অনিদ্রা যেভাবে কাটিয়ে উঠবেন

0
34

ব্যস্ততার খাতিরে এক-দুই রাত নির্ঘুম কাটছে, এমন ঘটনা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু রাতের পর রাত যদি ঘুম না আসে তখন তা হয়ে যায় ভাবনার বিষয় এবং একে বলা হয় ইনসোমনিয়া।
নর্থওয়েস্টার্ন মেমোরিয়াল হাসপাতালের ঘুম বিষয়ক চিকিৎসক ভিকাস জেইন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘ঘুম না আসা, রাতভর সজাগ থাকা অথবা খুব ভোরে ঘুম থেকে জেগে যাওয়ার নামই ইনসোমনিয়া। যার ফলে সারাদিন কাটে ক্লান্তিতে, কাজকর্মে মন বসেনা, মেজাজ হয় খিটখিটে। সপ্তাহে টানা তিন রাত থেকে তিন মাস এমন করে চলতে চলতে এটি হয়ে যায় একটি দীর্ঘস্থায়ী দূরারোগ্য’।
এদিকে এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০-৪০ বছর বয়সী নারী-পুরুষ এ সমস্যায় বেশি ভুগে। অনেকে আবার এর সমাধান হিসেবে ঘুমের ঔষধ ব্যবহার করে থাকে। তবে যদি ঔষধের চেয়ে ভালো সমাধান থেকে থাকে, তাহলে ঔষধ বেছে নেয়া কেনো? আসুন জেনে নিই ইনসোমনিয়া কাটানোর ৭ টি উপায়।
০১. বই পড়ুন: ঘুমাতে যাওয়ার আগে বই পড়ুন। ই-বুক নয় বরং হার্ডকপি পড়ুন। এতে দ্রুত ২০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে আপনার ঘুম চলে আসবে। ২০১৪ সালে, ৫ জন ই-বুক পাঠক এবং ৫ জন হার্ডকপি পড়ুয়া পাঠককে নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়। এতে দেখা গেছে ই-বুক পাঠকের থেকে হার্ডকপি পড়ুয়া পাঠকের ঘুম তুলনামূলক দ্রুত আসে।
০২. ঘুমানোর জন্যই কেবল বিছানা ব্যবহার করুন: ঘুম না আসলেও বিছানায় গড়াগড়ির ফলে দেখা যায় ঘুম একেবারেই চলে যায় বরং ফোন, গ্যাজেট, ল্যাপটপ ব্যবহার করতে ইচ্ছে করে। এতে করে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে ঘুম চলে যায়। তাই শুধুমাত্র ঘুমানোর জন্যই বিছানা ব্যবহার করুন।
০৩. মেলাটোনিন সমৃদ্ধ খাবার খান: মেলাটোনিন সমৃদ্ধ খাবার (যেমন কিউই ফল) ঘুমাতে যাওয়ার ঘন্টাখানেক আগে খেয়ে দেখুন। এটি ঘুম আসতে সহায়তা করে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২ টা কিউই ফল খাওয়ার ঘন্টাখানেক পরেই ঘুম চলে আসে।
০৪. টক চেরি ফলের জুস: ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ১ কাপ করে ২ বার টক চেরি ফলের জুস পান করে থাকেন, তাদের স্বাভাবিক ঘুম হয়।
০৫. মেডিটেশন করুন: ঘুমানোর পূর্বে ২০ মিনিট ইমেইল, চ্যাটিং, কাজ সব একপাশে রেখে একান্ত নিজের জন্য সময় করে নিন। মানসিক সমস্ত চিন্তা দূরে রেখে মেডিটেশন করুন। আত্মিক শান্তি গড়ে তুলুন। এতে করে দ্রুত ঘুম চলে আসবে।
০৬. রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খান: ঘুমাতে যাওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন। মূলত খাবারে বিদ্যমান থাকে নানা রকমের ফ্যাট, রিফ্লাক্স যা আপনার ঘুমে অসুবিধা করে থাকে। তাই খাবার দ্রুত খেয়ে হজমের পর ঘুমালে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হয়, পাশাপাশি ঘুম আসতে সাহায্য করে থাকে।
০৭. ঘুমানোর কক্ষ থেকে টিভি দূরে রাখুন: টেলিভিশন একবার দেখতে শুরু করলে ঘুম আর তেমন আসেনা। ঘুম কেটে গেলে ঘুমানো তো হয়ে যায় আরও মুশকিল। ২০১৭ এর গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমানোর কক্ষে টেলিভিশন থাকার ফলে ঘুম কম হয় এবং ইনসোমনিয়া দেখা দেয়।
 
তথ্যসূত্র: মেন্সহেলথ।
অনুবাদটি করেছেন ইফ্ফাত আরা মুনিয়া।

Previous articleনিজেকে উপস্থাপন করতে পারি না, বুক ধড়ফড় করে
Next articleশিশুর স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়াবে সীমিত স্ক্রিন টাইম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here