বিষন্নতা থেকে মুক্তি পেতে…

0
40
দুঃখ ও বিষাদ মানুষের স্বাভাবিক আবেগ হিসেবেই পরিচিত। এই অনুভূতি প্রায়শই স্বল্পস্থায়ী হয়ে থাকে। তবে, যখন এই আবেগ অনেক দিন বা সপ্তাহের জন্য স্থায়ী হয়, তখন তাকে বিষন্নতা বলে যা অবশ্যই উদ্বেগের।
আমেরিকান সাইকিআট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের মতে, বিষন্নতা একটি সাধারণ কিন্তু গুরুতর মানসিক অসুস্থতা যেটি আপনার অনুভূতি, ভাবনা এবং কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে আশার কথা হলো, বিষন্নতা নামক এই সমস্যা বা মানসিক রোগের চিকিৎসা রয়েছে। চিকিৎসায় বিষন্নতায় ভোগা শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষই সুস্থ হয়ে যান। অধিকাংশ রোগীই চিকিৎসা নিয়ে বিষন্নতার বিভিন্ন উপসর্গ থেকে পরিত্রাণ লাভ করে থাকেন।
যদিও আগে মানুষ বিষন্নতা জন্য চিকিৎসা বা এটি নিয়ে কথা বলতে বিব্রত বোধ করতো। তবে ধীরে ধীরে যখন অনেক সেলিব্রিটি, মিউজিশিয়ান, পলিটিশিয়ান এ বিষয়টি নিয়ে জনসম্মুখে কথা বলতে শুরু করলেন তখন মানুষের মধ্যে বিষন্নতা নিয়ে সচেতনতার জন্ম হয় এবং মানুষ এ থেকে পরিত্রাণের জন্য সাহায্য খুঁজতে শুরু করে।
বিষন্নতার লক্ষণ:
অ্যাংজাইটি অ্যান্ড ডিপ্রেশন অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার মতে বিষন্নতার প্রধান প্রধান লক্ষণসমূহ যেমন হতে পারে সেগুলো দেখে নেয়া যাক:
* একটানা দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়ে থকা, উদ্বিগ্নতা কিংবা খালি খালি (মেজাজ) লাগা।
* হতাশ হয়ে পড়া
* নিজেকে অপরাধী, অপদার্থ ও অসহায় মনে হওয়া
* মনের অস্থিরতা ও বিরক্তি
* শখ পূরণের আগ্রহ ও আকাঙ্ক্ষা হারিয়ে ফেলা
* শরীর ও মনের শক্তি হারিয়ে ফেলা
* সিদ্ধান্তহীনতা, অমনোযোগী ও ভুলোমনা হয়ে পড়া
* নিদ্রাহীনতা, খুব সকালে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়া কিংবা অতিরিক্ত ঘুম
* ক্ষুধামন্দা ও শরীরের ওজন হ্রাস অথবা বেশি খাওয়ার প্রবণতা
* মৃত্যু কিংবা আত্মহত্যার চিন্তা
* চিকিৎসা করেও ভালো না একটানা চলতে থাকা কিছু শারীরিক সমস্যা যেমন : মাথা ব্যাথা, হজমে গোলমাল কিংবা কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের কোনো অংশে ব্যাথা-যন্ত্রণা ইত্যাদি।
বিষন্নতা থেকে মুক্তির তিনটি ধাপ
উপরোক্ত উপসর্গগুলির সম্মুখীন ব্যক্তিরা নিচের তিনটি পদক্ষেপ অনুসরণ করে বেশ ভালো ফল পেয়েছেন। ধাপগুলো হলো :
১. একজন যোগ্যতাসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। শুধুমাত্র একজন পেশাদার চিকিৎসকই বিশেষ মূল্যায়ন ও উপযুক্ত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে বিষন্নতা নিরূপণ করতে পারেন।
২. আপনার চিকিৎসকের চিকিৎসা পরিকল্পনা জেনে নিন। উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে বিষন্নতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। চিকিৎসকই পারে আপনার জন্য কোন পদ্ধতি সবচেয়ে ভালো কাজ করবে সেটি নির্ধারণ করতে। সাধারণত এর চিকিৎসায় সাইকোথেরাপির পাশাপাশি কিছু ওষুধ দেয়া হয়।
৩. চিকিৎসা প্রক্রিয়া ঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে এবং চিকিৎসকের নির্দেশিত ওষুধ নিয়ম মেনে গ্রহণ করতে হবে। হুট করে ওষুধ বা চিকিৎসা বন্ধ করে দিলে বিষন্নতা তো কমেই না বরং আরো বেড়ে যায়।
পরিশেষে, কোনোভাবেই বিষন্নতাকে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। ভয়ানক এই মানসিক রোগ জাতি, সমাজ কিংবা ব্যক্তির ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। যখনই আপনি বিষন্নতায় ডুবে যান দেরি না করে সুস্থ শরীর ও মনের জন্য তখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।
অনুবাদ করেছেন: তৌহিদ সোহান 
তথ্যসূত্র : মাউন্টেইন গ্রোভ নিউজ জার্নাল
লিংক : http://www.news-journal.net/online_features/senior_living/article_7307e4c4-36b7-57b0-b067-63a7c977111e.html
Previous articleটেনশন এর কারণে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে
Next articleকুসংস্কার আর অসচেতনতায় এক গ্রামে ২০০ প্রতিবন্ধী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here