স্বামীর কাছ থেকে শারীরিক মানসিক কোনো চাহিদাই পূরণ হয় না

সমস্যা:
কোনো স্ত্রীর যদি এমন হয় যে তার স্বামীর কাছ থেকে শারীরিক মানসিক কোনো চাহিদাই পূরণ হয় না, কিন্তু বিয়ের দুই বছর হয়ে গেছে সবাই বাচ্চা নিতে বলছে। এরকম অবস্থায় কি বাচ্চা নেয়া উচিত??
 
পরামর্শ:
একজন পুরুষ ও একজন নারীর বিয়ের মাধ্যমে একটি পরিবারের জন্ম হয়। অর্থাৎ দুইয়ে মিলে এক। এটি একটি প্রকৃতিগত ঘটনা। প্রকৃতির অনেক সৃষ্টির মাঝে আমরা এটি লক্ষ্য করে থাকি, যেমন: পায়রা, হংসমিথুন। স্বামী- স্ত্রীর মাঝে শারীরিক ও মানসিক দূরত্ব প্রকৃতিগত দিক থেকে গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি স্ত্রী-স্বামী-সন্তানদের জীবনে অনেক দুর্গতির সৃষ্টি করে।

কাজেই প্রশ্নে উল্লেখিত পরিস্হিতির মোকাবেলায় স্ত্রীকে অনেক কিছুই বিবেচনায় আনতে হবে। প্রথমত: বুঝতে হবে তাঁদের এডজাস্টমেন্ট সমস্যা আছে কিনা বা তাঁর নিজের দিক থেকে কোনোরূপ ত্রুটি আছে কিনা যা তাঁর স্বামীকে তাঁর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত: দেখতে হবে স্বামী কোনোভাবে বিপথগামী কিনা বা তাঁর সেক্স বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা। অনেক সময় এগুলো নিজেরা চিহ্নিত করতে পারেন না। তখন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য প্রয়োজন হয়। স্বামীর সেক্স সমস্যা থাকলে সেটিও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা করতে পারবেন।

যদি তাঁদের সমস্যা সমাধানের অযোগ্য হয় তাহলে গভীরভাবে ভাবতে হবে স্ত্রী এই বিয়ে টিকিয়ে রাখতে চান কিনা। এক্ষেত্রে তাঁর আবেগের বশবর্তী হওয়া চলবে না। কারণ বঞ্চিত হওয়া স্বত্ত্বেও তিনি ইতিমধ্যে কোনো না কোনো প্রয়োজনে দুই বৎসর ধরে সংসার করে চলেছেন। এ সময়টা তিনি  চাইলেই  ইরেজার  দিয়ে মুছে ফেলতে পারবেন না।

যদি সার্বিক বিবেচনায় তিনি বিয়ে টিকিয়ে রাখার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেন তাহলে ভবিষ্যত পরিকল্পনা হবে একরকম আর যদি টিকিয়ে রাখার বিপক্ষে সিদ্ধান্ত নেন তাহলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হবে অন্যরকম।
স্ত্রী যদি সংসার করবেন বলে ঠিক করেন সেক্ষেত্রে বাচ্চা নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি স্ত্রীর উচিত শারীরিক ও মানসিক দূরত্ব ঘোচাতে উদ্যোগ নেয়া। পরিস্থিতি বলছে স্বামী উদ্যোগ নেবেন না। একটু চেষ্টা করলেই হাতের  কাছে  আছে  মানসিক  রোগ  বিশেষজ্ঞ  ও  প্রাতিষ্ঠানিক কাউন্সেলিং সেন্টারসমূহ।
স্ত্রী যদি সংসার করবেন না বলে ঠিক করেন সেক্ষেত্রে বাচ্চা নেয়ার ব্যাপারে দুই বৎসর সংসার হয়েছে বলে দ্রুত ইতিবাচক হওয়ার প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রেও স্ত্রীর উচিত বিচ্ছেদের আগে শারীরিক ও মানসিক দূরত্ব ঘোচাতে উদ্যোগ নেয়া। আবারও বলি একটু হাত বাড়ালেই স্ত্রী পাবেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ও কাউন্সেলিং সেন্টারসমূহ।
পরামর্শ দিচ্ছেন,
প্রফেসর ডা. নিলুফার আক্তার জাহান


দৃষ্টি আকর্ষণ- মনেরখবর.কম এর প্রশ্ন-উত্তর বিভাগে, মানসিক স্বাস্থ্য, যৌন স্বাস্থ্য, মাদকাসক্তি সহ মন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আপনার কোনো জানার থাকলে বা প্রশ্ন থাকলে বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দরকার হলে question@www.monerkhabor.com এই ইমেলের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন।

Previous articleবাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস এর বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
Next articleসেপারেশন এনজাইটি ডিজঅর্ডার: শিশু কিশোরদের বিশেষ মানসিক সমস্যা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here