পুরুষের তুলনায় নারীরা অধিক মাত্রায় ডিপ্রেশনের শিকার হওয়ার কারণ কি?

পুরুষের তুলনায় নারীরা অধিক মাত্রায় ডিপ্রেশনের শিকার হওয়ার কারণ কি?
পুরুষের তুলনায় নারীরা অধিক মাত্রায় ডিপ্রেশনের শিকার হওয়ার কারণ কি?
টেস্টোস্টেরন কি পুরুষদের ডিপ্রেশন থেকে বাঁচাতে পারে? এটা কি চিকিৎসা ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে? ডিপ্রেশন পুরুষের তুলনায় নারীদের মাঝে প্রায় দ্বিগুণ। কেন এমনটা হয়?

হতে পারে পুরুষের তুলনায় নারীরা অধিক মাত্রায় মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্বশীল। তারা যে কোন সমস্যায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। এ কারণে পরিসংখ্যানে নারীদের হার পুরুষের তুলনায় বেশি যা বিভিন্ন গবেষণাতেও উঠে এসেছে।
ডিপ্রেশনের প্রথম ধাপগুলো দেখা দেয় বয়ঃসন্ধিরর সময়ে বা বয়ঃপ্রাপ্তির প্রথম পর্যায়ে। অধিকাংশ সময়ে সমস্যাগুলো বেশী হয় যখন কেউ কোন রকম ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যেমন, হতে পারে কোন বন্ধু বিয়োগ, অর্থহানি এমনকি গৃহপালিত কোন পশুপাখিরর মৃত্যু। নারীরা অধিকাংশ সময়ে এসব সমস্যার সম্মুখীন বেশী হয়। এর কারণ হতে পারে তাদের অনুভূতির গভীরতা পুরুষের তুলনায় অধিক। এর উদাহরণস্বরূপসন্তান প্রতিপালনের কথা বলা যেতে পারে। এ প্রক্রিয়াটি একজন মায়ের উপর যতটা প্রভাব ফেলে একজন বাবার উপর ততটা প্রভাব ফেলে না। প্রভাবের এই আধিক্যের কারনে অনেক সময় মায়েদের উপর এর বিরূপ প্রভাব ও পড়ে। যা পরবর্তীতে ডিপ্রেশনে রূপ নেয়। আবার অন্যভাবে বলা যেতে পারে, নারীর তুলনায় পুরুষের স্থিতিস্থাপকতা বেশি হওয়ায় তারা কম প্রভাবিত হয়।
এ পর্যায়ে যে হরমোনটি নিয়ে আমরা আলোচনা করব সেটি স্ট্রেস হরমোন, করটিসল। যখন কোন ব্যক্তি কোনরূপ ক্ষতি বা প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হয়, তখন এড্রিনাল গ্ল্যান্ড থেকে করটিসল হরমোন নিঃসরিত হয়। যেসব রোগীদের চিকিৎসায় অধিক মাত্রায় করটিসল সমৃদ্ধ ওষুধ ব্যাবহার করা হয়, তাদের মাঝে ডিপ্রেশনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং তারা অনেকেই গ্রন্থিবাত ও ইমিউন ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হয়। তবে ধীরেধীরে ওষুধের মাত্রা কমিয়ে এসব সমস্যা এড়ানো যেতে পারে।
নারীদের শরীরে পুরুষের তুলনায় করটিসলের মাত্রা বেশি থাকায় তারা অধিকমাত্রায় ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়। তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় টেস্টোস্টেরন ডিপ্রেশন থেকে কিছুটা সুরক্ষা প্রদান করে। তবে বয়সের সাথে সাথে পুরুষের হরমোনের মাত্রা কমতে থাকে এবং  তাদের মাঝে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা বাড়ে। শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়িয়ে এই সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়।
কেন (একটা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত) টেস্টোস্টেরন পুরুষদের ডিপ্রেশন থেকে রক্ষা করে? এর কোন যথাযথ উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা এখনো জানিনা ডিপ্রেশন মস্তিষ্কের ঠিক কোন অবস্থার কারনে সৃষ্টি হয়। টেস্টোস্টেরন কিভাবে ডিপ্রেশনের প্রতিষেধক রূপে বা এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে সেটিও এখনো অস্পষ্ট।
নারীদের শরীরে স্বল্প মাত্রায় টেস্টোস্টেরন থাকে যা পুরুষের দশ ভাগের এক ভাগ। এই হরমোন শুধু নারীদের সেক্সুয়ালিটি নির্ধারণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কিন্তু এটি ডিপ্রেশনে কোন ভূমিকা রাখে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।
যদি করটিসল এবং টেস্টোস্টেরনের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে বোঝা যায় কেন নারী এবং পুরুষের মাঝে ডিপ্রেশনের হার ভিন্ন ভিন্ন। অবশ্য ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রে জীবন ব্যবস্থারর প্রভাব কোনভাবেই অগ্রাহ্য করা যায়না। নারীরা পুরুষের তুলনায় অধিক মাত্রায় ডিপ্রেশনে ভোগে- এখন আমাদের শুধু জানতে হবে কেন এবং কিভাবে।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleবদভ্যাস ত্যাগের মনস্তাত্ত্বিক কৌশল
Next articleজেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্অর্ডার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here