নতুন সাইকিয়াট্রিস্ট হলেন ১৪ জন

0
829

চিকিৎসা সেবায় দেশের সনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। চিকিৎসা সেবায় যেমন সুনাম রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির তেমনি সুনাম রয়েছে শিক্ষার ক্ষেত্রেও। প্রতি বছরই অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থী এই প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে।

প্রতিবারের ন্যায় এবারও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রি বা মনোরোগবিদ্যা বিভাগ থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন সম্পন্ন করেছে একদল মেধাবী শিক্ষার্থী। ২০১৭ সালে শিক্ষা গ্রহন শুরু করে ৫ বছর মেয়াদী কোর্স শেষে বর্তমানে তাঁরা গ্র্যাজুয়েট (মনোরোগ বিশেষজ্ঞ)। অর্জিত এই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে সেবা দেয়ার পালা তাদের।

গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়ার্ট্রি অনুষদ থেকে পাঁচ জন ও চাইল্ড এন্ড এডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি থেকে তিন জন পাশ করেন।

এছাড়া ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ থেকে সাইকিয়াট্রি অনুষদের তিন জন ও সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাইকিয়াট্রি অনুষদ থেকে এক জন পাশ করেন।

পাশাপাশি বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান এন্ড সার্জনস এর অধীনে ফেলোশিপ অব কলেজ অব ফিজিশিয়ান এন্ড সার্জনস (এফসিপিএস) ডিগ্রী অর্জন করেন আরও দু্ইজন। তাদের মধ্যে জাতীয় মানসিক ইন্সিটিউট অব মেনটাল হেলথ থেকে ডা. রুবিনা হোসাইন এবং সম্মলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে ডা. মো. সামিউস শাহেদ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রি অনুষদ থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করা শিক্ষার্থীরা হলেন,
বিজয় কুমার দত্ত, মোঃ রায়হান সিদ্দিক, মোঃ আনোয়ার হোসাইন, কামরুন নাহার ও বসুদেব চন্দ্র পাল।

একই প্রতিষ্ঠানের চাইল্ড এন্ড এডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি অনুষদ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা হলেন, সাদিয়া আফরিন, রুবাইয়া খান ও মুকুল চন্দ্র নাথ।

পাশাপাশি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ এর সাইকিয়াট্রি অনুষদ থেকে পাশ করেন- তাইয়েব ইবনে জাহাঙ্গীর, জহর দত্ত ও আশেক উল্লাহ।

এছাড়া সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এর সাইকিয়াট্রি অনুষদ থেকে পাশ করেন আফরোজা আক্তার।

সফলতা অর্জনের পর বেশ উচ্ছাসিত এই সদ্য গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা। তাদেরই একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রি অনুষদের শিক্ষার্থী মোঃ রায়হান সিদ্দিক। তিনি বলেন, পাঁচ বছরের কোর্সে আমি এই প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক কিছু শিখেছি। পড়াশুনার মাধ্যমে শিখেছি, শ্রদ্ধেয় স্যারদের কাছ থেকে শিখেছি, রোগীদের সার্ভিস দেয়ার মাধ্যমে শিখেছি।

তিন আরও বলেন, (ন্যাশনাল মেন্টাল হেল্‌থ সার্ভে ২০১৮-১৯) অনুযায়ী মানসিক রোগীর ৯২% রোগী সচেতনতার অভাবে চিকিৎসার আওতায় আসছে না। আমি তাদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করব ও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পরার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে মানসিক সেবা দিয়ে যাব।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইল্ড এন্ড এডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি অনুষদের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি । খুবই ভালো লাগছে । পাঁচ বছরে যে শিক্ষকদের পেয়েছি, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শিক্ষকরা আমাদের এত চমৎকারভাবে সবকিছু শিখিয়েছেন যে আমি মনে করছি পরবর্তীতে আমরা খুব ভালভাবে কাজে লাগাতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন এমন কিশোর-কিশরীর সংখ্যা শতকরা ১৩.৬%। এদের মধ্যে অজ্ঞতা ও অসচেতনতার অভাবে চিকিৎসার আওতায় না আসা রোগীর সংখ্যা শতকরা ৯৪.৬%। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে আমরা বাংলাদেশের কিশোর কিশোরীদের মানসিক সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারব।

 

বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান এন্ড সার্জনস এর অধীনে ফেলোশিপ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ডা. রুবিনা হোসাইন বলেন, দীর্ঘ দিন ট্রেইনিং নিয়ে এই সফলতা অর্জনে আমরা বেশ উচ্ছাসিত। পাশাপাশি আমরা সর্বদাই চেষ্টা করবো কমিউনিটির মধ্যে দেশের সকল শ্রেণীর মানুষের মানসিক সেবা নিশ্চিত করা।

মানসিক রোগীদের সিংহ ভাগ চিকিৎসার আওতায় না আসা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রি অনুষদের চেয়ারম্যান ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদ বলেন,মানুষের মাঝে মানসিক রোগ বিষয়ে সচেতনতা কম। তাছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানসিক রোগ নিয়ে যথেষ্ঠ কাজ না করাকেও দায়ী করেন তিনি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করতে গেলে অর্থনৈতিক সাপোর্টের দরকার, কিন্তু সেই সাপোর্টের পরিমাণ অনেক কম । যার কারণে কাজ করতে বাধা পেতে হয় বলেও জানান তিনি ।

দেশে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সংখ্যা অনেক কম। এর অভাব পূরণে ডাঃ নাহিদ মোর্শেদ মেহজাবীন দিকনির্দেশনা দিয়ে বলেন, দক্ষ ব্যাক্তি দক্ষ চিকিৎসা দিতে পারে। এর জন্য মনোরোগবিদ্যা বিভাগে পড়াশুনার জন্য পর্যাপ্ত স্টুডেন্ট আসতে হবে। তাদের উন্নত ট্রেইনিং ও বিভিন্ন কোর্স করানোর মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করে এই অভাব পূরণ করা যেতে পারে।

– আহমেদ মনির 

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে 

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

Previous articleঘন ঘন মন পরিবর্তন হয়
Next articleমানসিক চাপের সময় কিভাবে নিজেকে সামলে রাখবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here