অতিরিক্ত চাপের মুখে নিজেকে শান্ত রাখবেন যেভাবে

0
119

ভালো-মন্দের মিশেলেই গঠিত হয় জীবন। সমন্বয় হয় আনন্দ আর কান্নার। মন্দ আর কান্না আছে বলেই ভালো আর আনন্দের জন্য মুখিয়ে থাকি আমরা। কিন্তু যখন আপনার কিছুই ভালো লাগে না, খুবই কঠিন সময় যাচ্ছে, ভাঙচুর করতে ইচ্ছে করছে, নিদেনপক্ষে উল্টোপাল্টা কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটি ঘটিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। অথবা অপর পক্ষকে মনে মনে আপনি যেগুলো বলছেন, সেগুলো চিৎকার করে শোনাতে ইচ্ছে করছে। তখন আপনি নিজেকে কীভাবে শান্ত রাখবেন? দেখে নেওয়া যাক, কঠিন সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে কী করা যায়।

১. হুট করে আপনি এমন কিছু শুনলেন, যাতে মাথাটা হিটারের চেয়ে দ্রুতগতিতে উত্তপ্ত হয়ে গেল। তখন আপনি করবেন কী? ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ুন। খানিক হেঁটে বা দৌড়ে আসুন। যাতে শারীরিক পরিশ্রম হয়। হাঁটার ফলে এন্ডরফিনস, অক্সিটোসিন, ডোপামিন, এড্রেনালিন এমন সব ‘ফিল গুড’ হরমোন নিঃসৃত হয়। তাতে আপনার বেশ খানিকটা ভালো লাগবে।

২. যদি অফিস নিয়ে দিনের পর দিন ‘প্যারা খান’, বা কিছুতেই মন বসছে না, এমন অবস্থার ভেতর দিয়ে যান, তাহলে সবকিছু থেকে এক দিনের জন্য ছুটি নিন। ছুটি নিয়ে ফোন বন্ধ করে কাছেপিঠে কোথাও ঘুরে আসুন বা আপনার যা করতে ইচ্ছা করে, সেটা করুন। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন। মনের কথা ভাগাভাগি করে নিন বা পরিবারের সঙ্গে আনন্দময় সময় কাটান।

৩. এমন একজন মানুষের জন্য কিছু করুন, যাঁকে আপনি চেনেন না। ভবিষ্যতেও আর দেখা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই তো সেদিন একজন ইউটিউবার একগাদা শপিং করে বের হয়ে রাস্তার পাশে এক বৃদ্ধ ‘ওজন মাপাওয়ালা’কে দিয়ে দিলেন। এ ধরনের কাজ আপনাকে ভেতর থেকে দীর্ঘ সময় একটা ভালো অনুভূতি দেবে, যা কিছু স্যাঁতসেঁতে বা আহত চিহ্ন আছে, সেগুলো সব ঢেকে যাবে, লীন হয়ে যাবে।

৪. এমন কোথাও বসুন, যেখানে আপনাকে কেউ দেখবে না। কিন্তু আপনি অনেককেই দেখতে পাবেন। যেমন একটা কফি শপে বসে আপনি হয়তো ঘণ্টাখানেক একটা গরম কফি হাতে ব্যস্ত রাস্তা, মানুষ আর আশপাশ পর্যবেক্ষণ করলেন। অথবা আপনার অফিসেই আপনি এমন একটি জায়গা খুঁজে পেতে পারেন। বাসার ছাদও হতে পারে এমন একটি স্থান। সেখান থেকে আশপাশের ব্যস্ততা, মানুষের জীবনযাপন, এককথায় ‘হ্যাপেনিং লাইফ অবজার্ভ’ করতে হবে। লাইফ হ্যাকসের গবেষণামতে, এতে আপনি নিজের জীবনকে ওই সামগ্রিকতার একটা ক্ষুদ্র অংশ হিসেবে জুড়ে দিতে পারবেন। তখন আপনার নিজের ভেতরজুড়ে যে হতাশা, বিষণ্নতা বা ক্ষোভ জমে আছে, সেটা ছোট হয়ে আসবে।

৫. আপনি যে অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন, সেই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করুন। ডায়েরিতে পুরো বিষয়ের খুঁটিনাটি লিখে ফেলুন। এক পাশে আপনার নিজের শক্তিশালী দিকগুলোও নোট করে রাখতে পারেন। পুরোনো শখ, অভ্যাস বা কোনো সৃজনশীল কাজ নতুন করে শুরু করতে পারেন। পুরোনো সে রকম কোনো শখ না থাকলে নতুন করে শুরু করুন। এমন কিছু করুন, যেটা আপনি ছোটবেলায় করতেন। জীবন এত ‘সিরিয়াসলি’ নেবেন না। আনন্দে থাকুন। নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলুন। নেতিবাচক আলাপচারিতা থেকে দূরে থাকুন। পর্যাপ্ত ঘুমান। ৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে উঠে দেখবেন, মন খারাপের ভাব অনেকটাই কমে গেছে।

মনে রাখবেন, জীবন একটা ভ্রমণ। সেই ভ্রমণে ঝুঁকি, ক্লান্তি সবই আছে। আপনাকে কেবল মাথা ঠান্ডা রেখে ভ্রমণটা উপভোগ করতে হবে। এভাবে দেখবেন, আপনি ঠিকই গন্তব্যে পৌঁছে গেছেন। তারপর একটু থেমে নতুন গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন। আর যদি কোনো গন্তব্যে না-ও পৌঁছান, তাতে কী; নিশ্চিত করুন, যাত্রাটা আপনার মন্দ যায়নি।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে 

 

Previous articleবিকৃত যৌনাচারের জন্য দায়ী মানসিক রোগ
Next articleআপনার সন্তান মাদকাসক্ত কিনা বুঝবেন যেভাবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here