সবশেষ ২০১৮ সালে বিবিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায় বাংলাদেশে ইয়াবাসেবীর সংখ্যা ৭০ লাখের উপরে।
একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, মাদকাসক্তদের ৫৮ শতাংশ ইয়াবাসেবী। ২৮ শতাংশ আসক্ত ফেনসিডিল এবং হেরোইনে।
ইয়াবাকে বলা হয় ‘আপার ড্রাগ’ কারণ এটি গ্রহণ করলে শুরুতে সে শারীরিক ও মানসিকভাবে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
হেরোইন ও ফেনসিডিলকে বলা হয় ‘ডাউনার ড্রাগ’ কারণ এটি খেলে মানুষ ঝিম মেরে থাকে।
মুক্তি নামে একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান কনসালটেন্ট ড. আলী আসকার কোরেশী বিবিসিকে বলেন, ইয়াবা গ্রহণ করলে সেটি শুরুতেই মানুষকে চাঙ্গা করে তোলে। ইয়াবায় শরীর চাঙা হয়, রাতের পর রাত জেগে থাকা যায়, যৌন উদ্দীপনা বেড়ে যায়, হেরোইন ও ফেনসিডিল খেলে শরীর ঝিম মেরে থাকে তখন মাদকাসক্ত বিচরণ করে কল্পনার রাজ্যে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, “মাদক গ্রহণ করলে ব্রেনের ভেতরে ডোপামিন নিঃসরণ ঘটে। সেটা শরীরের ভেতরে একটা উত্তেজনা তৈরি করে। সব মাদকের বেলাতেই মোটা-দাগে প্রভাবটা এরকম। যখন মাদক নেয়া হয় তখন শরীরে একটু ফুরফুরা ভাব কাজ করে। কিন্তু মাদক গ্রহণ বন্ধ হয়ে গেলে শরীরে ব্যথা করে। মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। হাড়ের ভেতরে শিরশির করতে থাকে। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তারা আবারও মাদক নিতে বাধ্য হয়”।
তবে সাময়িকভাবে চাঙা হলেও এক গবেষণায় দেখা গেছে ইয়াবার কারণে যৌন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, ফুসফুসে পানি জমে, কিডনি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়, লিভার সিরোসিস থেকে ক্যান্সারও হতে পারে, মেজাজ চড়ে যায়, রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, নিষ্ঠুর হয়ে যায়, রক্তচাপ বেড়ে যায়, সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস হয়ে যায় এবং মানসিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়।
সূত্র: বিবিসি বাংলা