পর্নোগ্রাফি স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়

0
183

পর্নোগ্রাফির প্রতি তরুণ ও যুবকদের আসক্তি বাড়ছে দিনদিনই। কিন্তু পর্নো আসক্তির বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক রয়েছে। দেখে নেয়া যাক এর ক্ষতিকর দিকগুলো-

১.মানসিকতা বিকৃত করে

আপনি যখন পর্ন ভিডিও দেখেন তখন সেখানে শুধু বস্ত্রহীন শরীরের মেলামেশা ছাড়া আর কিছুই দেখানো হয় না। সেখানে থাকেনা বাস্তবতার কোনো প্রতিচ্ছবি যা আপনার মনকে বাস্তব জীবন থেকে অনেক দূরে নিয়ে গিয়ে আপনার মন মানসিকতাকে বিকৃত করে ফেলে। পর্ন ভিডিওগুলোতে মেয়েদেরকে দেখানো হয় সম্পূর্ণরূপে ভোগ্য বস্তু হিসেবে যেখানে মানবতা এবং মনুষ্যত্বের কোন ছিটেফোঁটাও নেই। আর এতে অভ্যস্ত হয়ে আপনি পৃথিবীর প্রত্যেকটি মেয়েদের দিকে তাকালেই তাদের বিশেষ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দিকে চোখ চলে যাবে। আপনার অনেক সময় হয়তো মনে হয়ে থাকবে যে, এই মেয়েটার এই অঙ্গটা যে কেমন, সেটা দেখলে যে কত ভালো লাগতো। আর এই বিকৃত মন-মানসিকতার কারণেই আপনি যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই শুধু যৌনতা ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাবেন না।

২. স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়

পর্ণ আসক্তি আপনার স্মৃতিশক্তি বহুগুণে কমিয়ে দেয়। পর্ণ ভিডিও দেখার কারণে মানুষের মস্তিষ্কে স্বল্পসময়ের জন্য এক ধরনের উত্তেজনার সৃষ্টি হয় যা তার স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয় এবং কাজে মনোযোগ সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে। ডুইবার্গ এসএন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান লেয়ের ২৬ বছর বয়সী ২৪ জন মানুষের ওপর একটি গবেষণা করে দেখেছেন যে, পর্ন ভিডিও দেখার ফলে সেটি তাদের মস্তিষ্কের নিউরনগুলোকে দুর্বল করে ফেলে।

৩. ভালোবাসা নষ্ট করে

পর্ন ভিডিওতে ভালোবাসা বলতে শুধু দেখানো হয়ে থাকে যৌনসঙ্গম। কিন্তু ভালোবাসা মানে শুধুই কি যৌনসঙ্গম? কখনো না। আপনি আপনার সঙ্গী বা সঙ্গীনির সাথে শারীরিক মিলনের পাশাপাশি হাসি খেলায় মেতে থাকবেন, তাকে নিয়ে ঘুরবেন, তার সাথে সুখের এবং দুঃখের গল্প করবেন এগুলোই হল প্রকৃত ভালোবাসা। কিন্তু পর্ন ভিডিওগুলোতে সত্যিকারের ভালোবাসার ছিটেফোঁটাও নেই যা মানুষকে ভালোবাসা সম্পর্কে ভুল ধারণা প্রদান করে মানুষের ভালোবাসা নষ্ট করে দেয়।

৪. অক্ষম হয়ে যেতে পারেন

গবেষকদের মতে, অতিরিক্ত পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্তি আপনার শারীরিক এবং মানসিক দিকগুলো বিকল করে ফেলতে পারে। কারণ পর্নো ভিডিওগুলি ধারণ করা হয় হাই ডেফিনেশন ক্যামেরার মাধ্যমে যে কারনে মেয়েদের শরীরের প্রত্যেকটি অংশ অত্যন্ত আকর্ষনীয়ভাবে ফুটে ওঠে। কিন্তু বাস্তব জগতে যখন আপনি আপনার সঙ্গিনীর শরীরে অংশগুলি ভিডিওর মতো আকর্ষণীয়ভাবে পাবেন না, তখন খুব সহজে উত্তেজিত হওয়া আপনার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাছাড়া, পর্ন ভিডিওগুলোতে নতুন নতুন সুন্দরী মেয়েদেরকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা আপনার অভ্যাসে পরিবর্তন করে ফেলে। ফলে অনেক সময় নিজের স্ত্রীর সাথে বারবার মিলন করতে আপনার বিরক্ত বোধ হবে। আপনার মনে হবে যদি নতুন কাউকে পেতেন তাহলে অনেক ভালো হতো।

গবেষণায় দেখা গেছে , টিনেজার বয়সে পদার্পণের শুরু থেকেই যারা পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্ত তাদের মধ্যে এই সমস্যাগুলো অত্যন্ত বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। তবে চিকিৎসা বিদ্যার মতে আপনি যদি নিয়মিত তিনমাস পর্ন ভিডিও না দেখে, হস্তমৈথুন না করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তাহলে আপনি পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন।

৫. বেশ্যাবৃত্তি আপনার দ্বারাই তৈরি হয়

আপনি পর্ন ভিডিও দেখছেন মানে সারা পৃথিবীতে বেশ্যাবৃত্তি বিস্তৃত হবার পেছনে অবদান রাখছেন। আমার আপনার মত মানুষগুলো যদি পর্ন ভিডিও থেকে নিজেকে দূরে রাখে তাহলে খুব সহজেই প্রস্টিটিউশন মার্কেট চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই যদি আপনি নিয়মিত পর্ণ ভিডিও দেখেন তাহলে পৃথিবীতে বেশ্যবৃত্তি সৃষ্টির জন্য অনেকটাই দায়ী হয়ে থাকবেন।

সুতারং ভেবে নিন। পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্তি বাড়াবেন নাকি এসব থেকে দূরে সরে আসবেন?

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে 

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

 

Previous articleসুস্থ থাকতে মন খুলে হাসুন
Next articleঘন ঘন মন পরিবর্তন হয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here