মেনোপজ পরবর্তী যৌন সম্পর্ক যেমন হয়

0
321

মেনোপজ একজন নারীর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বয়সের মাঝামাঝিতে এসে এই মেনোপজের সূত্রপাত ঘটে। একজন নারীর জীবনের যে সময়টায় এসে ঋতুস্রাব অনিয়মিত এবং একটা সময় যেয়ে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, সে সময়টা থেকে মেনোপজের শুরু।
মেনোপজে শুধুমাত্র শারীরিক একটা পরিবর্তন হলেও, এর প্রভাব একজন নারীর মানসিক অবস্থাতেও দেখা যায়। অনেকের জন্য এটা জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময়। একটা সময়ে এসে যখন তারা ভাবতে শুরু করে পূর্বে যা ছিল, ভাল ছিল। জীবনের পরবর্তী ধাপের কি প্রয়োজনীয়। যৌন আকর্ষণের ক্ষেত্রেও এই মেনোপজের প্রভাব দেখা যায়। আগে হয়তো যৌন মিলন ছিল তার সঙ্গী কে খুশি একটা উপায় মাত্র। কিন্তু এই পর্যায়ে এসে এ মনোভাবে পরিবর্তন দেখা দেয়।
মধ্যবয়সে মেনোপজ নারীদের থেকে শোনা তাদের যৌন মিলন কেমন তার কিছু অভিজ্ঞতা পাঠকদের জন্য দেওয়া হলো।
০১. পীড়াদায়ক: মেনোপজের সময় হরমোনের পরিমাণ কমতে শুরু করে। তাই দেখা যায় যোনি বা ভ্যাজাইনা যে পরিমাণ নরম এবং নমনীয় হওয়া দরকার, সে পরিমাণ হয় না। একই সঙ্গে হরমোন হ্রাসের কারণে শরীর আগের মত যে আগ্রহ দেখাতো, তার পরিমাণও কমে যায়। যদি সময় থাকতেই এই ব্যাপারে প্রতিকার নেয়া যায়, তাহলে এই সমস্যা গুলো দূর করা সম্ভব। হরমোন প্রতিস্থাপন, এর একটা সমাধান হতে পারে। পরিচিত গাইনোকলজিস্টের সঙ্গে কথা বলে এই হরমোন প্রতিস্থাপনের নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। শারীরিক পরিবর্তনের জন্য এ বিষয়ের আকাঙ্ক্ষা একটা জটিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। যার প্রভাব শরীর, মন এবং সম্পর্কের উপর পরে। এক্ষেত্রে শারীরিক থেরেপিস্ট এবং বিবাহ কাউন্সেলরের কাছ থেকে নেয়া পরামর্শ এই ধাপ পার হতে সাহায্য করতে পারে।
০২. যৌন আকাঙ্খা তৈরি জন্য শ্রদ্ধা: সম্পর্কের গুণগত মানের উপর নির্ভর করে অধিকাংশ নারীর তার সঙ্গীর প্রতি কামনার বিষয়। প্রাথমিক অবস্থায় যে আকর্ষণ হয়তো বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে হতো, এই বয়সে এসে সেটা আর কাজ করে না। ফিলোসফার কোয়েস্টেনবাম বলেছেন, ‘একটা জীবনকালে দুইবার বিয়ে আশা করে রাখো, কখনো কখনো সেটা হয়তো একই ব্যক্তিকে দুইবার।’ দম্পতিকে এই মেনোপজ পরবর্তী সময়টাতে এসে বেশ কয়েকবার আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হয় সম্পর্কের ব্যাপারে।
০৩. পঞ্চাশের পর সঙ্গীর কৌতূহল অনেক যৌনআবেদনময়ী: আমাদের কথা যখন কেউ মনোযোগ দিয়ে শোনে, তখন আমরা যা বলি তা সে মনে রাখে। এজন্য  আমাদের চোখে সে পরিণত হয় একজন আকর্ষণীয় প্রেমিক হিসেবে। কিন্তু এই বয়সে এসে একজন সঙ্গী যে কিনা আপনাকে চিনে এসেছে অনেক বছর ধরে, কিন্তু এখনো সে আপনার ব্যাপারে কৌতুহল। বিষয়টা অবশ্যই আপনার জন্য আকর্ষণীয়। আমাদের চিন্তা, মতামত, প্যাশন, ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাওয়াটা এক ধরণের টার্ন অন হিসেবে কাজ করে।
০৪. আমি আমার ভাগের অংশ চাই: ভাগ্যক্রমে অধিকাংশ নারীর জন্য এই বয়সেও অর্গাজম একটা শক্তিশালী অভিজ্ঞতা। এর বাইরেও সাধারণ হাত ধরা, চুলে হাত বুলানো ইত্যাদি আকর্ষণীয়ই থাকে বয়সে। মূল কথা হচ্ছে মধ্যবয়সে এসে নারীরা তাদের নিজেদের যৌন অনুভূতির অংশ তার সঙ্গীর কাছে চাওয়ার ব্যাপারে কোনো ধরণের অনুতাপ বোধ করে না, যা হয়তো পূর্বে তাদের মধ্যে কাজ করতো।
০৫. আমি দেখতে কেমন সে বিষয়ে চিন্তা করা ছেড়ে দিয়েছি: মেনোপজ নারীরা সুযোগ দেয় আত্মসমালোচনা এবং বাধা কে পিছনে ফেলে আসার। এই বয়সে এসে শারীরিক সৌন্দর্য খুব একটা ভূমিকা আর রাখে না।
 
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে।
অনুবাদটি করেছেন মাঈশা তাহসিন অর্থী

Previous articleকেন কিছু মানুষ মাদকাসক্ত?
Next articleহস্তমৈথুন একটি স্বাভাবিক যৌন আচরন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here