গেমসে আসক্তি, ভাংচুর, স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা: সমাধান কী?

আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা, দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সে সবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন প্রতিদিনের চিঠি বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আমাদের আজকের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন- ফাহিমা মেহজাবিন।

সমস্যাঃ দিনরাত গেমস নিয়ে পড়ে থাকা, স্ত্রীর ঠিকমতো খোজখবর না রাখা, আত্মীয়স্বজনের সাথে যোগাযোগ না রাখা, স্ত্রী কিছু বললে বাসায় ভাংচুর করা, স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা, আবার পরকীয়া করা। এসব কী ধরনের সমস্যা? এগুলো ঠিক করার উপায় জানালে ভীষণ উপকৃত হবে একটা সংসার। উল্লেখ্যঃ তারা এখন ডিভোর্সের কাছাকাছি চলে গেছে।

পরামর্শঃ ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি বিষয় তুলে ধরবার জন্য। আজকাল অনেক ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা ঘটনা ঘটে। প্রথমে যে মানুষটা এই খেলার প্রতি আসক্ত হয় সে কিন্তু বুঝতে পারে না, এবং পরবর্তীতে যখন তাদেরকে বলা হয় তখন তারা এটাকে মেনে নিতে চাইনা। এটা একটা মানসিক সমস্যা। তারা মনে করে যে, ‘আমরা খেলছি এতে তাদের কী? আপনি যে কথাগুলো বলছেন যে, স্ত্রীর খবর নেন না, পরিবারের খবর নেন না, বললে রাগারাগি করে এমন কি গায়ে হাত তোলে। এ বিষয়টিই আসল বিষয় যে, তার ফুল কনসেন্ট্রেশন গেমসের দিকে। একই সাথে এটা বাদ দিতে গেলে সে পারে না। মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। ইরেটাবল হয়ে যায়। আপনাদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়। ক্ষেপে যায়। বিভিন্নভাবে সে কাজের মধ্যে ইনভল্ভ থাকতে চাই। এটাই আসলে এক ধরনের সমস্যা। এটা আচরণগত আসক্তি বা বিহেভিওরাল অ্যাডিকশন। এতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বর্তমান সময়ে।

আচরণগত আসক্তি নিয়ে এর আগে প্রিন্ট ম্যাগাজিনে একটি সংখ্যা বের করা হয়েছে। যদি সম্ভব হয় আপনি সেটা যোগাড় করার চেষ্টা করেন, ‘মনের খবর’ এর সাথে যোগাযোগ করে। এর বাইরে আমি বলব যত দ্রুত সম্ভব ঐ ব্যক্তিকে এক জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করানো এবং এতে উনি রাজী হবেন না জানি, স্ত্রীর কথায় বা অন্য কারো কথায় চিকিৎসা করাতে যাবেন এটাও আশা করা যায়না। কিন্তু যেকোনোভাবে আপনি যদি তাকে বোঝাতে পারেন এবং সক্ষম হন এবং সে নিজেও যদি বুঝতে পারে যে, এটা একটি মানসিক সমস্যা তাহলে হয়তো উনি রাজী হবেন। উনাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। আপনারা বোঝানোর চেষ্টা করেন বা অন্য কাউকে দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কোনো একজন মানুষ যখন তার কাজ করতে গিয়ে তার পারাবারিক বা সামাজিক বা অর্থনৈতিক সম্পর্ক নষ্ট করে তখনি সেটা নজরদারীতে আনা উচিৎ। সুতরাং, আমি বলব, উনাকে বুঝিয়ে দ্রুত একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করান। সব ধরনের চিকিৎসা যেমন-কাউন্সেলিং, বা সাইকোথেরাপি, ওষুধ ইত্যাদি চিকিৎসা লাগবে, দেরী করা উচিৎ হবে না। সবার সামনে এই বিষয়টি তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 

প্রফেসর ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব

অধ্যাপক- মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে  

 

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪
Previous articleওসিডি নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা
Next articleমানসিক স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক কার্যক্রম ‘কথা বলো কথা বলি’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here