হোম কোয়ারেন্টাইন: অস্থির শিশুদের সামলাবেন যেভাবে

0
64
হোম কোয়ারেন্টাইন: অস্থির শিশুদের সামলাবেন যেভাবে
হোম কোয়ারেন্টাইন: অস্থির শিশুদের সামলাবেন যেভাবে
করোনায় পৃথিবীর এই কঠিন সময়ে ক্ষতির আশঙ্কায় আপাতত স্কুল কলেজ, ডে-কেয়ার সব বন্ধ। সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিশুদের খেলার জায়গাগুলোও।
চারদিকে কোনো উৎসব নেই, বেড়ানো নেই, খেলার মাঠে যাওয়ার উপায় নেই। বড়দের জন্যও যখন কঠিন হয়ে গেছে টানা ঘরে থাকা। তখন ছোট শিশুদের মনের ওপর চাপ পড়াই  স্বাভাবিক। আর শিশুটি যদি হয় অস্থির এবং জেদি প্রকৃতির তবে তাদের সামলানো আরো কঠিন। 
এসময়ে বাচ্চাদেরকে সামলানোর জন্য যা করতে পারেন-
  • বাচ্চাকে বিভিন্ন ধরণের কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখতে হবে। বয়স অনুযায়ী বাচ্চাদের কাজের রকমফের হয়। খেয়াল রাখতে হবে, বাচ্চারা যে কাজগুলো করছে, সে কাজগুলো যেন বয়সোপযোগী হয়।
  • যে সময় বাচ্চাদের স্কুল খোলা থাকে, সে সময় বাচ্চারা একটা নিয়মের মধ্যে থাকে, একটা নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলে। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকার এই সময়ে আগের মত রুটিন অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না। তবুও এসময়ে একটি রুটিন মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে।
  • ঘুম থেকে উঠার পর ঘুমানোর আগ পর্যন্ত নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে চলতে হবে। আগে বাচ্চা যে সময়টুকু স্কুল, কোচিং বা টিচারের কাছে পড়া-শোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকত, সে সময়টুকু ঠিকমত কাজে লাগাতে হবে।
  • যেহেতু সবাই এসময় বাসায় আছেন, সবাই মিলে বাচ্চাকে নিয়ে ভালো কাজ করার, বাচ্চার সাথে পর্যাপ্ত সময় কাটানোর চেষ্টা করতে হবে। বাচ্চা সবসময়ই চায় মা-বাবা তাকে সময় দিক। কিন্তু অনেক কর্ম-জীবী মা-বাবাই কাজের ব্যস্ততার জন্য সময় দিতে পারেন না। এসময় মা-বাবা বাচ্চার সাথে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে ভালো সময় কাটাতে পারেন।
  • স্কুল থেকে যে হোম-ওয়ার্ক দিয়ে দেওয়া হয়েছে বা অনেক স্কুল অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রম চালু রেখেছে, সে কাজগুলো প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করাতে হবে।
  • যেসব বাচ্চারা কথা শুনতে চায় না, তাদের প্রতি অতিরিক্ত খেয়াল রাখতে হবে। তাদের ক্ষেত্রে এ.বি.সি. (অ্যানটিসিডেন্ট বা কারণবিচারপূর্বক, বিহ্যাভিওর বা আচরণ, কনসিকুয়েন্স বা ফলাফল) বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
  • এধরণের বাচ্চাদের কোন কাজের আগেই মেজাজ খারাপ করে দেওয়া যাবে না। যেমন: অনেক মা-বাবা বাচ্চাকে বার বার পড়ার কথা বলতে থাকেন, ফলে বাচ্চাদের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। তাই বাচ্চারা আর পড়তে চায় না। বাচ্চার বিনোদনের বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।
  • স্কুল বন্ধ বলেই যে তারা টিভি, কম্পিউটার বা মোবাইল নিয়ে সময় কাটাবে, এমন টা হতে দেওয়া যাবে না। পড়াশোনা বা বিনোদন, প্রতিটি বিষয়ের জন্যই সময় নির্ধারণ করে দেওয়া খুবই জরুরী। বাসার সবাইকেই একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলতে হবে।
  • বড়রা যা করছে তার প্রতিটি কাজ বাচ্চারা খেয়াল করে এবং বড়দের অনুসরণ করে। মা-বাবা যদি অগোছালো হন, সময়মত নিয়ম মেনে কাজ না করেন তবে বাচ্চারাও তাই করবে। মা-বাবার নিজেদের মধ্যে ঝগড়া, অর্ন্তদ্বন্দ; এগুলো কখনোই বাচ্চার সামনে প্রকাশ করা যাবে না। কারণ বাচ্চারা মা-বাবাকে অনুসরণ করে এবং নিজেরাও সে আচরণগুলো করে।

শ্রুতি লিখন: তাহসিন খুশবু

Previous articleযক্ষ্মার টিকার সাথে করোনা ভাইরাসের সম্পর্ক আছে কি?
Next articleখুব কাছের কারো ডিপ্রেশনে আপনার কী করা উচিত?
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here