জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্অর্ডার

জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্অর্ডার
জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্অর্ডার

আমরা সবাই বিশেষ পরিস্থিতি – যেমন পরীক্ষার আগে, চাকরির ইন্টার্ভিউয়ের সময়, অফিসে কাজের চাপে বা ব্যক্তিগত অর্থ – নিয়ে মাঝেমধ্যে উদ্বিগ্নতা অনুভব করি। এইধরনের উদ্বিগ্নতা অনুভব করা স্বাভাবিক আর কিছু ক্ষেত্রে নিম্নমানের উদ্বেগ আমাদের ভাল ফল পেতে সাহায্য করে। জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্‌অর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি বিনা কারণে দীর্ঘ সময় ধরে প্রবল উৎকণ্ঠা বা উদ্বিগ্নতা অনুভব করেন। বিনা কারণে অনুভব করা উদ্বেগ অহেতুক জানা সত্ত্বেও রোগী আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। যেমন প্রাত্যহিক কাজ, যা তিনি প্রতিনিয়ত করেন, অথচ সেই কাজগুলো নিয়ে উৎকণ্ঠা অনুভব করেন সবসময়।

জি এ ডি-র উপসর্গ অন্যান্য এংজাইটি ডিস্‌অর্ডারের মতই। সাধারণ লক্ষণগুলো হল –

  • চারিত্রিক লক্ষণঃ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, সহজেই চমকে যাওয়া আর কোন কাজে মনোনিবেশ না করতে পারা
  • শারীরিক লক্ষণঃ সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়া, মাথায় ও শরীরে ব্যথা অনুভব করা, গা গোলানো ভাব, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, নিঃশ্বাসের কষ্ট, ঝিমুনি ভাব।

আপনার পরিচিত কোনও ব্যক্তির মধ্যে যদি এই উপসর্গগুলো দেখতে পান, তাঁর সাথে কথা বলুন এবং অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলুন।

অন্যান্য মানসিক সমস্যার মতই জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্‌অর্ডার হওয়ার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। গবেষণা থেকে অনুমান করা হচ্ছে যে মস্তিষ্কের কিছু অংশ আর স্নায়বিক সঞ্চালনার বিকার ভয় আর উদ্বিগ্নতা সৃষ্টি করে। যদি বাবা বা মা কোন মানসিক রোগে ভোগেন, সন্তানের মধ্যে উদ্বেগ-জনিত সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দৈনন্দিন মানসিক চাপ, কর্মক্ষেত্রে চাপ, আর্থিক সমস্যার মতো মানসিক ও সামাজিক কারণে জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্‌অর্ডার হতে পারে। যদিও জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্‌অর্ডার হওয়ার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।

জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিসঅর্ডার রোগীর মধ্যে আকুলতা সৃষ্টি করতে পারে। এর চিকিৎসা ওষুধ বা সাইকোথেরাপি বা দুটোর সম্মিলিত পদ্ধতিতে করা হয়। কগ্নিটিভ বিহেভেরিয়াল থেরাপি (সি বি টি) জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্‌অর্ডারের চিকিৎসায় বিশেষভাবে উপযোগী। ওষুধের সেবন রোগীর উদ্বেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

আপনি যদি জেনেরালাইস্‌ড এংজাইটি ডিস্‌অর্ডারে আক্রান্ত কোন রোগীকে চেনেন, আপনার সহযোগিতা তাঁকে সুস্থ হতে বিশেষভাবে সাহায্য করতে পারে। প্রথমেই এই রোগের ব্যাপারে বিষদে জানুন যাতে আপনি রোগীর সমস্যা ভাল করে বুঝতে পারেন। রোগীকে চিকিৎসা আর থেরাপির কার্যকারিতা সম্পর্কে জানান এবং বিশেষজ্ঞয়ের পরামর্শ নিতে উৎসাহিত করুন। দরকার বুঝলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ওনার সঙ্গে যান।

যদিও অনেক প্রকারের উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণকারী প্রক্রিয়া আছে যা রোগী নিজে ঘরে অনুসরণ করে উপকার পেতে পারেন, প্রথমেই সেইসব না করে, আগে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞয়ের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ যাতে সমস্যার পূর্ণ বিশ্লেষণ করে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়। ঘরোয়া প্রক্রিয়া আপনি অনুসরণ করতেই পারেন কিন্তু সেগুলো চিকিৎসার পাশাপাশি করা উচিৎ, চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে নয়। ধ্যান এবং মনকে শান্ত করার বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম উদ্বিগ্নতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপযোগী। এইধরনের যোগাভ্যাস মানসিক নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সাহায্য করে। জীবন-শৈলীতে কিছু পরিবর্তন যেমন সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম করা, পরিযাপ্ত পরিমাণে ঘুম জি এ ডি-র প্রভাবকে দমন করতে বিশেষভাবে উপযোগী।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleপুরুষের তুলনায় নারীরা অধিক মাত্রায় ডিপ্রেশনের শিকার হওয়ার কারণ কি?
Next articleমহামারী মোকাবিলায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ডি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here