আপনি কি অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা বা বিশ্বাসঘাতকতার মনোভাব পোষণ করেন, যখন সে আপনার মনমতো কাজ না করে? আপনি যদি এমনটা করেন, তাহলে আপনি অন্যকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান। আর আপনি এ কারণে বিভিন্ন সম্পর্ক যেমন: স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, নিয়ে দুশ্চিন্তা অনুভব করেন । কিন্তু উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছুই নেই , আপনি কিছু উপায়ে এই মানসিকতার সাথে মানিয়েও নিতে পারেন।
কেন আমরা অন্যকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই?
অন্যকে নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছাটা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা নিজের অসুবিধার কারণ হিসাবে অন্যকে দায়ী করার জন্য হয়। এটা মানুষের একটা দুর্বলতার অনুভুতি, যা তার শক্তিহীনতা বা অক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত। এই ধরনের মানুষ আপত্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, কারণ তাদের আচরণ সংঘর্ষের সৃষ্টি করে, না হয় বিশ্বাস কমিয়ে দেয়। সংসার জীবন বা বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে সুখী হতে পারে না ।
কীভাবে আপনি অন্যকে নিয়ন্ত্রনের ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলতে পারেন?
সন্তান লালনপালনের কিছু পদ্ধতি বাচ্চাকে এ ধরনের ব্যক্তিত্ব নিয়ে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।
১। পিতামাতার ভালোবাসা যদি শর্তসাপেক্ষে হয় এবং সন্তানের কোনোকিছু অর্জনের উপর নির্ভর করে বা স্নেহটা যদি বাবা-মার ইচ্ছা পূরণের মাধ্যমে পেতে হয় তাহলে এ ধরনের মানসিকতা তৈরি হয়।
২। সম্পর্কের মূল্যায়ন যদি কাজের বিনিময়ে হয় এবং বাচ্চা নিজে কি তার চেয়ে যদি তার করা কাজটাই বেশি গুরুত্ব পায়।
কীভাবে চালিত হয়?
এ ধরনের মানসিকতার লোকদের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাবের পরিবর্তে অন্যের কাছে থেকে সম্মতির প্রত্যাশা সবসময় দেখা যায়। আর যখনই তারা অবহেলার স্বীকার হয়, তখন খুব আক্রমণাত্মক মনোভাব পোষণ করে । যদি তারা বুঝতে পারে যে, তার নির্ভর করার মানুষটি সুবিধার নয়, তখন সে খুব লজ্জা অনুভব করে বা তার কাছে থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেয় অথবা অই ব্যক্তিটিকে ভয়প্রদর্শন বা হুমকি দেয় ।
এই ধরনের মানুষের ভাষা ব্যবহার পদ্ধতিটা একটু অন্যরকম হয়, যেমন ;তোমাকে এই কাজটি এখনই করতে হবে বা আমি তোমার কাছে কোনো পরামর্শ চাইনি, আমাকে বিরক্ত করতে এসো না । তাদের কথায় কোনো অনুরোধসূচক শব্দ থাকে না ।
৩ টি সমাধানের পথ
১। আপনার প্রকাশভঙ্গীকে কোমল ও মৃদু করতে পারেন।সেই পরিস্থিতিগুলো বুঝতে চেষ্টা করুন যে কখন আপনি অন্যের প্রতি আক্রমণাত্মক হয়ে যান এবং অন্যকে দোষ না দিয়ে নিজের খারাপ লাগার জন্য নিজেকে বুঝতে চেষ্টা করুন ।
২। সহযোগিতার মনোভাব বাড়ান। একসাথে কাজ করুন দেওয়া- নেওয়ার মাধ্যমে ।
৩। আপনার দুশ্চিন্তার কারণ খুজে বের করুন এবং অন্যকে নিজের খারাপ লাগার জন্য দায়ী করা বন্ধ করুন।এটা আপনার অতীত জীবনের কোনো বাজে অভিজ্ঞতা বা আপনার অনুভূতিকে অবহেলা করার কারণেই হয়েছে ।
আপনি যদি এই কাজগুলি করতে পারেন, তাহলে দেখবেন অন্যের সাথে আপনার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে ।
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে জার্নালে প্রকাশিত Sean Grover L.C.S.W –র আর্টিকেল অবলম্বনে লিখেছেন সুস্মিতা বিশ্বাস।
লিংক: https://www.psychologytoday.com/blog/when-kids-call-the-shots/201711/do-you-have-controlling-personality?utm_source=FacebookPost&utm_medium=FBPost&utm_campaign=FBPost