দিনে ৬ টির বেশি সেলফি তোলা সেলফিটাইস রোগ: গবেষণা

0
47
সেলফি তোলা
মোবাইল ফোনে সেলফি তোলা অনেকেরই প্রিয়। কিন্তু কত প্রিয় হলে তা ‘নেশা’ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত?

গবেষকরা বলছেন, সেলফি তোলার আসক্তি সত্যি সত্যিই একটা ‘সমস্যা’ – এবং আপনি যদি দিনে ৬টির বেশি সেলফি তোলা এবং তা সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করার তাড়না বোধ করেন – তাহলে বলতে হবে আপনার ‘ক্রনিক সেলফাইটিস’ হয়েছে।
এ নিয়ে সম্প্রতি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান – ইংল্যান্ডের নটিংহ্যাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতের থিয়াগারাজার স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট মিলে একটি জরিপ করেছেন।
এখন কথা হলো ৬টির বেশি সেলফি তুললে যদি ‘সেলফাইটিস’ হয়েছে বলা হয় – তাহলে জুনায়েদ আহমেদকে কি বলা যাবে?
বাইশ বছর বয়স্ক জুনায়েদ আহমেদ থাকেন ইংল্যান্ডের এসেক্স কাউন্টিতে। প্রতিদিন প্রায় ২০০টি সেলফি তোলেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ার বা অনুসারী আছে ৫০ হাজার। তিনি কখন সেলফি পোস্ট করবেন সেই সময়টাও ঠিক করেন খুব ভেবে চিন্তে – যাতে যত বেশি সম্ভব ‘লাইক’ পাওয়া যায়। যদি কোন সেলফি ৬০০-র কম লাইক পায় তাহলে সেটা তিনি ‘ডিলিট’ করেন বা মুছে দেন।
তিনি নিজেই স্বীকার করেন যে তিনি সেলফিতে আসক্ত। তার কথা, আমি যখন একটি সেলফি পোস্ট করি, প্রথম দু এক মিনিটের মধ্যে আমি ১০০-র মত লাইক পাই, আমার ফোনটার মাথা খারাপ হয়ে যায়। সে এক দারুণ ব্যাপার।
তিনি এ-ও স্বীকার করেন যে এই সেলফির তাড়নার কারণে তা প্রিয়জনদের সাথে সমস্যা হয়। এখন সেলফির জন্য তিনি তার নিজের চেহারাও ‘আপগ্রেড’ করেছেন বা উন্নতি ঘটিয়েছেন।
“আমি আমার দাঁত সাদা করিয়েছি, চিবুক, চোয়াল, ঠোঁট ও গাল ভরাট করিয়েছি, চোখ এবং চুলে বটক্স লাগিয়েছি, ভ্রু-তে ট্যাটু করিয়েছি, চর্বি জমা থামিয়েছি” বলেন জুনায়েদ।
এরকম আরো দু চারজনের সাথে কথা বলেছেন বিবিসির সংবাদদাতা বেটা শাহ। এদের একজন ড্যানি বোম্যান। বয়স ২৩। তিনিও সেলফি তুলে সোশাল মিডিয়ায় দিতে দিতে আসক্তির শিকার হয়েছিলেন।
তিনি আয়নার সামনে ১০ ঘন্টা পর্যন্ত কাটিয়েছেন, ক্রমাগত সেলফি তোলার জন্য। আর সব ছবিতেই তিনি তার চেহারার ত্রুটি খুঁজে পেতেন।
তিনি একসময় আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। এর পর রিহ্যাবে যান। তিনি মনে করেন তার দেহ নিয়ে হীনমন্যতার সমস্যা তৈরিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটা বড় ভুমিকা ছিল।
ব্রিটেনের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক রয়াল সোসাইটি এখন সরকার ও সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা এমন ব্যবস্থা করে যাতে একটানা দু ঘন্টা অনলাইনে কাটালেই তার ফোনে একটা বার্তা দিয়ে তাকে সতর্ক করা হয়।
সোসাইটি বলছে, সামাজিক মাধ্যম কিভাবে তরুণদের ওপর প্রভাব ফেলছে, তাদের মধ্যে বিষণ্নতা এবং দুশ্চিন্তা তৈরি করছে – তা নিয়ে গবেষণার পর তারা এ আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
সূত্র: বিবিসি

Previous articleবিবাহ বিচ্ছেদ কমাতে পারে একসঙ্গে রোমান্টিক সিনেমা দেখা: গবেষণা
Next articleওর্য়াল্ড সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট বিএসএমএমইউ এর মনোরোগবিদ্যা বিভাগে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here