মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ধুমপানে নিষেধাজ্ঞা

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে এমন মানুষের আশেপাশে তার সে নিজে কিংবা অন্য কোন রোগী অথবা তাদের আত্নীয়-স্বজন, হাসপাতালে কর্মরত কোন কর্মচারী অথবা কোন ডাক্তার হাসপাতালের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা শাখার কোন স্থানে ধুমপান করতে পারবে না এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন এনএইচএস এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
দ্যা সাসেক্স পার্টনারশিপ এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট বলেছে, “দ্যা হিলিংলি সেন্টার এন্ড এর অন্যান্য শাখা গুলো তে ধুমপানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার কারণে সেন্টার গুলোতে সবার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশের তৈরী হবে।
হিলিংলি হচ্ছে যেসব বৃদ্ধরা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে তাদের জন্য মধ্যম মানের একটি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। এবং তাদের জন্য যারা অপরাধী বিচার ব্যবস্থা অথবা ফোজদারী বিচার ব্যবস্থার সাথে জড়িত।
এই সংস্থাটি মহিলা ও পুরুষ উভয়ই যারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সাথে জড়িত, যারা খুব গুরুতর ধরণের অপরাধের সাথে জড়িত অথবা যাদের আচরণে বেশ ভাল ধরণের সমস্যা আছে, যাদের বড় ধরণের নিরাপত্তামুলক অবস্থায় রাখতে হয় তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকে। এই সংস্থাটি সাউথভিউ লো সিকিউর শাখাকে ও সহযোগিতা করে থাকে।
এনএইচএস ট্রাস্ট এর ধারণা যারা মানসিক সমস্যায় ভুগছে সাধারণ মানুষের তুলনায় আরো বেশি ধুমপানের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং যদি কেউ ধুমপায়ী না হয় তাহলে তার সাধারণ মানুষের তুলনায় ধুমপান করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আর এটাই হয়ে থাকে তাদের যে কোন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা এবং জীবনের আয়ু কমে যাওয়ার প্রধান কারণ।
সংস্থাটি আরো ধারণা করে যে ধুমপানের কারণে অথবা তামাক থেকে যে ধোয়ার নিঃসরণ হয় তার কারণে বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা কাজ করে না। এবং যারা ধুমপান করে থাকে তাদের দীর্ঘদিন ধরে অষুধ খেতে হয়, তাদের যে কোন ওষুধের কোর্স একজন অধুমপায়ী ব্যক্তির চাইতে লম্বা হয়।
মার্চ মাসের ৮ তারিখ বুধবার থেকে রোগী, ডাক্তার, হাসপাতালের কর্মচারী, রোগীর আত্নীয় স্বজন, দর্শক, সেবক-সেবিকা সবার জন্য হাসপাতালের দরজা, বারান্দা, এমনকি গাড়ি পার্ক করার স্থানে পর্যন্ত ধুমপানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞায় ইলেকট্রনিক সিগারেট এবং সেবন কেবিন অথবা রুমে রোগী নেই সেসব জায়গায় ই-সিগারেট খাওয়া যাবে না। তবে কিছু কিছু কেবিনে রোগীরা নিষ্পত্তিযোগ্য ই-সিগারেট খেতে পারবে।
এই ট্রাস্টটি এছাড়াও আরো বিভিন্ন এলাকায় মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে থাকে যেমন আপার হাউসের এভেনিডা, ইস্টবোর্ন, ওয়েস্টার্ন রোডের হাইমোর, হেইলশাম এবং ডিজিএইচ এ সেবা এবং উডল্যান্ড সেন্টার ফর একিউট কেয়ার এবং হ্যাস্টিংস এর কনকুয়েস্ট হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে থাকে।
ট্রাস্ট টি বলে রোগীদের শারীরিক স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সেবা এবং শারীরিক ও মানসিক সমর্থনের প্রয়োজন রয়েছে।
সাসেক্স পার্টনারশিপের নার্সিং এবং রোগীদের অভিজ্ঞতা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ডায়ান হুল বলেন, “লন্ডনে অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করার অন্যতম কারণ হল ধুমপান এবং প্রত্যেক ৫ টি সিগারেটের মধ্যে ২টি সিগারেট এমন ব্যক্তিরা পান করে থাকেন যাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে”। তিনি আরো বলেন, “বেশির ভাগ মানুষ যাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে তাদের জীবনের আয়ু কমে যাওয়ার পিছনে সিগারেট গুরত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করে। আমাদের রোগীদের শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি তাদের মানসিক সমস্যায় সাহায্য এবং সমর্থন করা আমাদের দায়িত্ব। আর ধুমপানের প্রতি নিষেধাজ্ঞা তাদের সমর্থন করার অনেক বড় একটি অংশ”।
সাসেক্স পার্টনারশিপের সকল কর্মকর্তাদের ধুমপান থেকে কিভাবে বিরত থাকা যায় এবং রোগীদের কিভাবে ধুমপান থেকে সরিয়ে আনা যায় এবং তাকে কিভাবে সমর্থন করা এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এবং দেখা হয় তারা ধুমপান একদম ছেড়ে দিচ্ছে নাকি যতক্ষন তারা রোগীদের আশে পাশে থাকে শুধুমাত্র ততক্ষণ ধুমপান করে না।
রোগীদের জন্য ‘নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি’ এবং নানা ধরণের আচরণগত সমর্থন দেয়া হচ্ছে।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর হেলথ এন্ড কেয়ার এক্সিলেন্স চায় যেকোন হাসপাতাল অবশ্যই মানসিক হাসপাতাল গুলোর যেকোন জায়গায় ধুমপানের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করার সুপারিশ করেছেন।
মার্চ মাসের ৮ তারিখ ধুমপানমুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র- ইস্টবোর্ন হ্যারাল্ড
(http://www.eastbourneherald.co.uk/news/smoking-banned-at-mental-health-unit-1-7851916)

রুবাইয়াত মুরসালিন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম

Previous articleআমাদের সন্তান, আমাদের আচরণ, আমাদের সমস্যা
Next articleবিভিন্ন রূপে বিষণ্নতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here