আজ ১০ সেপ্টেম্বর রবিবার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে মনোরোগবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে গোলটেবিল বৈঠক আয়োজিত হয়। বৈঠকের আগে র্যালি করেন মনোরোগবিদ্যা বিভাগ। এবারের বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘কর্মের মাধ্যমে আশার সঞ্চার’। উক্ত বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ৮ লাখ মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় পারিবারিক, সামাজিক ও অন্যান্য সমস্যার জন্য। মেয়েদের মধ্যে এই প্রবণতা আরও বেশি। হাসপাতালের রেসিডেন্ট ও ডাক্তারদের মধ্যেও আত্মহত্যার হার বেড়েছে। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ হিসেবে এই বিষয়ে আমরা চিন্তিত’’। তিনি আরও বলেন, একাকিত্ব ও ইগো আত্মহত্যার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আপনার সন্তান যেন ফেসবুকে বেশি আসক্ত হয়ে না পড়ে সে বিষয়ে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, ভার্চুয়াল মাধ্যমের অবাধ ব্যবহার তাদের মনোজগতে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। কোন কোন রোগীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি সে বিষয়ে খেয়াল রাখা এবং আত্মহত্যার পথ থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তির পরিচর্যাও গুরুত্বপূর্ণ। আমি চাই এই বিষয়ে গবেষণা বাড়ুক’’।
সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থার এক গবেষণার তথ্য থেকে দেখা গেছে, বাংলাদেশে চলতি বছরের প্রথম আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) ৩৬১ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২১৪ জন, যাদের ২৬ শতাংশই অভিমান থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এদের ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর বয়স ১৯ বছরের নিচে। আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে স্কুলগামী শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি; ১৬৯ জন (প্রায় ৪৭ শতাংশ)। এছাড়া কলেজগামী ২৬ শতাংশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ১৮ শতাংশ এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রয়েছে ৮ শতাংশ। বিভাগ অনুযায়ী, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে ৩১ শতাংশ। সবচেয়ে কম সিলেটে ২ দশমিক ৫ শতাংশ।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সম্মানিত বিভাগীয় প্রধান নাহিদ মেহজাবিন মোরশেদ, অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব, সহকারী অধ্যাপক এ.এস.এম. আতিকুর রহমান, প্যানেলিস্ট প্রধানগণসহ অন্যান্য অধ্যাপক এবং রেসিডেন্টরা। বৈঠকে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সহকারী অধ্যাপক এ.এস.এম. আতিকুর রহমান। হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগগুলোতে অনেক সময় মানসিক রোগীরা সঠিক তথ্য না পেয়ে সেবা নিতে যান। সেসব বিভাগগুলোর সাথে মনোরোগবিদ্যা বিভাগের আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি এবং রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য মনোরোগবিদ্যা বিভাগে পাঠানোর বিষয়ে নানা পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন অন্য বিভাগগুলোর অধ্যাপকগণ। অনুষ্ঠানটির সায়েন্টিফিক পার্টনার ছিলেন রেনেটা লিমিটেড।