মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি থাকাটা পুরো চিকিৎসা নয়

যৌন ভীতি আপনার সঙ্গীকেও প্রভাবিত করতে পারে

সমস্যা: আমার বয়স ২৫ বছর। প্রায় ৪ বছর ধরে ফেনসিডিল নিচ্ছি। আমি এই নেশা থেকে মুক্তি পেতে চাই। পরপর দুই-তিনবার মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছি। নেশা ছাড়তে কয়েকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই পারছি না। এ বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ চাই।
হাসান, সাভার, ঢাকা
পরামর্শ: মাদকাসক্তি চিকিৎসার প্রথম ধাপটি হচ্ছে মাদকাসক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তি এবং সদিচ্ছা। আপনাকে অভিনন্দন যে এই ধাপটি আপনি পার করতে পেরেছেন। আপনি নিজে সৎসাহসের সাথে স্বীকার করেছেন যে আপনি আসক্ত এবং আপনার মাঝে মাদকাসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ইচ্ছাটিও সুস্পষ্ট। এখন লক্ষ্য করার বিষয়টি হচ্ছে আপনি সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করতে পেরেছেন কি না। মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি থাকাটা পুরো চিকিৎসা নয়, চিকিৎসা প্রক্রিয়ার একটি অংশ মাত্র। মাদকের চিকিৎসা একটি সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনা। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় মাদক না নেয়ায় যে অসহ্য শারীরিক-মানসিক প্রতিক্রিয়া হয়, সে কারণে সে নিজেকে মাদক থেকে দূরে রাখতে পারে না। এই প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ এবং রোগীকে ভর্তি রাখার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় অনেক নিরাময় কেন্দ্র নামধারী প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার নামে আসক্ত ব্যক্তিকে কেবল আটকে রাখা হয়। অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক মানসিক নির্যাতনও করা হয়। সেসব প্রতিষ্ঠানে হয়তো কোনো মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নেয়া হয় না এবং সঠিক বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না। সেক্ষেত্রে আসক্ত ব্যক্তির নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি ও চিকিৎসা পুরোটাই বৃথা।
আপনি কোথায় কিভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন জানতে পারলে ভালো হতো। আর নিরাময় কেন্দ্র থেকে চলে আসার পর নিয়মিত মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ বা সাইকোথেরাপিস্টের সাথেও যোগাযোগ রাখতে হয়। বারবার কেন আপনি নেশার পথে পা বাড়াচ্ছেন তার প্রকৃত কারণটি খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী চিকিৎসক বা থেরাপিস্ট যে পরামর্শ দিবেন তা মেনে চলতে হয়। এ ব্যাপারে পরিবার ও প্রকৃত বন্ধুদেরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। আপনি আপনার প্রকৃত অভিবাবকসহ কোনো মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন। আশাকরি, সুপরামর্শে আপনি আবার ফিরতে পারবেন আলোর পথে।

Previous articleশিশুর ভবিষ্যত সাফল্যে প্রভাব ফেলে ভাষা
Next articleমাদক যৌনজীবনে প্রভাব ফেলে
সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here