শিশুর আদব-কায়দা শেখানোয় বিবেচ্য বিষয়াবলী

0
315
কিছু শিশু তাদের পিতা মাতার কাজকে কঠিন  করে তোলে

শিশুর আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া প্রত্যেক মা-বাবার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। আর এ শিক্ষা যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায় ততই মঙ্গল। উত্তম আচরণ একজনের ব্যক্তিত্ব প্রতিফলিত করার পাশাপাশি তার বেড়ে ওঠাও চিত্রিত করে এবং ওই ব্যক্তিকে স্থির থাকতে সহায়তা করে। এছাড়া, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গ মানিয়ে নিতেও এটি অত্যন্ত সহায়ক।
শিশুদের সঠিক উপায়ে আদব-কায়দা শিক্ষা প্রদান বিষয়ক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, আপনি আপনার সন্তানকে যেমন শিক্ষা দেবেন সে অন্যদের (পরিচিত/অপরিচিত) সঙ্গে ঠিক তেমনই আচরণ করবে। ওই গবেষেণায় শিশুদেরকে শিষ্টাচার তথা আদব-কায়দা শেখানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোকপাত করা হয়েছে। চলুন দেখে নেয়া যাক সেই পরামর্শগুলো।

১. শিশুর রোল মডেল হোন:

ছোটোরা মা-বাবাকে দেখেই শেখে। আপনি শিশুর সামনে যেমন আচরণ করবেন, ও সেটাই শিখবে। তাই শিশুর সামনে সবসময় নিজের সেরাটা দিয়ে ভাল কাজ করুন, যাতে আপনার শিশু বড় হয়ে তার বাবা কিংবা মা-এর মতোই হতে চায়।

২. আস্তে আস্তে শুরু করুন:

একদিনে সব শেখাতে যাবেন না। শুরুতে অল্প অল্প করে শেখান। শিশুর বয়স অনুযায়ী বোঝার ক্ষমতাও আপনাকে বুঝতে হবে। আগে বুঝে নিন নিয়ম-কানুন, আচরণগুলো ঠিক কতোটা আপনার শিশু গ্রহণ করতে পারবে, এরপর এগোন আস্তে আস্তে। অতিরিক্ত চাপ দিলে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়তে পারে, যা শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যহত করতে পারে।

৩. ম্যাজিক ওয়ার্ড:

‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বা ‘সরি’-র মতো শব্দগুলো সস্তা মনে হলেও এগুলো হলো ম্যাজিকাল ওয়ার্ড। শিশুকে শব্দ দুটির ব্যবহারসহ প্রয়োজন মতো কখন কোথায় এগুলো ব্যবহার করতে হয় সেই শিক্ষা দিন।

৪. ধীরস্থির হয়ে শান্তভাবে বোঝান:

শিশুকে অযথা বকাবকি করবেন না। মাথা ঠাণ্ডা রেখে শেখান। যেহেতু আপনার সন্তানের বয়স অনেকটাই কম, সেক্ষেত্রে ব্যক্তিত্ব গঠনের গুরুত্ব ও বুঝে নাও উঠতে পারে। তাই ধৈর্য ধরে শেখাতে থাকুন। অযথা বকাবকি করলে শিশুদের মধ্যে অকারণ জেদ চেপে যেতে পারে। এতে উল্টো প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

৫. স্বল্পসময়ে সেরাটা আশা করবেন না:

শিশুকে সময় দিন। শেখার কোনো বয়স নেই, শেষও নেই। কাজেই আপনার পাঁচ-ছয় বছর শিশুর কাছ থেকে অতিরিক্ত আশা করে ফেলবেন না। ভাল কাজ, ভাল কথা বলা, এসব শিখতে ওকে খানিকটা সময় দিন। বয়স অনুযায়ী তা বদলাবে। এতে হতাশ হয়ে পড়ার কোনো কারণই নেই। শেখানো শুরুর সাথে সাথেই আপনার সন্তান আচার-আচরণের দিক থেকে সেরা হয়ে উঠবে, এমনটা ভেবে নেয়া নিত্যান্তই বোকামি।

৬. শিশুকে পুরষ্কৃত করুন:

আপনার সন্তান কোনো ভাল কাজ করলে কিংবা ভাল কথা বললে তাকে পুরষ্কৃত করুন, উৎসাহ দিন। এতে ওর মধ্যে ভাল কাজ করার আগ্রহ জন্মাবে। এতে করে সে প্রায়ই ভাল কাজ করতে থাকবে। সেক্ষেত্রে অতি ব্যয়বহুল উপহার দেয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে বিষয়টি নেশায় পরিণত হতে পারে।
মা-বাবা হিসেবে আপনার শিশুকে আদব-কায়দা শেখানো আপনার একান্ত কর্তব্য ও দায়িত্ব। আপনার শিশুকে সঠিক উপায়ে শিষ্টাচার ও আচার-আচরণ শেখানোর বিষয়টি আজই নিশ্চিত করুন।
অনুবাদ করেছেন: তৌহিদ সোহান
তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
ওয়েব লিংক : https://indianexpress.com/article/parenting/learning/easy-ways-teach-child-good-manners-5413066/

Previous articleউদাসীন ভাব সবকিছুতে শুধু ঘুম আসে
Next articleমানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসার ঔষধ তৈরিতে এগিয়েছে বাংলাদেশ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here