আজ বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস ২০২৩। এর ধারাবাহিকতায় সকাল ১ ঘটিকায়, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে র্যালি এবং সকাল ১১:৩০ ঘটিকায় কনফারেন্স হলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৩ সাল থেকে ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যা প্রতিরোধের দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এ দিবস পালিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আত্মহত্যা প্রবণতার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করো’। যদিও বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই।
২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ১০১ এবং ২০২২ সালে দেশে আত্মহত্যাকারী মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৩২। এরই ধারাবাহিকতায় এই বছর দেশের ১০৫টি জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ৩১ দশমিক ৩০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ১৩ শতাংশ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। রংপুরে বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ, ময়মনসিংহে আত্মহত্যা করেছে ১০ শতাংশ এবং রাজশাহীতে আত্মহত্যা করেছে ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং বরিশালে আত্মহত্যা করেছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ ছাড়া সিলেটে আত্মহত্যা করেছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। আত্মহত্যার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে নারী শিক্ষার্থীরা। ৩৬১ জন শিক্ষার্থীর ৫৯ দশমিক ৩০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী গত ৮ মাসে আত্মহত্যা করেছে। অন্যদিকে ৪০ দশমিক ৭০ শতাংশ পুরুষ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। শুধু নারী শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ বিবেচনায় দেখা যায় ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী অভিমান, প্রেমঘটিত কারণে ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ, মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, পারিবারিক বিবাদের কারণে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, ৫ দশমিক ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির কারণে এবং পড়াশোনার চাপ ও ব্যর্থতার কারণে ১২.৬০ শতাংশ আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যাকারীদের বয়সভিত্তিক বিবেচনায় দেখা যায় সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সি শিক্ষার্থীরা। ৬৭ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ছিল এই বয়সি।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, এনডিডিপি-এর চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম রাব্বানী, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএপি-এর প্রেসিডেন্ট ব্রিগে. জে. (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আজিজুল ইসলাম। এবং অন্যান্য সম্মানিত অতিথিবৃন্দের মধ্যে অধ্যাপক ডা. এমএসআই মল্লিক, অধ্যাপক ডা. এম এ মোহিত কামাল, ডা. অভ্র দাস ভৌমিক, জাকিয়া আহমেদ এবং ডা. মো. শাহানুর হোসাইন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এসএসপিবি-এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী এবং স্বগত বক্তব্য রাখেন এসএসপিবি-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানটির আয়োজক সোসাইটি ফর সুইসাইড প্রিভেনশন বাংলাদেশ এবং সহযোগিতা করেছে অ্যাসোসিয়েশান অব সাইকিয়াট্রি। অনুষ্ঠানের সায়েন্টিফিক পার্টনার সান ফার্মা।