আমি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হতাশাচ্ছন্ন হয়ে আছি

0
67

আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা, দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সে সবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন প্রতিদিনের চিঠি বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আমাদের আজকের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন- সত্যজিৎ চন্দ্র দাস। বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব।

সমস্যা: আমি সত্যজিৎ চন্দ্র দাস, বয়স ২৫ বছর। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনশাস্ত্রে মাস্টার্সে আছি। করোনার এই সময়ে আমি পড়ালেখা নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন আছি। যদিও আমার ফলাফল খুব একটা খারাপও নয়। তবে আমি আসলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হতাশাচ্ছন্ন হয়ে আছি। গত দুইদিন পূর্বে করোনার এই সময়ে ১০০ এর অধিক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা আমাকে আরও বেশি পরিমাণে ভাবাচ্ছে। আমাদের পড়ালেখা যদি আমাদের জীবনমান এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কাজ না করে, তাহলে এত কষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কী প্রয়োজন! আসলে মানসিকভাবে আমি নিজেও ভেঙ্গে পড়েছি। এই মুহূর্তে আমার কী করণীয়?

পরামর্শ: প্রশ্নটির জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু আপনার প্রশ্নটি আমার কাছে খুব বেশি পরিষ্কার নয়। আপনার কী করোনার কারণে নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আত্মহত্যা করছে, সেটা নিয়ে মন খারাপ। আসলে দুইটা তো দুই বিষয়।

করোনার চলমান পরিস্থিতির জন্য আপনি ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। আপনার জীবনের লক্ষ্য যেভাবে যাওয়া উচিত, যেদিকে যাওয়া উচিত, আপনার পারিবারিক, সামাজিক সম্পর্ক যেভাবে যাওয়া উচিত সেগুলো ঠিকভাবে যাচ্ছে না। সেটা আপনার মনের মধ্যে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করলো, সেটা একটা বিষয়।

আরেকটা হলো যে, ছাত্ররা নিয়মিত আত্মহত্যা করছে এটাও একটা চিন্তার বিষয়। আর এটা আপনি করোনার সাথে মেলানোর চেষ্টা করছেন, সেটাও একটা বিষয়। পড়াশুনা করে ভালো কিছু হওয়ার কথা সেটা হচ্ছে না, সেটা নিয়েও কী ভাবছেন কি না।

যেটাই হোক, পড়াশুনার সাথে মানসিক স্বাস্থ্যের সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও। মানসিক স্বাস্থ্য বর্তমানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আসলে ছাত্ররা কেন এভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে, এটা কিন্তু আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। এটা যে কারণে ঘটুক বা আপনার জীবনে যাই দুঃখের ঘটনা আসুক না কেন, আপনাকে ভালো থাকার উপায় নিজেকে খুজে নিতে হবে। হতাশা হোক, মানসিক অস্বস্তি হোক, পারিপার্শ্বিক অসুবিধা হোক এসবের মধ্যেও ভালো থাকার প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে।

তবে এসব যদি আপনার অসুস্থতার পর্যায়ে যায়, তাহলে কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একজন মানুষ যখন নিয়মিত সমস্যার মধ্যে থাকে এবং সেটা বাড়তে থাকে, এবং এর নিরাময় যদি তার কাছে না থাকে তখন আপনি হোন বা যেই হোক না কেন, খুঁজতে হবে কার কাছে আপনি সমাধান পাবেন।

আমাদেরও এক্ষেত্রে কিছু করণীয় আছে। যখন আমাদের পাশে কেউ এমন বিষণ্ণ, আত্মহত্যাপ্রবণে ভুগছে তখন তাদের খেয়াল নেওয়াটা আমাদের দায়িত্বের পড়ে। নিজের ক্ষেত্রে যেমন জরুরি, অন্যের ক্ষেত্রেও তেমন জানা জরুরি। জিনিসগুলো যদি জানা যায়, তাহলে এর সমাধানের মাধ্যমে নিজে যেমন ভালো থাকা যায়, একইভাবে পাশের মানুষকেও ভালো রাখা সম্ভব। এটা সামাজিক না হোক স্বাভাবিক দায়িত্ব হিসেবে আমাদের পালন করলে ভালো। তোমার ক্ষেত্রেও এর সমাধান খুঁজে পাওয়া জরুরি, তাহলে তুমিও আরও আত্মবিশ্বাসী হবে। অন্যকেও সাহায্য করতে পারবে। আর নিয়মিত মনের খবর পড়ো, জানো তাহলে নিজেকে জানার, এবং ভালো থাকার উপায়গুলো জানতে পারবে।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

 

Previous article‘শিশু বিকাশ কেন্দ্রের সেবা ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক’
Next articleদুর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক বৈকল্য

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here