নিজের ক্ষতি করার প্রবণতা একটি মানসিক রোগের উপসর্গ

আত্মহত্যা হলো নিজেকে মেরে ফেলা আর নিজের ক্ষতি হলো নিজে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য থাকবে না কিন্তু নিজের ক্ষতি বারবার করতে থাকে। তবে দুটি বিষয় বেশ ভালোভাবে জড়িত। আত্মহত্যা থেকে বেঁচে গেলে নিজেকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য থাকলেও নিজের ক্ষতি হিসেবে ধরা যেতে পারে, আবার অনেকের ক্ষেত্রে নিজেকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য না থাকলেও শেষ পর্যন্ত মারাই যায়।
নিজের রাগকে যারা কোন ক্রমেই নিয়ন্ত্রন করতে পারেন না তারা বারবার রাগের বশবর্তী হয়ে নিজের ক্ষতি করে ফেলতে পারেন। নিজের রাগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য, অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য, অন্যকে ভয় দেখানোর জন্য, অন্যের আচরণ নিয়ন্ত্রন করার জন্য, নিজের চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সহ আরও কিছু কারনে নিজের ক্ষতি করতে পারেন।
কোন কোন মানসিক রোগে এটা দেখা যেতে পারে, এমনভাবে বলতে চাইলে প্রথমে বলা যায় ব্যাক্তিত্ত্বের সমস্যা, মাদকাসক্ত, সিজোফ্রেনিয়া, বিষণ্নতা, ভ্রান্ত বিশ্বাস, আবেগ অনুভূতির সমস্যা সহ আরও কিছু রোগে এটা দেখা যেতে পারে।
বংশগতির ভূমিকা দেখা যায়, অর্থাৎ বাবা মায়ের মধ্যে এই সমস্যা থাকলে বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যেতে পারে। বাচ্চা বয়সে বাচ্চাদের সঙ্গে বাবা মায়ের আচরনের ভূমিকা বিদ্যামান, গোলমেলে পরিবেশ, নিয়ম নীতির অনিয়ম, বাবা মায়ের সম্পর্কে অসংগতি, বাবার জেল ঘটিত সংযুক্তি, বাবা মার নেশা গ্রস্থতা বেশ বড় ভূমিকা রাখে।
ব্যক্তির বুদ্ধিদীপ্তটা, লেখাপড়া, সামাজিক অবস্থা, পেশাগত জীবনের অবস্থান, নেশা, পারিবারিক জীবনে অশান্তি, দৈনন্দিন জীবনের স্ট্রেস মোকাবেলার ক্ষমতা, বন্ধুদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক ইত্যাদি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এই রোগীরা অন্যদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে পারে না, তৈরি করলেও রক্ষা করতে পারে না, অন্যের সমালোচনা নিতে পারে না, অন্যেরা যেটা স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করেন তারা তা করতে পারে না, অনেক অল্প কারনে অন্যের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়তে পারে।
নিজের ক্ষতি একটি মানসিক রোগের উপসর্গ। এটা অবহেলা না করে দ্রুত মানসিক সেবা প্রদানকারীদের শরণাপন্ন হয়ে সমাধানের চেষ্টা করলে পরে হয়ত বড় ক্ষতির হাত থেকে হয়ত রক্ষা পাওয়া সম্ভব।


প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।

Previous articleদেশে প্রতি দুই লক্ষ মানুষের জন্য একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ
Next articleধুমপান ত্যাগে কমবে বিষণ্নতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here