আমার লেখার মান আমাকে লেখা দিয়েই বাড়াতে হবে: অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক

0
378

আনোয়ারা সৈয়দ হক। পেশায় মনোচিকিৎসক। কিন্তু লেখালেখি তাঁর ধ্যান। লিখেছেন গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা, কবিতা; করেছেন অনুবাদও। সাহিত্য তাঁর কাছে নিজেকে প্রকাশের মাধ্যম- যার মধ্য দিয়ে তিনি পাঠকের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান আনন্দ-বেদনার অনুভব। বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, মাইকেল মধুসূদন, অনন্যা, কবীর চৌধুরী পুরস্কার পেয়েছেন আগেই। এবারে সে তালিকায় যুক্ত হয়েছে একুশে পদক। তিনি মনের খবর’র একজন সম্মানিত উপদেষ্টা। তাঁর এই প্রাপ্তিতে মনের খবর’র পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাতে বিশেষ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন সাদিকা রুমন। তারকার মন বিভাগের পাঠকদের জন্য সেটি তুলে ধরা হল:

মনের খবর: লেখালেখি ঘিরে আপনার অনুভূতি জানতে চাই
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: একজন লেখকের জীবনে লেখাই সব। লেখা একটা কমিটমেন্ট। তুমি একটা কমিটমেন্ট হাতে তুলে নিয়েছ নিজে নিজে যে, আমি লিখব, আমার কিছু কথা আছে, অনুভব আছে সেগুলো আমি মানুষের কাছে প্রকাশ করতে চাই। আমার কিছু কথা ছিল যেগুলো আমি মানুষকে বলতে চাই, তাদের সাথে ভাগ করে নিতে চাই। যখন কোনো পাঠক বলেন, আপনার এই লেখাটা আমার খুব ভালো লেগেছে, কেন ভালো লেগেছে? কারণ তার জীবনের কোনো একটি অভিজ্ঞতার সাথে এটি মিলে গিয়েছে। লেখাটা একটা শেয়ারিং অন্য মানুষদের সাথে।

মনের খবর: সাহিত্যের কোন মাধ্যমটিতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: সব মাধ্যমেই। কারণ আমি যখন লিখতে শুরু করি তখন ভাবি, এটা কি আমি কবিতায় বলব, নাকি গল্পে, নাকি উপন্যাসে? সেভাবেই আমি এগোই। এক্ষেত্রে মনই জানান দেয় যে, এই মাধ্যমটা গল্প হলে ভালো হয় বা এই মাধ্যমটা উপন্যাস হলে ভালো হয়। আমার মনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যেটা আসে সেটাই আমি বেছে নিই-সেটা কখনো গল্প, কখনো উপন্যাস, কখনো ভ্রমণকাহিনি।

মনের খবর: স্মৃতিকথায় আপনি বলেছেন যে, ছবি আঁকার প্রতি আপনার দুর্বলতা ছিল, পরবর্তী জীবনে কি কখনো ছবি আঁকার চর্চা করেছেন?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: আসলে ছোটবেলায় তো আমাদের বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না, ঘরে ছবি টাঙানো থাকত সেগুলো দেখে কল্পনার জগতে প্রবেশ করতাম। এখনকার অবস্থান থেকে দেখলে সেগুলো হয়ত খুব সাধারণ ছবি ছিল কিন্তু সেগুলোই আমার শিশুমনে কল্পনার পাখা মেলে দিয়েছিল। চর্চা বলতে আমি বড়ো বড়ো মিউজিয়ামে গিয়েছি, ছবি দেখেছি, তাঁদের ছবি নিয়ে লেখা বা আত্মজীবনী পড়েছি। এটা আমার ভালো লাগার জায়গা। কিন্তু আমার নিজেকে প্রকাশ করার মাধ্যম হচ্ছে লেখা।

মনের খবর: একটা সময় আপনাকে সংসার-চাকরি মিলিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে, তখন আপনি লেখার জন্য কীভাবে সময় বের করেছেন?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: যে জীবনটা আমি পার হয়ে এসেছি সেই জীবনটা তো তোমার নিজেরও এখন। সব মেয়েকেই বিয়ের পরে বেশ কয়েক বছর বাচ্চাকাচ্চা পালন করা, লেখাপড়া শেষ করে চাকরিবাকরি খোঁজা, একটু একটু করে উন্নতির পথে এগুনো-এসব নিয়ে যুদ্ধ করতে হয়। আমিও সেটাই করেছি। কিন্তু আমি মনে মনে ভেবেছি, আমি এভাবে থাকব না, এটা সাময়িক। এই পরিস্থিতি থেকে আমি বেরিয়ে আসব, আমি লিখব, আমি লেখক হব। আমি অন্য কাজ করব। এরকম একটা উদ্দীপনা থেকে আমি সেই স্ট্রাগলটা করতে পেরেছি।

মনের খবর: তখন কি নিয়মিত লিখতে বসার সুযোগ পেতেন?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: তখন তো নিয়মিত লিখতে বসতে পারতাম না। তবে ডায়রি লিখেছি। ভাবনাগুলো লিখে রেখেছি বা রাস্তায় একটা কিছু দেখলাম সেটা টুকে রেখেছি-যেটা নিয়ে একটা কবিতা হতে পারে বা গল্প হতে পারে। সেগুলো দেখে পরবর্তীতে বিস্তার ঘটিয়েছি লেখার।

মনের খবর: আপনার লেখার ভেতর দিয়ে একটা নিরহংকার চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে, এই জায়গাটা কি আপনার সহজাত?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: এটা তো অস্বীকার করলে চলবে না যে আমরা গ্রাস রুট থেকে উঠে আসা। অর্থাৎ আমরা মাটির শেকড় থেকে উঠে আসা মানুষ। আমাদের তো ঐ সমৃদ্ধি বা ঐ জৌলুস ছিল না, আমরা সাধারণ বাবা-মায়ের ঘরে জন্মেছি। সেখান থেকে আমরা আমাদের মেধা দিয়ে, শিক্ষা দিয়ে এগিয়ে এসেছি। সৈয়দ শামসুল হকের জীবনও তাই। আমাদের নিজেদের যে সঞ্চয়, অভিজ্ঞতা, লেখাপড়া সেটাকে নিয়ে আমরা পথ চলেছি। সামনে এগিয়েছি। সেটাকেই ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করেছি। আমি তো খুব বড়ো ডাক্তার হতে পারতাম, ইঞ্জিনিয়ার হতে পারতাম। কিন্তু আমি চেয়েছি একজন লেখক হতে, আমার সব অভিজ্ঞতাকে লেখার ভেতরে জারিত করতে। সে জায়গা থেকে আমি আমার দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণাবোধ লেখার ভেতরেই মিশিয়ে দিয়েছি। আমি অকপটে সবকিছু বর্ণনা করেছি। কারণ এটাই মানুষের জীবন। কেউ স্বীকার করে, কেউ করে না।

মনের খবর: একুশে পদক পাওয়ার পর আপনার অনুভূতি কী?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: পুরস্কারটাকে আমি এভাবে দেখি যে, সমাজে আমার মান বাড়ল। কিন্তু আমার লেখার মান তো বাড়ল না। আমার লেখার মান যেরকম ছিল সেরকই আছে। আমি একজন ম্যাচিউরড মানুষ আমার লেখার একটা লাইন দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তারপরও আমি চেষ্টা করছি সেই জায়গাটাকে অতিক্রম করতে, আরো ভালো করতে। আমার লেখার মান আমাকে লেখা দিয়েই বাড়াতে হবে। সম্মানটা সেখানেই। তবে হ্যাঁ, একুশে পদক পেয়ে আমি কি খুশি হইনি? অবশ্যই হয়েছি। কারণটা হচ্ছে, লোকে জানল যে আমি লিখি এবং লেখার একটা মর্যাদা দিলেন সরকার। এটাতেই আমি খুশি হয়েছি।

মনের খবর: লেখার সঙ্গে যাত্রার শুরুটা কবে, কীভাবে ঘটেছিল?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: আমি লিখতে শুরু করেছি বারো বছর বয়সে কিন্তু আমার মনে হয় ম্যাচিউরিটি এসেছে চব্বিশ বছর বয়সে। যেহেতু আমার ছেলেবেলা ছিল খুবই সংকীর্ণ একটা পরিবেশের ভেতরে। আমরা কোথাও বেরুতে পারতাম না, কারো সাথে মিশতে পারতাম না, কথা বলতে পারতাম না, মুসলিম ঘরের মেয়েরা যেভাবে থাকে সেভাবেই আমাদের রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। কাজেই আমাদের বাইরের পরিবেশের সাথে সেরকম পরিচয় ছিল না। সেজন্য ঘরে বসে কাগজ-কলম-খাতা এসব নিয়ে কাজ করতে করতে একসময় লিখতে শুরু করলাম।

মনের খবর: ‘ডাক্তার’ এবং ‘লেখক’ পরিচয়-এ দুটোর একটিকে যদি বেছে নিতে হয় কোনটিকে বেছে নেবেন?অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: অবশ্যই লেখক। ছেলেবেলা থেকেই লেখক হতে চেয়েছি। আমার প্রফেশন যাই হোক না কেন। আমি আজ ইঞ্জিনিয়ার হতে পারতাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারতাম বা কোনো সরকারি চাকরি করতে পারতাম। কিন্তু আমার স্বপ্ন তো লেখক হওয়া, সেটা তো আমাকে করতেই হবে। সেটা ডাক্তারি বাদ দিয়েই হোক, এমনকি সংসার বাদ দিয়েই হোক।

মনের খবর: স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি লেখক হন অনেক সময় তাঁদের মধ্যে এক ধরনের অন্তর্দ্ব›দ্ব কাজ করে। কিন্তু আপনি সবসময় সৈয়দ শামসুল হকের জন্য খুব শ্রদ্ধার একটা জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন। কখনো কি আপনাদের ভেতর এই দ্বন্দ্বগত সংঘাত হয়নি?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: না আমাদের মধ্যে কখনো এই সংঘাত হয়নি। কারণ আমি আত্মবিশ্বাসী মানুষ। অনেক বছর আগে যখন আমি কোনো পুরস্কারও পাইনি, প্রথম আলো থেকে আমার একটা ইন্টারভিউ নিয়েছিল; আমি বলেছিলাম, আই অ্যাম এ গুড রাইটার। আমি জানি, আমি ভালো লিখি। আমি বারো বছর থেকে লিখতে শুরু করেছি। সৈয়দ হক হয়ত তেরো/ চৌদ্দ বয়স থেকে শুরু করেছেন। লেখার একটা মান আমার নিজের মনের মধ্যেই দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। যে-কারণে তাঁর লেখা দিয়ে আমি প্রভাবিত হইনি এবং তিনি তো আমার লেখা দিয়ে প্রভাবিত হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা যে যার মতো কাজ করেছি। পরস্পরের প্রতি সহযোগিতা শুধু নয়, ভালোবাসা-সহমর্মিতা এবং কৃতজ্ঞতা সব বোধই আমাদের ছিল। আমি তাঁকে একজন লেখক হিসেবে দেখেছি, তিনি আমাকে একজন লেখক হিসেবে দেখেছেন। আমরা বন্ধুর মতো একসঙ্গে থেকেছি, একসঙ্গে বাস করেছি, এক বিছানায় ঘুমিয়েছি। এটা অপূর্ব একটা অভিজ্ঞতা, অপূর্ব একটা জীবন! আমার মনে হয় যে, আমি ভাগ্যবান একজন মানুষ যে আমি আমার সংসারে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পেরেছি, জীবনযাপন করতে পেরেছি। একইভাবে তিনিও পেরেছেন। এর বেইজটা ছিল কিছুটা অর্থনৈতিক। যদি আমি না জানি যে আমার হাড়িতে কী রান্না হবে এই অনিশ্চয়তা যখন থাকে তখন কিছুটা অস্থিরতা থাকে। কিন্তু এই বেইজটা আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম। যেহেতু আমি একজন ডাক্তার। আমি নিশ্চিত করেছি যে, আমার বাড়িতে রান্না হবে, ঠিকমতো বাজার করা হবে, সবকিছু সমানতালে হবে। আমি লিখব, আমার স্বামী লিখবেন। এই বেইজটা আমাদের তৈরি করে নিতে হয়েছে। এর জন্য আমাদের স্ট্রাগল করতে হয়েছে অনেক।

মনের খবর: আপনারা কি পরস্পরের প্রথম পাঠক ছিলেন?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: না, একেবারেই না। যখন আমার বই বেরিয়ে যেত তখন আর দশজন লোক যেভাবে বই পড়ে তিনিও সেভাবেই আমার বই পড়েছেন। তাঁর লেখাও আমি প্রকাশের পরই পড়তাম। কিছু লেখার পর সেটা পড়ে যে একজনকে শোনানো সেটা শুনতে খুব রোমান্টিক মনে হয় কিন্তু সেই সময় আমাদের ছিল না। আমরা প্রচন্ড ব্যস্ত থাকতাম দুজনই। লিখেই হয়ত পত্রিকায় পাঠিয়ে দিতাম, পত্রিকায় প্রকাশের পর বা বই প্রকাশের পরই নেড়েচেড়ে দেখলাম, পাতা উল্টে দেখলাম কে কী লিখেছে-এইটুকুই।

মনের খবর: আপনি একটা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, আপনার ভেতরে সৃজনশীলতা ছিল বলেই আপনি সৈয়দ হকের সাথে থেকে যেতে পেরেছেন-এটা ঠিক কীরকম?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: আমি যেমন আমার সৃজনশীলতার প্রতি আস্থাশীল ছিলাম এবং অত্যন্ত আত্মগর্বী ছিলাম, আমার স্বামীও ঠিক তাই ছিলেন। ছোটখাট নানা দ্বন্দ্ব তো মানুষের থাকেই। কিন্তু সৃজনশীল মানুষের এক ধরনের আত্মকেন্দ্রিকতা থাকে যেটা অনেকে মানতে পারেন না। কিন্তু ঈশ্বরের কৃপায় বা আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদের ভেতর সেই ধরনের কোনো সংঘাত ছিল না।

মনের খবর: সামনে কী লিখতে চান?
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: সামনে অনেক কিছু লিখতে চাই। সৈয়দ হকের মতো বলতে সাহস হয় না যে, লালনের মতো ১১৬ বছর বাঁচব। কারণ এ কথা বলার পরই তিনি চলে গেলেন। যদিও আমি বিশ্বাস করি, তিনি বেঁচে থাকবেন দীর্ঘকাল। তাঁর যেখানে সমাধি হয়েছে সেখানে, তাঁর পাশেই আর্কিটেক্ট আমার কবর রেখেছিল; কিন্তু আমি বলেছিÑনা, তিনি একজন সৃজনশীল মানুষ, তিনি যা অর্জন করেছেন জীবনে সেটা তাঁর নিজের অর্জন, সেখানে কারোর ভাগ নেই। আমি হতে পারি তাঁর স্ত্রী- মধুসূদনের পাশে হেনরিয়েটার মতো শুয়ে থাকলাম। কিন্তু আমি তো হেনরিয়েটা নই। আমি একজন আলাদা সত্তার লেখক। আমি আলাদাভাবে আলাদা জায়গায় সমাহিত হব। অবশ্যই আমার মন পড়ে থাকবে তাঁর কাছে। যদি তিনি সাধারণভাবে কোনো কবরস্থানে সমাহিত হতেন তাহলে আমি অবশ্যই তাঁর পাশে থাকতাম। কিন্তু তিনি রংপুরের একটা সরকারি মাঠে শুয়ে আছেন যেখানে একটা স্মৃতিসৌধ হবে; সেখানে গিয়ে আমি তাঁর পাশে থাকতে চাই না। আমি আমার মতো থাকব আলাদা। তাঁকে ভালোবেসে, তাঁকে শ্রদ্ধা করেই আমি দূরে থাকব। সেজন্য আমি মনে করি, আমার সামনে অনেক কাজ আছে। বিশেষ করে তিনি যেসব ডায়েরি লিখে গেছেন, মুখে মুখে অনেক কথা বলে গেছেন সেগুলোকে সমন্বিত করা আমার ওপর নির্ভর করছে। আমার হাতে বেশি সময় নেই। সেই কাজটা আমি শেষ করে যেতে চাই।

মনের খবর: মনের খবর’র পক্ষ থেকে আপনাকে অভিনন্দন।
অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক: ধন্যবাদ মনের খবরকে।

** সাক্ষাৎকারটি মনের খবর মাসিক ম্যাগাজিন, ২য় বর্ষ, ৩য় সংখ্যায় প্রকাশিত

Previous articleমনোযোগ ধরে রাখতে যা করতে পারেন
Next articleরাত হলেই দম বন্ধ হয়ে আসে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here