একেকটা দিন কিন্তু একেকটা লাইফ: চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম

[int-intro]একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম। তিনি ভাবেননি একজন চিত্রশিল্পী হবেন, তবুও হয়েছেন। জীবনের একটা বড় অংশ কাটিয়েছেন তিনি স্পেনে। পেয়েছেন স্পেনের অন্যতম সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা “দ্য ক্রস অব দি অফিসার অব দি অর্ডার অব কুইন ইসাবেলা” পদক। তথাপি দেশে ফিরে এসেছেন মাটির টানে। বছরের অর্ধেকটা সময় এখন দেশেই কাটান। বিশ্বখ্যাত এই শিল্পী এবার তাঁর মনের খবর জানাচ্ছেন আরমান কামালের কাছে।  [/int-intro]

[int-qs]কেমন আছেন?[/int-qs]
[int-ans]ভালো আছি।[/int-ans]
[int-qs]কেন ভালো আছেন?[/int-qs]
[int-ans]ভালো থাকতে হয় বলেই ভালো আছি।[/int-ans]
[int-qs]ভাল থাকা কী জরুরি?[/int-qs]
[int-ans]খুব জরুরি।[/int-ans]
[int-qs]কেন?[/int-qs]

[int-ans]অন্ধকার না থাকলে যেমন আলো বোঝা যায় না, খারাপ না থাকলে ভালোটাও বোঝা যায় না। সাফারিংস আছে বলেই আমরা লাইট খুঁজি, মুক্তি খুঁজি।[/int-ans]

মনিরুল ইসলাম 2
[int-qs]ভালো থাকতে হলে কোন কোন দিক ভালো থাকতে বা রাখতে হয়?[/int-qs]
[int-ans]তিনটা জিনিস-স্বাস্থ্য, সম্পদ এবং ভালোবাসা। এগুলো ভয়ংকর যদি আমরা এগুলোকে ভালো করে ব্যবহার না করি।[/int-ans]
[int-qs]ভালো থাকার জন্যে কি প্রতিদিন জরুরি? [/int-qs]
[int-ans]আমরা তো প্রতিদিনই ভালো থাকতে চাই। কিন্তু কিছুক্ষণের জন্য মানসিকভাবে মারা যাওয়াটাও ভালো। আমি ভালো থাকতে চাই, আবার মরেও যেতে চাই। এটা দরকার।[/int-ans]
[int-qs]মন খারাপ হয়? [/int-qs]

[int-ans]খুব কম। আমরা আর্টিস্টরা যারা আছি, তাদের আলজেমিয়ার্স বলতে গেলে হয় না। ব্রেইন যখন অ্যাক্টিভ থাকে মন খারাপ করার সুযোগ থাকে না। ছবি ভালো হচ্ছে বা হচ্ছে না, এটার মধ্যেই আমাদের মন খারাপ সীমাবদ্ধ (হাসি)। [/int-ans]

[int-qs]মন খারাপ হলে কি করেন?[/int-qs]
[int-ans]মন খারাপের কারণটি আগে দেখতে হবে। সেটার উপরে ডিপেন্ড করে। ব্রেন ইনঅ্যাক্টিভ থাকলে, দুঃখ-কষ্ট, ভায়োলেন্স চারপাশ থেকে এসে পড়ে। ব্রেন অ্যান্ড মাইন্ড অ্যাক্টিভ রাখতে হবে।[/int-ans]
[int-quote]একটা হলো হেলথ। যাকে আমরা শরীর ভালো থাকার অর্থে ব্যবহার করি। তার সঙ্গে মানসিক সুস্থতাও অবশ্যই জরুরি। ভালো চিন্তা করা, ভালো আইডিওলজি থাকা, এটা খুব জরুরি। তবে একেকজন মানুষ একেকভাবে চিন্তাভাবনা করে। ডাক্তাররা বলে টেনশনের কারণেই বড় বড় অসুখ হয়। এগুলোকে পরিহার করতে হবে।[/int-quote]
[int-qs]দুঃখ, কষ্ট, রাগ, হিংসা। এসব কিভাবে দেখেন?[/int-qs]
[int-ans]এসবের ভেতরেই তো আমরা বাস করছি। এটা ভালো। তাদের জন্যেই এটা খারাপ যারা কন্ট্রোল করতে পারে না।[/int-ans]
[int-qs]প্রতিদিনের রুটিনে হেরফের হলে মানসিকভাবে প্রভাব ফেলে?[/int-qs]

[int-ans]ব্যক্তি ভেদে এটা ভিন্ন ভিন্ন রকমের। অনেক মানুষ আছে ডিসিপ্লিনড। আমার ক্ষেত্রে, আই অ্যাম ভেরি অডার্ড উইথ দি ডিজঅর্ডার। বাইরে থেকে দেখে মনে হতে পারে আমি ডিজঅডার্ড। আসলে আমি তা নই। এই যে এত আগোছালো দেখছো, আমি জানি কোথায় কী আছে, সাজালে কিন্তু আর পাব না। একেকটা দিন কিন্তু একেকটা লাইফ। আমি ছবি আঁকি। কালকে একটি ছবি আঁকা ধরলে কালকেই সেটি শেষ করার চিন্তা করব। কারণ পরদিন মাথায় নতুন জিনিস আসবে। নতুন চিন্তা আসবে। ধর, ছবিটি শেষ কিন্তু সাইন করার সময় বদলাতে ইচ্ছা করল, পুরোটাই কিন্তু বদলাতে হবে।[/int-ans]

[int-qs]হিংসা হয়?[/int-qs]

[int-ans]হয়। পজেটিভ হিংসা, নেগেটিভ না। ভালো ছবি দেখলে মনে হয়, তার কাছাকাছি কীভাবে আঁকতে পারব, তার কাছে যেতে পারি কিনা ওই অনুসারে হিংসাটা করি। এটা ভালো।[/int-ans]

[int-qs]কাকে বেশি হিংসা হয়?[/int-qs]

[int-ans]ওইভাবে ভেবে দেখি নি। কিন্তু হিংসা হয়। ইউরোপীয়ান আর্টিস্টদের কিছু ছবি দেখলে ওদের মতো করে আঁকতে ইচ্ছা করে। এগুলোতে একটা হিংসার ব্যাপার আছে, যে আমরা কেন পারি না।[/int-ans]

মনিরুল-ইসলাম 3
[int-qs]যদি আরেকবার ভালোবাসার সুযোগ পেতেন, কাকে ভালোবাসতেন? [/int-qs]

[int-ans]ভালোবাসা তো যে কোনো দিকেই যেতে পারে। মানুষের সার্ভাইভালের জন্য এটা একটা বেসিক ফাউন্ডেশন। মরক্কোর মরুভূমিতে এক লোককে পাথর আঁকড়ে বসে থাকতে দেখেছি। সে সারাটা জীবনই এই পাথর আঁকড়ে বসে আছে। বিকজ হি লাভড দিস। তারে দুনিয়া অফার করলেও সে আসবে না। ভালোবাসার কোনো সংজ্ঞা নেই। আসলে যে কোনো সময় যে কোনকিছুর প্রতিই ভালোবাসা হতে পারে। এটা আমাদের কন্টিনিউ কাজ করার এক ধরনের প্রেরণা।
[/int-ans]

[int-qs]মানসিকভাবে কি কখনো অসুস্থ হয়েছেন?[/int-qs]

[int-ans]হ্যাঁ। দিস ইজ পার্ট অব হিউম্যান লাইফ। শারীরিকভাবেও হয়েছি, ছোটবেলায়, ডেঙ্গু হয়েছিল।  এখন গলব্লাডার অপারেশন হচ্ছে।[/int-ans]

[int-qs]মানসিক স্বাস্থ্যকে কিভাবে দেখেন?[/int-qs]

[int-ans]মানসিক আর দৈহিক স্বাস্থ্যের কিন্তু আকাশ-পাতাল তফাত। মানসিক স্বাস্থ্য বিগড়ে গেলে একদম গোড়া থেকে ঠিক করতে হয়। মরাল এডুকেশন, স্পিরিচুয়াল এডুকেশন প্রয়োজন হয়। মানুষের তো অ্যামবিশনের সীমা নেই। অবসেশনও ভালো না, খুব খারাপ।[/int-ans]

[int-qs]মানসিক সুস্থতাটা যে কোনো সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনার জীবনে মানসিক শক্তির প্রভাব কতটুকু?[/int-qs]

[int-ans]একটা হলো হেলথ। যাকে আমরা শরীর ভালো থাকার অর্থে ব্যবহার করি। তার সঙ্গে মানসিক সুস্থতাও অবশ্যই জরুরি। ভালো চিন্তা করা, ভালো আইডিওলজি থাকা, এটা খুব জরুরি। তবে একেকজন মানুষ একেকভাবে চিন্তাভাবনা করে। ডাক্তাররা বলে টেনশনের কারণেই বড় বড় অসুখ হয়। এগুলোকে পরিহার করতে হবে।[/int-ans]

[int-qs]স্বপ্ন দেখেন?[/int-qs]
[int-ans]দেখি। ঘুমন্ত স্বপ্ন দেখি, জাগ্রত স্বপ্নও দেখি।[/int-ans]
[int-qs]যদি কেউ বেশি কথা বলে, শুনতে কেমন লাগে?[/int-qs]

[int-ans]কথা বলাটা একটা আর্ট। কেউ কথা বললে, উঠে যেতে ইচ্ছা করে, কেউ কথা বললে শুনতে ইচ্ছা করে। অল্প কথায় যে সুন্দর করে সবকিছু প্রকাশ করতে পারে তাকেই আমরা প্রাধান্য দেই, তার চারপাশে ঘোরাফেরা করি।[/int-ans]

[int-qs]যে কাজটির জন্য পরিচিত, সেটা মানুষের মনের উপরে বেশ প্রভাব ফেলে। একে কীভাবে দেখেন?[/int-qs]

[int-ans]অবশ্যই। ছবির জগৎটি অ্যাবস্ট্রাক্ট। কেউ পোর্ট্রেট করে, কেউ ল্যান্ডস্কেপ। ইলেকট্রনিক্সেও আর্ট ঢুকে গেছে। আর্ট ইজ মিনিংলেস। কিন্তু আমাদের জীবনের প্রতিটি ইঞ্চিতে আর্ট দরকার। আর্ট অব টকিং, আর্ট অব ওয়াকিং, কুকিং, সবই তো আর্ট। শিল্প হচ্ছে প্রাণের খোরাক।[/int-ans]

[int-qs]পেশায় একজন সফল মানুষ, অন্য পেশায় গেলে সেটা কি হতো?[/int-qs]
[int-ans]যে একবার ব্রাশ ধরেছে, তার আর কোনো উপায় নেই। তবে আমি বলব, সব পেশাই ভালো। যদি সেটাকে ভালোবাসা যায়।[/int-ans]
[int-qs]কোনো গোপন কথা থাকলে বলুন, কাউকে বলব না, শুধু ছাপিয়ে দেব।[/int-qs]

[int-ans]আমাদের সবারই হাইডিং একটি কর্ণার থাকে। সেটা মানুষ সঙ্গে করে নিয়ে আসে এবং সঙ্গে করেই নিয়ে চলে যায়। কারো কাছে ফাঁস করে না। এটা অনেকটা পাসওয়ার্ডের মতো।[/int-ans]

[int-qs]মানুষ যাতে ভালবাসে, সেজন্য কিছু করেন?[/int-qs]

[int-ans]অবশ্যই। আমার বাসায় কেউ মানুষ আসলে তাকে চা না খাইয়ে ছাড়ি না। সে ডিপ্লোম্যাটই হোক বা মিস্ত্রীই হোক। যে ভালো মানুষ, ওয়েল বিহেইভড সেই আমার ফ্রেন্ড।  [/int-ans]

[int-quote]ভালোবাসা তো যে কোনো দিকেই যেতে পারে। মানুষের সার্ভাইভালের জন্য এটা একটা বেসিক ফাউন্ডেশন। মরক্কোর মরুভূমিতে এক লোককে পাথর আঁকড়ে বসে থাকতে দেখেছি। সে সারাটা জীবনই এই পাথর আঁকড়ে বসে আছে। বিকজ হি লাভড দিস। তারে দুনিয়া অফার করলেও সে আসবে না। ভালোবাসার কোনো সংজ্ঞা নেই। আসলে যে কোনো সময় যে কোনকিছুর প্রতিই ভালোবাসা হতে পারে। এটা আমাদের কন্টিনিউ কাজ করার এক ধরনের প্রেরণা।[/int-quote]

Previous articleবিয়ে ও মনোরোগ
Next articleকোনো রোগের নাম শুনলে আমার প্রচন্ড ভয় লাগে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here