এডিএইচডির বাচ্চাদের খাবার নির্বাচনে অভিভাবকের করণীয়

0
101
এডিএইচডির বাচ্চাদের খাবার নির্বাচনে অভিভাবকের করনীয়

এডিএইচডি বা হাইপারএক্টিভিটি ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত বাচ্চাদের বিশেষ ডায়েট প্রয়োজন। বেশকিছু খাবার রয়েছে যা এডিএইচডি আক্রান্তদের জন্য উপকারী বলে বিবেচিত হয়; আবার কিছু খাবারে এডিএইচডির লক্ষণগুলি আরও খারাপের দিকে যায়। স্বাস্থ্যকর এবং পরিপুর্ণ খাবার ADHD এর লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সুস্থ ও সফল জীবন উপভোগ সাহায্য করতে পারে।

এডিএইচডি বাচ্চাদের খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যালেন্সড নিউট্রিশন যেন থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন বি, সি, ডি-থ্রি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় ভিটামিন ও খনিজ জাতীয় খাবার এই চিকিৎসায় ভালো কাজ দেয়। তাই খাবার নির্বাচনে অভিভাবকরা সাধারনত কিছু পদক্ষেপ নিয়ে দেখতে পারেনঃ

প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দেয়া

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রক্রিয়াজাত খাবারে পাওয়া কৃত্রিম খাবারের রং এর কারণে এডিএইচডি শিশুদের মধ্যে hyperactivity বৃদ্ধি হতে পারে। তাই শিশুর খাদ্যতালিকা থেকে কৃত্রিম রং সমৃদ্ধ প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিতে পারেন।

খাবার তালিকায় প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার রাখতে পারেন

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন চর্বিহীন মাংস, মাছ, ডিম, মটরশুটি, বাদাম, সয়া এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার বাচ্চাদের এডিএইচডি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রক্তে শর্করা ব্যবহার করার সময় মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।

জিঙ্ক আছে এমন খাবার তালিকায় রাখা

জিঙ্ক হল একমাত্র সম্পূরক যা ADHD উপসর্গের ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ADHD রোগীদের রক্তে মাপা জিঙ্কের মাত্রা অন্যান্য শিশুদের তুলনায় কম এবং জিংকের ঘাটতি পুরণে এই রোগের উন্নতি ঘটতে পারে।

ফ্যাটি অ্যাসিড দেয়া  

ওমেগা-৩ এডিএইচডি স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং বেশিরভাগ মাছের তেলেই ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যেহেতু এডিএইচডি আক্রান্ত শিশুদের শরীরে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড কমে যায়, তাই এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের খাবার তালিকায় বেশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রয়োজন।

আয়রণের উপর নজর রাখুন

শিশুদের আচরণ স্বাভাবিক রাখতে আয়রনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লাল মাংস, মুরগির মাংস এবং মটরশুটিগুলিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। তাই ADHD- আক্রান্ত শিশুদের খাবারে আয়রনের মাত্রার দিকে মনোযোগ দেয়া জরুরী।

মিষ্টিজাতীয় খাবারের পরিমাণ কমানো

রক্তের চিনি বৃদ্ধি করলে উচ্চতর অ্যাড্রেনালাইন উত্পাদন প্রভাবিত হয়, যা শিশুদের মধ্যে হাইপারঅ্যাক্টিভ আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই মিষ্টি বা মিষ্টিজাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে খাবারের তালিকায় তাজা ফলমূল যুক্ত করুন।

জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার

এডিএইচডি স্বাভাবিক রাখতে এই দুটি খনিজ উপাদানের ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। জিঙ্ক ডোপামিন নিয়ন্ত্রণ করে এবং মস্তিষ্ককে শক্তিশালী করে। অন্যদিকে, ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্ককে শান্ত করতে সাহায্য করে (ADHD শিশুদের আচরণ গুরুতর) এবং মনোনিবেশ রাখতে সাহায্য করে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে, ADHD আক্রান্ত শিশুরা অনেক স্বাভাবিক খাবারের প্রতিও সংবেদনশীল; যদি এই ডায়েটগুলি সনাক্ত করা না হয় তবে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে। অভিভাবকের কাছে যদি মনে হয় কোনো খাবারে শিশুর চঞ্চলতা বেড়ে যায়, তাহলে খেয়াল করতে হবে সেটি অ্যালার্জির কারণে নাকি অতিচঞ্চলতার কারণে ঘটছে। তাই প্রয়োজনে ডায়েট নির্বাচনের আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে পারেন।

মাহজাবীন আরা শান্তা
প্রতিবেদক, মনের খবর।

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

Previous articleমানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রয়োজন সাইকোথেরাপি
Next articleএইচআইভি এবং মানসিক অসুস্থতা; রয়েছে পারস্পরিক সম্পর্ক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here