খেলাধুলা মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। মানসিক প্রশান্তি দেয়। অথচ পেশাদার খেলোয়াড়রা প্রায় সময় মানসিক চাপে ভোগেন, মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য মনোরোগ চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হোন।
রবিন সোদারলিং, সুইডিশ এই টেনিস তারকা মাত্র ২৪ বছর বয়সে ২০০৯ সালে তখনকার নাম্বার ওয়ান রাফায়েল নাদালকে ফেঞ্চ ওপেনের সেমিফাইনালে হারিয়ে হইচই ফেলে দেন। পরবর্তী এক বছর সোদারলিং এতটাই ভালো খেলেন যে, ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে ৪ নাম্বারে চলে আসেন। অথচ ২০১০ সালের পর আর কখনো টেনিস কোর্টেই নামা হয়নি সোদারলিংয়ের। কারণ ছিল মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি।
৩৭ বছর বয়সী সোদারলিং সেসময়কার নিজের অবস্থা নিয়ে বলেন, ‘আমার তখন সবসময় মনে হতো আমি এক অলিখিত চাপের মধ্যে আছি। আমি খেলার জগতে যতই ভালো করতে শুরু করলাম, আমার মানসিক অবস্থা ততটাই খারাপের দিকে যেতে লাগলো। যখন আমি জয়ের মধ্যে ছিলাম, প্রতিটা ম্যাচেই আমি ফেভারিট হয়ে খেলতে নামতাম। জিতলে বিষয়টা ঠিক থাকতো, কিন্তু হারলেই আমার মধ্যে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতো। আমি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।’
এই সুইডিশ টেনিস তারকা ২৬ বছর বয়সে খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরও লম্বা সময় মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি আরও যোগ করেন, ‘মানসিক চাপের কারণে তখন আমার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা যেন ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমি বিশ্রামের দিনেও প্যানিক করতাম এবং মানসিক চাপে থাকতাম। আমি কাউকে বলতেও পারছিলাম না, কারণ সমাজে তখনো এই বিষয়টা অচ্ছ্যুত ছিল। তারপর আমি সাইকিয়াট্রিস্ট এর সাথে যোগ করি।’
ঠিক একইভাবে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য বিনিয়োগ করছেন আরও অনেক খেলোয়াড়। ২০২১ সালের ফ্রেঞ্চ এবং ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালিস্ট মারিয়া সাক্কারিও তাদের মধ্যে একজন। এই গ্রীক টেনিস তারকা নিজের সম্বন্ধে বলেন, ‘আমি লম্বা সময় ধরে সাইকোলজিস্টের সঙ্গে কাজ করেছি, নিজের মানসিক স্বাস্থ্য সঠিক রাখার জন্য। আমি এর পেছনে প্রচুর খরচ করেছি। আমি বিশ্বাস করি, আমার এই বিনিয়োগ, নিজেকে দেওয়া নিজের জন্য সবচেয়ে বড় গিফট।’
খেলোয়াড়রা এখন মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয় প্রচারে সহায়তা করছে। এমনকি নিজেদের সাধ্যমতো এগিয়ে আসছেন তারা। ২০২০ সালের মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে সাবেক ফেঞ্চ ওপেনের চ্যাম্পিয়ন ইগা সোয়েটিক পঞ্চাশ হাজার ইউ এস ডলার (বাংলাদেশের মূল্যমানে ৪৩ লাখ টাকা) একটি মানসিক স্বাস্থ্যের অর্গানাইজেশনে দান করেন। আমেরিকান কিংবদন্তি টেনিস তারকা ভেনাস উইলিয়ামস আরেকটি মেন্টাল হেলথ অর্গানাইজেশন বেটারহেল্পকে (যারা অনলাইনে বিনামূল্যে থেরাপি দিয়ে থাকেন) ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশের মূল্যমানে ১৭ কোটি টাকা) দান করেন।
সূত্রঃ দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে