করোনা ও এর প্রভাব

0
47
করোনা ও এর প্রভাব
করোনা ও এর প্রভাব

বর্তমান অবস্থায় করোনা নিয়ে সবাই কম বেশি ভয় ও আতংকে ভুগছে।কিছু মানুষ অবশ্য এটাকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছেনা। এখনকার সময়ে লকডাউনের জন্য মানুষ ঘরে বন্দী জীবন যাপন করছে। ফলে মানুষের ভিতর অবসাদ,অস্থিরতা,খিটখিটে মেজাজ,ঘুমের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রতিদিন নয়টা পাঁচটা অফিস করা মানুষ ছুটির আশায় থাকে। কিন্তু এমন ছুটি মানুষকে অস্থির করে তুলেছে। পরিবারের সদস্যরা একসাথে থাকার ফলে আনন্দের সাথে সাথে পারিবারিক অশান্তি ও বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে ছেলেরা ঘরের কাজে সাহায্য করছে।এক্ষেত্রে টুকটাক ভুল তো হচ্ছেই। অনেকে এটা মেনে নিচ্ছেন অনেকে আবার ঝগড়া বাধিয়ে দিচ্ছেন। এসব পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য কিছু পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে:
১. আগামীকাল কিকি কাজ করবেন তার একটি তালিকা আজকেই করে রাখুন।
২. অনেকেই বাসায় কাজের মানুষদের উপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে তা না থাকায় রান্নার আয়োজন সংক্ষিপ্ত করুন। চার আইটেমের জায়গায় তিন আইটেম রান্না করুন। দুই বেলা রান্না না করে একবেলা রান্না করুন যাতে দুইবেলা হয়ে যায়।
৩. কাজ ভাগ করে করুন। একদিনে রান্না,কাপড় ধোয়া,ঘর ও বাথরুম পরিষ্কার সব না করে একদিন পর পর করুন।
৪. সকালের নাস্তা হিসেবে হাতের বানানো রুটির বদলে ওটস,পাউরুটি, খিচুড়ি এইসব খেতে পারেন। এতে বৈচিত্রতা আসবে।
৫. যাদের অতিরিক্ত খুতখুতে স্বভাব তারা এক্ষেত্রে কিছুটা মধ্যস্ততা করতে পারেন। কারণ অন্যের সব কাজ আপনার মন মত নাও হতে পারে। এতে অধৈর্য না হয়ে ধৈর্য ধরে শিখানোর চেষ্টা করুন। যতটুকু পারা যায় ততটুকুই মেনে নেয়ার চেষ্টা করুন ও উৎসাহিত করুন।এতে আপনি ভাল থাকবেন ও অন্যদের কাজের উৎসাহ বাড়বে।
৬. নিজেদের বিনোদনের জন্য খানিকটা সময় রাখুন। সব কাজ করতে গিয়ে যেন নিজের জন্য সময়টুকু হারিয়ে না যায়। খানিকটা সময় ব্যায়াম যেমন ফ্রি হ্যান্ড, বারান্দায় হাটা বা যোগ ব্যায়াম করুন।
৭. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৮. সুষম আহার ও পর্যাপ্ত পানি পান খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি,ডি ও সবুজ শাকসবজি বেশি খাওয়া উচিত। সকালে খালি পেটে লেবু ও পানি গরম খাওয়া উচিত।
৯. সারাক্ষণ মোবাইল, কম্পিউটারে করোনা নিয়ে খবর দেখা বা এসব নিয়ে ঘাটাঘাটি উচিত নয়।ফেসবুকীয় তথ্যকে বিশ্বাস না করে সরকারপ্রদত্ত জায়গা থেকে বা বিশ্বস্ত সূত্র থেকে খবর শুনবেন।সারাক্ষন এটা নিয়ে চিন্তা করলে স্ট্রেস বাড়বে যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিবে।
১০. নিজের শখগুলো এতদিন যা করতে পারেনিনি সময়ের অভাবে তা এখন করতে পারেন। গল্প কবিতা লেখা,ছবি আঁকা,গিটার বাজানো, বিভিন্ন শারীরিক ব্যায়াম শিখতে পারেন ইউটিউব দেখে দেখে। করোনা মোকাবেলায় সাহসের সাথে কাজ করতে হবে।কে কবে কোথায় মারা গেল,কতজন মরল,কিভাবে কবর দিল,আপনার ভাগ্য কি হবে এসব না ভেবে কিভাবে তা থেকে উদ্ধার পাওয়া যায় তা ভাবুন।সরকারের নির্দেশ মেনে চলুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। ফোন,ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবার খোঁজ খবর নিন।নিজে ভাল থাকুন।অন্যকে ভাল রাখতে সহযোগিতা করুন।
লেখক: ডা. ফাতেমা জোহরা,মনোরোগ বিশেষজ্ঞ

Previous articleহোম কোয়ারেন্টাইন:পরিবারের বয়ঃজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন
Next articleমোবাইলে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা: জেনে নিন যোগাযোগ নম্বর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here