ইটিং ডিজঅর্ডার নিয়ে কীভাবে কথা বলবেন?

ইটিং ডিজঅর্ডার
ইটিং ডিজঅর্ডার নিয়ে অনেকেরই নানান সমস্যা দেখা যায়। কারো হয়তো প্রচুর খাবার পছন্দ, কারো আবার স্বল্প খাবারেই পরিতৃপ্তি। কারো থাকে ওজন কম রাখার চিন্তা, কারো আবার এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর বালাই নেই।

যখন তখন ইচ্ছেমতো খেতে পছন্দ করেন। আমাদের সমাজে কিছু খাদ্যাভ্যাসকে ব্যাধি হিসেবে পরিচিত করাতে যে ভাষাগুলো ব্যবহার করা হয়, সেগুলো আসলেই অদ্ভুত। সাধারণ ব্যাধি হিসেবে দুটি ধারনা প্রচলিত আছে, বুলিমিয়া– যা কিনা অতিরিক্ত খাদ্যপ্রবনতা, এনোরেক্সিয়া বা ক্ষুধাহীনতা।

এখন, মানুষ হিসেবে ও একজন মানুষের সহযোগী হিসেবে আমরাই পারি ভুল ধারণাগুলো পরিবর্তন করতে। মূলধারার সংস্কৃতিতে দেখা যায়, যারা খাদ্যব্যাধি নিয়ে কথা বলে বা অন্যদের উপর চাপিয়ে দেয়, তারা মূলত সংখ্যায় কম। তবু এগুলোই ইটিং ডিজঅর্ডার কাটিয়ে উঠার ক্ষেত্রে বাঁধা তৈরি করে। তাই ইটিং ডিজঅর্ডার নিয়ে কথা না বলে আমাদের উচিত এমন প্রসঙ্গে কথা বলা, যা তাকে শক্তি ও সাহস যোগাবে এবং আরোগ্যলাভে কার্যকরী হবে।

‘ইটিং ডিজঅর্ডার’ আখ্যায়িত না করে কথা বলা
মনে করুন, আপনার এলার্জির সমস্যা। ডাঃ অবশ্যই এটা বলবেন না, আপনিই জ্বালা-পোড়া বা রক্তজমাট!বরং বলবেন, ‘আপনার শরীরে প্রদাহ ও রক্তজমাট বাধার মতো সমস্যা রয়েছে।কিন্তু এই খাদ্যসংক্রান্ত সমস্যার ক্ষেত্রে যেন শব্দবাহুল্যই দেখা যায়। এমনভাবে ভাষা ব্যবহৃত হয়, যার মাধ্যমে অসুস্থতার দায় রোগীর কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়। যেমন বলা হয়,  “ আপনি খাদক অথবা খাবারে অনাগ্রহী।ভাষার এ ধরনের ব্যবহার আমাদের সমাজের ডিকশনারিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে! একটু ভেবে দেখুন,  আমরা কি একে অপরের সাথে সৎ হতে পারি না?

ভাষার এ ধরনের ব্যবহার একইসাথে অমানবিক ও কলঙ্কময়। যখন আমরা সামান্য একটু সমস্যায় ভুগি, ভেবে নিই, আমি হয়তো বুলিমিয়া বা এনরেক্সিয়াতে আক্রান্ত। তখন আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পরি, যা শারীরিকভাবেও আমাদের বিধ্বস্ত করে দেয়। ফলে, আমরা এই ব্যাধি কাটিয়ে উঠতেও ভয় পাই। সমাজে রোগ সংক্রান্ত ভাষা ও ধারণা একধরনের লোকপুরাণের কাহিণীর মতো ছড়িয়ে আছে। সমাজের এই প্রবণতাকে আমরা সহজেই পরিবর্তন করতে পারি।

একটি নতুন ধারণার প্রচলন
আমরা যে কোনো একটা করতে পারি, আমরা সমাজের সাথে একমত হয়ে খাদ্যাভ্যাসকে মানসিক অসুস্থতা বলতে পারি,  (যেমন, ‘ইটিং ডিজঅর্ডারই ব্যক্তির পরিচায়ক), অথবা এর বিপরীত একটি গঠনমুলক মতামত দিতে পারি। ভ্রান্তিগুলো নির্মূল করে মতবাদগুলো সংশোধন করতে পারি। এটা আমাদের ভাষার ব্যবহার থেকেই শুরু হতে পারে। নিজেকে সরাসরি বুলিমিক বা এনোরেক্সিক না বলে বরং আরেকটু নমনীয় ভাবে বলুন। আমার অতিরিক্ত খাদ্যপ্রবনতা আছে, কিন্তু এটাই আমার পুরো পরিচয় নয়। এটা আমার ব্যক্তিত্বের অংশবিশেষ। আমি আরোগ্যলাভ করতে পারবো বা নিজেকে পুনরায় সুস্থভাবে গড়তে পারবো। আমার একটা ব্যাধি আছে, কিন্তু আমি নিজেই ব্যাধি না। সমাজের ধারণা প্রাচীন হতে পারে, কিন্তু এতে আমি কীভাবে প্রতিক্রিয়া করবো, সেটা সম্পূর্ণ আমার উপর নির্ভর করে। আমরা এখনো একটি সত্য ও বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলতে সক্ষম।

তথ্যসূত্র: হেলদি প্লেইস ডটকমে প্রকাশিত MARY-ELIZABETH SCHURRER এর আর্টিকেল থেকে অনুবাদ করেছেন সাদিয়া শামস ।

লিংক: https://www.healthyplace.com/blogs/survivinged/2018/02/how-society-talks-about-eating-disorders-is-weird-lets-change-the-dialogue/

Previous articleসোশাল ফোবিয়া নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
Next articleজাতীয় মনস্তত্ত্ব তৈরি না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনৈতিকতা: সিইই-এর গোলটেবিলে বক্তারা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here