তরুণদের মানসিক অসুস্থতার কারণে বিশ্বে বাৎসরিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৯০ বিলিয়ন ডলার

0
67
প্রতীকী ছবি

তরুণদের মানসিক অসুস্থতাজনিত কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বছরে প্রায় ৩৯০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থের ক্ষতি হয়। সেই তুলনায় তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে বৈশ্বিক ব্যয়ের পরিমাণ যেন ‘হিমশৈলের চূড়া মাত্র’।

ইউনিসেফ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়। তারা সতর্ক করে বলেছে, শিশু-তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর করোনার প্রভাব অনেক বছর ধরে থাকতে পারে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, করোনা প্রাদুর্ভাবের আগেও শিশু-তরুণরা মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তখনও এ ব্যাপারে বৈশ্বিকভাবে তেমন উদ্যোগ কিংবা বিনিয়োগ করা হয়নি।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিকভাবে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী প্রতি সাতজন কিশোর-কিশোরীর মধ্যে একজনের বেশি মানসিক সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করছে। প্রতি বছর প্রায় ৪৬ হাজার কিশোর-কিশোরী আত্মহত্যা করে, যাদের মৃত্যুর প্রতি পাঁচটি কারণের একটি মানসিক সমস্যা। এছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা ও বরাদ্দ দেওয়া তহবিলের মধ্যেও রয়েছে বিস্তর ফারাক। বৈশ্বিকভাবে সরকার স্বাস্থ্যখাতে যে বাজেট বরাদ্দ দেয় তার মাত্র ২ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যের পেছনে ব্যয় করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মহামারি বিষয়ে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, এটি আমাদের সবার জন্য বিশেষ করে শিশুদের জন্য মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লকডাউন ও মহামারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে শিশুরা শৈশবের গুরুত্বপূর্ণ সময় পরিবার, বন্ধুবান্ধব, ক্লাসরুম, খেলাধুলা থেকে দূরে থাকার কারণে জীবনের একটি অবর্ণনীয় সময় পার করছে। এর প্রভাব বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এমনকি মহামারির আগেও অনেক শিশু শনাক্ত না হওয়া মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছিল। এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মোকাবিলায় যে কোনো দেশের সরকার খুব কমই বিনিয়োগ করেছে। মানসিক স্বাস্থ্য ও এর ভবিষ্যৎ পরিণামের ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

করোনার প্রাদুর্ভাবকালে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য

করোনাভাইরাস মহামারি সবার জীবনে বিশেষ করে শিশু-তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশসহ ২১টি দেশের শিশু-প্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে জরিপ চালায় ইউনিসেফ ও জরিপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান গেলাপ। ফলাফলে দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারী ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে হতাশা ও কাজে উৎসাহহীনতায় ভুগছে ১৯ শতাংশ তরুণ-তরুণী। বাংলাদেশে তার পরিমাণ ১৪ শতাংশ। এছাড়াও বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ হতাশা ও কাজে উৎসাহহীনতায় ভোগেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ইউনিয়ন প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, জীবনের শুরুর বছরগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্যের মতো প্রয়োজনগুলোর ক্ষেত্রে তেমন নজর দেওয়া হয় না। এটা একজন ব্যক্তির সার্বিক সুস্থতার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য একটি জাতীয় কৌশলগত পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। আমাদের এখন এ ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে হবে ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সঙ্গে এই অগ্রগতিকে একীভূত করতে হবে। প্রত্যেক শিশুর সব ধরনের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে 

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

 

Previous articleগতিশীল রাষ্ট্রের প্রধান অন্তরায় ‘মাদক’
Next articleপরকীয়া ও প্রতারণায় কাদের ঝোঁক বেশি?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here