৬০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া মানুষের একটি প্রজাতি নিয়ানডার্থালের কাছ থেকে করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারির জন্য দায়ী জেনোমটি (জিনগুচ্ছ বা বংশগতির ধারক) মানুষের (হোমো স্যাপিয়েন্স) শরীরে এসেছে ।
নতুন একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য। গবেষণা বলছে, বেশিরভাগ বাংলাদেশি এই জেনোমের ধারক।
মার্কিন গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবজাতির ইতিহাসের সঙ্গে এই জেনোমের রয়েছে এক রহস্যময় দীর্ঘ পথচলার সম্পর্ক।
আর এই গবেষণাটি করেছেন স্ভান্তে পাবো এবং হুগো জেবার্গ নামে সুইডেনের দুই জিন বিশেষজ্ঞ। তাদের সঙ্গে কাজ করেছে জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট, জাপানের ওকিনাওয়া ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং সুইডেনের কারোলিনস্কা ইন্সটিটিউট।
শুক্রবার (৩ জুলাই) অনলাইনে প্রকাশিত তাদের এই গবেষণার ফলাফল এখন সায়েন্স জার্নালে প্রকাশের জন্য অপেক্ষমান।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৬৩% মানুষের শরীরে ওই জেনোমের অন্তত একটি জিনের উপস্থিতি রয়েছে। আর পুরো দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই জিনের ধারক।
তবে এই অঞ্চলের বাইরে মানুষের মধ্যে এই জিনের উপস্থিতির হার অনেক কম। ইউরোপীয়দের মধ্যে ৮% এবং পূর্ব এশিয়ায় মাত্র ৪% মানুষের মধ্যে এই জেনোম পাওয়া গেছে।
আর আফ্রিকায় এটি একেবারেই অনুপস্থিত।
গবেষক পাবো জানান, কোভিড-১৯ মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের অধিক মৃত্যুহারের জন্য এই জিনোম আংশিক দায়ী হতে পারে।
তবে, বিশেষ এই জেনোমের উপস্থিতি ঠিক কী কারণে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে মারাত্মক অসুস্থতার সৃষ্টি করে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৬০ হাজার বছর আগে আধুনিক মানুষের একদল পূর্বসূরী আফ্রিকা থেকে ইউরোপ, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। নিয়ানডার্থালের সঙ্গে তাদের মিলনে জন্ম নেয় পরবর্তী প্রজন্ম। পরবর্তীতে কালের বিবর্তনে নিয়ানডার্থালরা বিলুপ্ত হয়ে গেলেও বংশ পরম্পরায় তাদের জিনগুলো দীর্ঘকাল ধরে প্রবাহিত হয়েছে মানুষের শরীরে।
তবে নিয়ানডার্থালদের থেকে আসা জিনগুলোর বেশিরভাগই আধুনিক মানুষের জন্য বিভিন্নভাবে ক্ষতিকর। এদের কারণে আধুনিক মানুষ ভুগেছে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত জটিলতায়। কখনওবা জটিলতা দেখা দিয়েছে সন্তান জন্মদান প্রক্রিয়ায়। ফলশ্রুতিতে নিয়ানডার্থাল জিনগুলো ধীরে ধীরে চলে গিয়েছে বিলুপ্তির পর্যায়ে। কিছু কিছু তো হারিয়েছে জিন পুল থেকে।
সূত্র: https://www.nytimes.com/2020/07/04/health/coronavirus-neanderthals.html
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন