কোভিড-১৯ এবং মানসিক সুস্বাস্থ্য

0
71
কোভিড ১৯: একাকীত্ব মানুষকে উচ্চতর মানসিক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে কী?

কোভিড-১৯ আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। এ সময়ে উদ্বিগ্নতা যেন আমাদের চার দিক থেকে ঘিরে ধরেছে। কবে আবার আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারব সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেনা।

এসব নিয়ে আমাদের মানসিক চাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু অস্বাভাবিক বা প্রাত্যহিক কর্ম জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন এই সময়কে আমরা উন্নতির সময় হিসেবেও কাজে লাগাতে পারি যদি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বদলে  ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করতে পারি।

দিন দিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণের গতি এবং থমকে গেছে জন জীবনের ব্যস্ততা। এটা অস্বীকার করা অসম্ভব যে আমরা এখন যেমন সময় পার করছি এমন অভিজ্ঞতা আমাদের আগে কখনোই হয়নি। আমরা এখন এক তীব্র বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট এবং উদ্বেগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে লক্ষ লক্ষ লোক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু বরণ করেছে। কোভিড-১৯ থেকে বাঁচতে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে আমরা সবাই অনেক কিছুই করছি। স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছি, নিয়মিত শরীর চর্চা করছি। কিন্তু এমন তীব্র সংকটের সময়ে শরীরকে ভাল রাখার পাশাপাশি মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে আমরা কতোটা সচেতন? শরীরকে ভাল রাখতে বা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

প্রতি দিন যে কাজগুলো করতে বা যাদের সাথে মিশতে আমরা অভ্যস্ত সেগুলো থেকে দীর্ঘ দিন আমরা বিচ্ছিন্ন। যেহেতু আমরা সামাজিক জীব, এভাবে সবার থেকে আলাদা এবং দীর্ঘ দিন ধরে গৃহবন্দী হয়ে থাকায় আমাদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিক। তবে দীর্ঘ দিন ধরে এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের শরীরের উপর এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়তে পারে। তাই মানসিক চাপ বা উদ্বিগ্নতা নিয়ন্ত্রণে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে সব থেকে বেশী। শরীরকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করা অবশ্যই প্রয়োজন। তবে তার সাথে প্রয়োজন মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।

যেহেতু কোভিড-১৯ থেকে দূরে থাকতে আমাদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে, তাই কিভাবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেও আমরা সবার সাথে যুক্ত থাকতে পারি এই প্রচেষ্টা করতে হবে। আমরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ভারচুয়ালি সবার সাথে যুক্ত থেকে সবাই সবার কাছে থাকতে পারি। এতে করে আমরা শারীরিক সুরক্ষা বজায় রেখে মানসিক সন্তুষ্টি পেতে পারি।

কোভিড-১৯ এর কারণে গৃহবন্দী জীবনে যে সব কাজ করলে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়, যেমন, গান শোনা, টিভি দেখা, মুভি দেখা, রান্না করা, শরীর চর্চা করা, পরিবারের সাথে সময় কাটানো ইত্যাদি কাজ করে আমরা মানসিক চাপ কমাতে পারি। মহামারী আতঙ্ক যেন আমাদের প্রতি দিন মানসিকভাবে একটু একটু করে মেরে না ফেলে সেজন্য ভয় ভীতি ত্যাগ করে মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে যেন সব রকম অবস্থায় আমরা আমাদের মনের জোর বজায় রাখতে পারি।

শরীরটাকে ঘরে আবদ্ধ রাখলেও মনটাকে উন্মুক্ত রাখুন। মনকে সঙ্কীর্ণ হতে দেবেন না। মানসিকভাবে নিজেকে চাঙ্গা রাখুন। মনে রাখবেন ভেঙ্গে পড়লে কোন কিছুর সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবেনা। মনের জোর অটুট রাখলেই কোভিড-১৯ সহ যেকোন পরিস্থিতি আপনি  মোকাবেলা করতে পারবেন। তাই শরীরকে সুস্থ্য রাখতে, শরীরের দিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিন। যেসব কাজ করলে মন ভাল রাখা যায়, সেসব কাজ করুন। মনে রাখবেন, সুস্থ মন মানেই সুস্থ শরীর।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

 

Previous articleবার্ধক্যে মানসিক রোগ
Next articleদুই দিন প্রাইভেট চেম্বারে রোগী না দেখার সিদ্ধান্ত মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here