি সাধারণ বিশ্বব্যাপী অসুস্থতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র মতে বিশ্বব্যাপী মোট জনসংখ্যার ৩.৮ ভাগ লোক এই রোগে আক্রান্ত।

এটি অত্যন্ত গুরুতর অবস্থা। কারণ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তি আত্মহত্যার চিন্তা, স্ব-ক্ষতিকারক আচরণ করে থাকে। এর জন্য দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

দ্বিতীয় পবে পড়ুন….
বিষণ্ণতার কারণ, লক্ষণ ও প্রকারভেদ

সাইকোলজি (simplypsychology.org/) অবলম্বনে শাহনূর শাহীন

www.simplypsychology.org তে প্রকাশিত Olivia Guy-Evans এর লেখা মূল নিবন্ধ পড়তে ক্লিক করুন এখানে

/এসএস

Previous articleনারীর তলপেটে ব্যথা : তীব্রতা, কারণ ও করণীয়
Next articleকাজে মনোযোগ দিতে পারি না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here