সামাজিক জীবনে নিকোটিনের প্রভাব

0
70

নিকোটিনের ব্যবহার আমাদের সামাজিক জীবনযাপনকে ব্যাহত করছে এমনই তথ্য উঠে এসেছে নতুন একটি গবেষণায়।
আমরা জানি ধূমপান আমাদেরকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে। ধূমপানের ফলে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার পরিমানটা এইচআইভি, সড়ক দুর্ঘটনা, অন্যান্য মাদক সেবন এবং অন্য ধরণের অস্বাভাবিক মৃত্যুর চেয়ে বেশি। ধূমপানের ফলে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হার্ট এর সমস্যা, সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যাওয়া, কাজে অমনোযোগিতা এবং দূর্বল স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে হয় মানুষকে।
কেন মানুষকে ধূমপান ত্যাগ করতে এত বেশি সমস্যায় পরতে হয়?
আমেরিকান লেখক মার্ক টোয়েইন বলেছেন, ধূমপান ছেড়ে দেওয়া দুনিয়ার অন্যতম সহজ কাজ। কারণ, এটি তিনি একশবার করেছেন।
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীতে এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ধূমপান করে। তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ মানুষ এটি ছেড়ে দিতে চায়, কিন্তু পারে না। তারা পুনরায় আবার এটি গ্রহন করে থাকে। নিকোটিনের প্রভাব ব্রেইনে অনেক বেশি পরে। যারা অধিক ধূমপায়ী, তাদের অন্যের উপর শারীরিক নির্ভরশীল হয়।
কিন্তু কথা হচ্ছে, মানুষ কেন এটা ছেড়ে দিতে পারে না এবং বারবার কেন এটাকে পুনরায় গ্রহন করে?
একটা গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিকোটিন নেয়ার পেছনে অনেক সামাজিক কারণ আছে। যদিও নিকোটিন এর প্রতিস্থাপনের জন্য অন্য থেরাপি নেবার ব্যবস্থা রয়েছে। তবুও মানুষ এটি ত্যাগ করে তখনই, যখন তার নিজের ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকে।
যেসব মানুষ সামাজিক সমস্যার সম্মুখীন হয়, যারা সমাজে প্রতারিত ও মানসিকভাবে অসুস্থ তাদের নিকোটিন গ্রহণের প্রবণতা মানসিকভাবে সুস্থ মানুষের চেয়ে বেশি। ধূমপানের প্রবণতা জেলখানার কয়েদীদের মধ্যে স্বাভাবিক একটা বিষয়। যারা সংখ্যালঘু এবং যাদের শিক্ষার হার কম ও অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল তাদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
এক তৃতীয়াংশ মানুষ সামাজিকতা রক্ষার জন্য ধূমপান করে এবং অনেকে অন্যের দেখাদেখিও ধূমপান করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার কেউ শুধু হঠাৎ করে ধুমপান করে। কিন্তু তারা নিয়মিত নন। সামাজিকতা রক্ষার জন্য ধূমপান করা যুক্তরাজ্যে ধূমপানের একটা প্রধান কারন। সেখানে দেখা গেছে যারা নিজেরা ধূমপান করে না, তারাও পার্টিতে গেলে অন্যের দেখাদেখি ধূমপান করে বা করতে হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, নিকোটিন এর ব্যবহার সামাজিক কাজে উন্নতিসাধনে সাহায্য করে। যারা নিকোটিন গ্রহন করে না বা করা ছেড়ে দিয়েছে, তাদের সামাজিক কাজকর্মে বেশ বাধার সম্মুখীন হতে হয় যারা নিকোটিন নেয় তাদের চেয়ে বেশি। নিকোটিন মানুষকে সামাজিক দুশ্চিন্তা থেকেও দূরে রাখে। এটাও একটা কারণ ধূমপান ত্যাগ না করার।
সামাজিক ক্ষেত্রে যখন একজন ধূমপায়ী অন্য একজন ধূমপায়ীর সাথে পরামর্শ করে ধূমপান ত্যাগ করার, তখন তারা সেই কর্মক্ষেত্রে একাকীত্বের সম্মুখিন হয়। তাই ছেড়ে দেওয়াটা কঠিন হয়ে যায়। এগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, ধুমপান গ্রহিতাকে সামাজিকভাবে পুরস্কৃত করে।
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে।
অনুবাদটি করেছেন সুস্মিতা বিশ্বাস

Previous articleআবিষ্কার হলো মানসিক রোগ সনাক্তকরণ অ্যালগরিদম
Next articleবাবা-মায়ের ধর্মীয় বিশ্বাস শিশুর আত্মহত্যায় প্রভাবিত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here