মহিলাদের মধ্যে মানসিক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি

গতকাল ১৬ নভেম্বর (বুধবার) জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট-এর কনফারেন্স হলে “Dissemination of Survey Report on Community Survey of Symptoms Presentation of Common Psychiatry Disorder” শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভাটির প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট-এর উদ্যোগে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এবছরের ফেব্রুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত পরিচালিত এক পরিসংখ্যান রিপোর্টের ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা করা। সোনারগাঁও ও তেজগাঁও থানায় পরিচালিত এই গবেষণা রিপোর্টে দেখা যায় প্রাপ্ত বয়ষ্কদের মধ্যে মানসিক রোগের প্রাদুর্ভাব বিগত ১০ বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে বর্তমানে ৩২.৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিষণ্নতা ১২.৭ শতাংশ, উদ্বেগজনিত মানসিক রোগ ৬.৭ শতাংশ, মনোদৈহিক মানসিক সমস্যা ৪.৫ শতাংশ।
উক্ত গবেষণায় আরো দেখা যায় মানসিক রোগের প্রাদুর্ভাগ শহরে ও গ্রামে প্রায় একই রকম এবং মহিলাদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে পুরুষদের তুলনায় মানসিক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এছাড়াও মানসিক রোগে আক্রান্তদের মধ্যে শারীরিক লক্ষণ যেমন- মাথা ব্যথা, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা, জ্বালাপোড়া, ঘুমের সমস্যা, অস্থিরতা, দুর্বলতা, খাবারের অরুচি নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে আসেন যা বেশিরভাগ সময়ই গুরুত্ত্ব পায় না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব জিনিসের যেমন ভাল খারাপ সব দিক থাকে, বর্তমানে উন্নতির সাথে তাল মিলিয়ে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি মানসিক স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে। এখন প্রায় ৩২ ভাগ মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে। আমাদের এসব প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। এজন্য আমি যথাযথ চেষ্টা করব। মেন্টাল হেলথ ইন্সটিটিউট এর বিভিন্ন অটিজম ইউনিট পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “এই ক্ষেত্রে আমরা ব্যবস্থা নেব। আসন সংকট দূর করতে ব্যবস্থা নেব। পেয়িং সিট এর তুলনায় ফ্রি সিট এখানে কম। ফ্রি সিট বাড়ানোর ব্যাপারটা দেখবো।”
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল হামিদ বলেন,”মানসিক সমস্যার এই হার পুরুষদের তুলনায় নারীদের মাঝে বেশি। এসব মানসিক সমস্যার কারণে তাদের মাঝে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।এ সম্পর্কে আরো ভালো গবেষণা প্রয়োজন। কেননা তাতে করে বাংলাদেশে বিদ্যমান মানসিক সমস্যার চিত্র নির্ধারন করে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে।”
অনুষ্ঠানটিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি-এর লাইন ডিরেক্টর ডা. ফারুক আহমেদ ভূঁইয়া সহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বাংলাদেশের প্রখ্যাত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন মেডিকেল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও পরিচালক, শিক্ষক ও চিকিৎসকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটিতে গবেষণা বিষয়ক সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ এবং একই ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. জিল্লুর রহমান।
অনুষ্ঠানের পূর্বে সরকারের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটকে একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করেন।
উল্লেখ্য জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অ্যাম্বুলেন্স সংকট নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ইং এ মনের খবর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি পড়তে নিন্মোক্ত লিংকে ক্লিক করুন।
অ্যাম্বুলেন্স নেই জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের
প্রতিবেদক, মনেরখবর.কম


লক্ষ্য করুন- মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক খবর বা প্রেস রিলিজও আমাদের পাঠাতে পারেন। বৈজ্ঞানিক সেমিনার, বিশেষ ওয়ার্কশপ, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনো খবর পাঠাতে news@www.monerkhabor.com এই ইমেইলটি ব্যবহার করতে পারেন আপনারা।

Previous articleযৌন ক্ষমতার সা‌থে বী‌র্যের ঘন‌ত্বের কোনো সরাস‌রি সম্পর্ক নেই
Next articleআর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের আয়োজনে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here