Close Menu
    What's Hot

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    Facebook X (Twitter) Instagram
    Monday, July 7
    Facebook X (Twitter) Instagram
    মনের খবরমনের খবর
    ENGLISH
    • মূল পাতা
    • কার্যক্রম
      1. জাতীয়
      2. আন্তর্জাতিক
      Featured
      কার্যক্রম July 2, 2025

      বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

      Recent

      বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

      অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

      সাইকিয়াট্রি বিভাগের মে মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

    • প্রতিদিনের চিঠি
    • মানসিক স্বাস্থ্য
      1. মাদকাসক্তি
      2. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তথ্য
      3. যৌন স্বাস্থ্য
      4. শিশু কিশোর
      Featured
      ফিচার October 7, 2024

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      Recent

      যৌনতা নিয়ে ভুল ধারণা

      শিশুর আবেগ নিয়ন্ত্রণ কীভাবে শেখাবেন

      কর্মব্যস্ততা প্রভাব ফেলে যৌনজীবনে

    • ফিচার
    • প্রশ্ন-উত্তর
      1. বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
      2. মাদকাসক্তি
      3. মানসিক স্বাস্থ্য
      4. যৌন স্বাস্থ্য
      Featured
      প্রশ্ন-উত্তর May 3, 2025

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      Recent

      কেউ আমার সঙ্গে ১০ মিনিট থাকলেই বিরক্ত হয়ে যায়

      বর্তমানে খুব ভয়াবহ সমস্যায় ভুগছি, কী করবো বুঝতে পারছিনা

      রাতে ঘুমাতে পারি না, সবসময় এক ধরনের অস্থিরতা অনুভব করি

    • জীবনাচরণ
      1. অন্যান্য
      2. অপরাধ আচরণ
      3. কুসংস্কার
      4. মতামত
      5. মন ও ক্রীড়া
      6. মন প্রতিদিন
      7. মনোসামাজিক বিশ্লেষণ
      8. সাক্ষাৎকার
      Featured
      দিনের চিঠি April 28, 2025

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      Recent

      রায়হান মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, অকারণে আতঙ্কিত বোধ করছে

      জীবনের ফাঁদে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছি, কায়দা করেও আর যেন বাঁচতে পারছি না!

      মা আর নিজেকে চেনেন না — ঘুম নেই, স্মৃতি নেই, পরিচ্ছন্নতাও নেই!

    • মনস্তত্ত্ব.
      1. তারকার মন
      2. ব্যাক্তিত্ব
      3. মনস্তত্ত্ব
      Featured
      ফিচার December 5, 2023

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      Recent

      শিশুদের ওসিডি অভিভাবকেরই দায় বেশি

      মানুষ বদলালেই কেবল পৃথিবী বদলাবে

      প্রসঙ্গ : সাইক্লোথাইমিক ব্যক্তিত্ব

    • করোনায় মনের সুরক্ষা
      1. টিপস্
      2. বিশেষজ্ঞের মতামত
      3. বিশ্ব পরিস্থিতি
      4. সার্বক্ষনিক যোগাযোগ
      Featured
      টিপস্ September 28, 2024

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      Recent

      MK4C-তে কীভাবে টেলিসাইকিয়াট্রি চিকিৎসা নেবেন?

      প্রবাসীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় MK4C-তে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার পরামর্শ

      পরিবার যেভাবে শিশুকে গড়ে তুলবে

    মনের খবরমনের খবর
    You are at:Home » কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য হুমকিতে
    জীবনাচরণ

    কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য হুমকিতে

    মনের খবর ডেস্কBy মনের খবর ডেস্কNovember 20, 2021No Comments9 Mins Read0 Views
    Facebook Twitter Pinterest Telegram LinkedIn Tumblr Email Reddit
    কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য হুমকিতে। ছবিঃ ইন্টারনেট
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest WhatsApp Email

    জীবনধারণের জন্য আমাদেরকে কোন একটা নির্দিষ্ট বয়সে কাজের সন্ধানে নেমে যেতে হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় ২০ থেকে ২১ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। এই বিরাট জনগোষ্ঠীর মধ্যে কেউ কেউ ব্যবসা বেছে নেয়, কেউ আবার চাকুরি করে আবার কেউ গৃহস্থালি পর্যায়ের কাজে নিয়োজিত। বাংলাদেশে পরিচালিত সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৭ অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম মোট ৬ কোটি ৩৫ লাখ মানুষের মাঝে ৬ কোটি ৮ লাখ মানুষ কাজের মধ্যে ছিলেন। জরিপে বলা হচ্ছে, যারা চাকরি করেন কিংবা কাজে যুক্ত তাদের মাঝে ৬০ দশমিক ৯ শতাংশের ব্যক্তিগত অংশীদারিত্ব অথবা ব্যবসা-বাণিজ্য উদ্যোগের ভিত্তিতে কর্মসংস্থান হয়েছে। গৃহস্থালি পর্যায়ে কাজ করেন ২০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত কিংবা স্থানীয় সরকার পর্যায়ে কাজ করেন মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আর এনজিওতে আছেন দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
    বাংলাদেশের শ্রমবাজারে আনুষ্ঠানিক সেক্টরে প্রবেশের সময়ে একজন মানুষকে যে তীব্র্র প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে আসতে হয় তা মোটামুটি সবারই জানা। এই প্রতিযোগিতায় প্রত্যাশিত চাকরি না পাবার ফলে অনেকেরই হতাশা বাড়ে। ছাত্রজীবনে নানাবিধ মানসিক চাপ, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সাথে লড়ার ক্ষমতা হারিয়ে আত্মহননের পথও বেছে নেওয়ার নজিরও মেলে। জীবন সংগ্রামে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার তীব্র চাপ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, মাদক, সমস্যার কথা খুলে বলার জন্য বিশ্বাসযোগ্য মানুষের অভাবসহ নানাবিধ কারণ এর পেছনে রয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহেই চার জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে, যা বড় মর্মান্তিকও বটে।

    এছাড়াও মে ২০২১ এর একটি রিপোর্টে দেখা যায়, কোভিড সংক্রমণের সময়ে মেডিকেল- বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ জন ছাত্রছাত্রী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। অথচ আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হেলথ সেন্টার বা মেডিকেল সাপোর্ট টিম থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থাপনা নেই বললেই চলে। একজন ছাত্র-ছাত্রী তার ছাত্রজীবনে যে সময়ের মাঝ দিয়ে যায় সেখানে নানামুখী আবেগ কাজ করে থাকে। এ সকল আবেগের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও বহিঃপ্রকাশ ঘটানো জরুরি হলেও এ বিষয়ে সচেতনতার অভার পরিলক্ষিত হয়। ছাত্রজীবন শেষ করে একজন যখন পেশাগত জীবনে প্রবেশ করে তখন নতুন পরিবেশের সাথে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। কর্মক্ষেত্রেও মানসিক স্বাস্থ্য উপেক্ষিত থাকে। যে ছেলে বা মেয়েটি অনেকক্ষেত্রেই অগোছালো জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিল তাকে এখন একটি রুটিনমাফিক জীবন পরিচালনা করতে হয়। এই খাপ খাইয়ে নিতে না পারায় অনেকেই কাজের মাঝে আনন্দ খুঁজে পায় না, ফলে তার উৎপাদনশক্তি কমতে থাকে।

    অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, কাগজে কলমে একজন কর্মজীবীর কর্মঘন্টা ৮ ঘন্টা হলেও বাস্তবে এর চেয়ে বেশি সময় অফিস আদালতে কাটাতে হয়। কর্মজীবন শুরুর পর জীবনের এক তৃতীয়াংশ সময় যেখানে কাটতে হয় সেখানে নিয়মিত কাজের বাইরেও তার অনেক ধরণের কাজে যুক্ত হবার প্রয়োজন পড়ে। কখনো কখনো কোন প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত চাপ নেবার বিষয়টিকে তার দক্ষতা ভেবে কর্মীর উপর চাপ বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত চাপ একজন কর্মীর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে যা তার উৎপাদনশীলতা, কমস্পৃহা এবং সৃজনশীলতাকে মারাত্মকভাবে বাঁধাগ্রস্ত করতে পারে।

    বাংলাদেশের বাস্তবতায় পরশ্রীকাতরতা বিষয়টি কর্মক্ষেত্রে বুলিং, বডি-শেমিং এর মত অপরাধগুলো ঘটিয়ে থাকে। একজন কর্মী তার সহকর্মীদের দ্বারা বুলিংয়ের শিকার হলে তার মনোজগতে এক মারাত্মক পরিবর্তন আসতে পারে। সে নিজেকে গুটিয়ে নেয়, অন্যদের সাথে মিশতে পারে না, কর্মউদ্দীপনা হারিয়ে ফেলে। ফলে সে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়ে। অনেকক্ষেত্রে কর্মীর ভেতরে অপরাধবোধ জন্ম নেয় এবং সে হতাশ হয়ে পড়ে। এ অবস্থা তাকে বিষণ্ণতার দিকে ধাবিত করে।

    কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক বড় অন্তরায় হলো হয়রানি বা নিপীড়ন। কখনো কখনো এটি যৌন নিপীড়ন পর্যন্ত গড়ায়। এর ফলে একজন কর্মী কর্মক্ষেত্রেই নিরাপত্তাহীনতা এবং হীনমন্যতায় ভুগে। সে তার সমস্যা কাউকে বলতে না পারায় ভেতরে ভেতরে অসহায়বোধ করে। এর ফলে তার মধ্যে এক ধরণের ট্রমা তৈরি হয় যা তার মানসিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে নষ্ট করে দেয়। সে তার সহকর্মীদের অবিশ্বাস করতে শুরু করে এবং তাদের দ্বারা তার ক্ষতি হতে পারে এমন ভাবনাও ভাবতে পারে।

    কর্মক্ষেত্রে বর্তমান সময়ের একটি পরিচিত প্রপঞ্চ হলো ‘অফিস পলিটিক্স’ যেখানে কর্মীকে তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তোষামোদ করতে হয়, কর্তার মন জুগিয়ে চলতে হয় নতুবা যেকোনও সময় চাকরিচ্যুতির ভয় থাকে। এই পলিটিক্সে একই কর্মক্ষেত্রে সমান্তরালে অবস্থানরত কর্মী, কর্মকর্তা থেকে শুরু করে উর্ধ্বতন থেকে অধঃস্তন পর্যন্ত এক ধরনের দলাদলি কাজ করে যা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ অপেক্ষা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে। সমস্যা তৈরি হয় যখন একপক্ষ তার স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অন্য পক্ষের উপর দায় চাপায়, অন্যের ক্ষতি করতে উদ্যত হয়। এই পলিটিক্সের কারণে একজন কর্মী তার কর্মক্ষেত্রে কাউকে যেমন বিশ্বাস করতে পারেনা ঠিক তেমনি কারও কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠে না। ফলে কর্মীদের ভেতরে এক ধরনের অবিশ্বাসের জন্ম নেয়, ভীতি কাজ করে, কর্মী নিজেকে গুটিয়ে রাখতে চায়, সমস্যার সমাধানে অগ্রসর না হয়ে সমস্যাকে পুষতে থাকে। এক সময় সে হতাশায় ভুগে।
    বেতন কাঠামোগত কারণে, পারিবারিক প্রয়োজনে, কর্মক্ষেত্রের দূরত্ব বিবেচনায় অনেকেই পরিবার থেকে দূরে তার কর্ম এলাকায় অবস্থান করে থাকে। নিজ কর্ম এলাকা থেকে ঠিকমতো বাড়ি যেতে পারে না। এমনকি নিয়মিত যোগাযোগ করা হয়ে উঠে না। পরিবারের আকাঙ্ক্ষা, চাহিদা বা প্রত্যাশার পারদ উপরে উঠে গেলেও হাড়ভাঙা পরিশ্রমের মাধ্যমে একজন কর্মজীবী মানুষ তা পূরণে চোয়ালবদ্ধ প্রতীজ্ঞায় নিজেকে বিলিয়ে দেয় কিন্তু দিনশেষে তার কথা শোনার মানুষেটি থাকেনা। কর্মজীবনে অনেক প্রথিতযশা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও এমন উদাহরণ বিদ্যমান। সম্পর্কগুলো আলগা হয়ে গেলে বিশ্বাসের পারদ নিচে নেমে যায় এবং ব্যক্তি একাকী হয়ে পড়ে যা তাকে অবসাদগ্রস্ত ও বিষণ্ণ করে তোলে।

    কর্মজীবীদের এসব সমস্যাগুলো নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে। কর্মীর কাজের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে থাকে। আর তাই কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সুরক্ষা দান করাটি প্রতিষ্ঠানের উপরই বর্তায়। বাংলাদেশে অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের মাঝেও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অসচেতনতা রয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্য বা সুস্বাস্থ্যের সংজ্ঞায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি প্রণিধাণযোগ্য বিষয় হলেও এ বিষয়টিও সচেতন কিংবা অবেচতন মনে আমরা এড়িয়ে যেতে চাই। বরং মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটলে অনেকের কাছের মানুষদের নিকট হতে এরকম তীর্যক মন্তব্য শুনতে হয়-

    “মানসিক সমস্যা আবার কী, বরং এটি শুধুমাত্র কাজ ফাঁকি দেবার ফন্দি।”

    “এটার জন্য আবার কাউন্সেলর, মনোবিদ বা মনোচিকিৎসক লাগে নাকি?”

    “উনি পাগল হয়ে গেছেন।”

    “আমিই তো কাউন্সেলিং করতে পারি ইত্যাদি।”

    অথচ যে কোন ব্যক্তি কর্মজীবনের কোন এক দশায় এসে মানসিকভাবে মুষড়ে পড়তে পারেন। অনেকক্ষেত্রে কর্মী পারিবারিক জীবন ও কর্মজীবনের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন। অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে পারেনা ফলে তার উৎপাদনশীলতা সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা নষ্ট হয়। এ সময়টিতে তার মানসিক সাপোর্ট ভীষণ প্রয়োজন পড়ে। তবে বেশিরভাগক্ষেত্রেই অফিসের সহকর্মীদের কাছে সমস্যাগুলো খুলে বলার ক্ষেত্রে কর্মীর ভেতরে জড়তা কাজ করতে পারে। কারণ এক্ষেত্রে অতি গোপণীয় কতিপয় বিষয় রয়েছে যা তার আত্মমর্যাদা, চাকরির নিরাপত্তার সাথে জড়িত থাকে। তাই এক্ষেত্রে পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন পড়ে। তবে কাউন্সেলিং যে এক ধরনের মনোসামাজিক সেবা, সেটি ভুলে আমরা যেকোন পেশার মানুষই কাউন্সেলর হয়ে উঠতে চাই যে বিষয়টি অতি ভয়াবহ। মনে রাখতে হবে আমাদের সান্তনানির্ভর সমাজব্যবস্থায় সত্যিকার সহমর্মিতা প্রকাশ করাটা বড্ড চ্যালেঞ্জিং। পাশাপাশি কোন ব্যক্তি বা কর্মীর ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলতে পারে এমন গোপনীয় এবং সংবেদনশীল বিষয়গুলো ধারণ করাও সবার পক্ষে সম্ভবপর নয়। তার উপর আমাদের আগে থেকেই জাজমেন্টাল থাকার প্রবণতা ব্যক্তির সমস্যা সমাধানে তার ব্যক্তিগত বুদ্ধিমত্তা বা শক্তিমত্তার হঠাৎ কাউন্সেলর হয়ে উঠা ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা বা শক্তিমত্তার প্রকট প্রভাব কাজ করতে পারে যা ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের ভুল পদ্ধতি। তাই কর্মজীবীদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যায় প্রতিষ্ঠানসমূহকে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কতিপয় সুপারিশমালা তুলে ধরা যাক:

    ক. মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা থাকতে হবে।

    খ. কর্মীদের উপর মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জরিপ চালাতে হবে।

    গ. কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবি নিয়োগ করতে হবে।

    ঘ. কর্মক্ষেত্রে বুলিং বন্ধ করতে হবে।

    ঙ. সকল ধরনের নিপীড়ন বন্ধের জন্য প্রতিষ্ঠানকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

    চ. কর্মক্ষেত্রে রোবটিক জীবনের পরিবর্তে প্রয়োজন সাপেক্ষে হাসি, আনন্দ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।

    ছ. মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

    ঞ. রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।

    মনে রাখতে হবে যে কর্মক্ষেত্রে দিনের এক-তৃতীয়াংশ সময় কাটে সেখানের পরিবেশ যদি কর্মীর অনুকূল না হয় তবে তার কাজ করার আগ্রহ কমে যেতে পারে। দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, হতাশা তাকে গ্রাস করতে পারে। তাই কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নতুবা প্রতিষ্ঠান তথা রাষ্ট্রকে উৎপাদনশীল ও সৃজনশীল মানবসম্পদের পরিবর্তে জীবন্ত লাশ বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে আগামীতে।

    ২০১৭ সালে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল- ‘কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য’ এবং সে বছরেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশনের ফর মেন্টাল হেলথ এর গবেষণায় উঠে আসে, কর্মক্ষেত্রে প্রতি ৫ জনে ১ জন মানসিক সমস্যায় ভোগেন। ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের সমস্যায় চাকরি হারান। দেশে গত অগাস্ট মাসেও একজন হতাশাগ্রস্ত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আত্মহত্যা করেন যেখানে তার স্ত্রীর দাবি, যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বগুড়ায় চাকরিজনিত বদলির কারণে ডা. আব্দুস সালাম আত্মহত্যা করেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কও বলেন, ”বদলিজনিত কারণে ডাক্তার সেলিম খুব হতাশাগ্রস্ত ছিলেন।” আসলে ডাক্তাররা কি মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকতে পারেন? তাদের কর্মঘণ্টা আসলে কতক্ষণ? আবার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীর দিকে তাকালে দেখা যায়, এ বছরের ২১ জুলাই পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলাম, ১৫ জুলাই পুলিশ সদস্য কাইয়ুম সরকার, ২১ মার্চ  এসআই হিসেবে পুলিশে যোগ দেওয়া হাসান আলী- প্রত্যেকেই নিজ রাইফেল কিংবা পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করেছেন। এর মাঝে মেহেরপুরে থাকা সাইফুল ইসলাম আত্মহত্যা করেন কোরবানির ঈদের দিন সকালে। তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন দাবি করেন, কর্মব্যস্ততায় দীর্ঘদিন বাড়ি যেতে না পারায় হতাশায় ভুগছিলেন সাইফুল। পুলিশের চাকরিতে নিয়োজিত সদস্যরা আসলে কতটুকু ছুটি পান বা কাটাতে পারেন? পরিবারকে কয়জন কাছে রাখতে পারেন কিংবা সময় দিতে পারেন? সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেও দেখা যায় ঈদের দিন টেলিভিশনের সামনে দাড়িয়ে গেছেন; হয়তোবা বাবা-মা পড়ে আছেন শহর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে। তাদের মনেও কষ্ট জেগে উঠতে চায়, তবে তারাও দমন করেন। পেশার সাথে যুদ্ধে আবেগ সাময়িকভাবে হার মেনে নেয়; তবে সমস্যাসমূহ কোন এক সময় মাথা চাড়া দিয়ে উঠলেই বিপত্তি বাঁধে।

    কিছু বিষয় ভুলে গেলে চলবেনা। মানসিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়লে স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দৃশ্যমান হয়; সাথে আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়ে। ২০১৯ সালে ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক অর্গানাইজেশনের মতে, বিশ্বে প্রতি ২ সেকেন্ডে ১ জনের স্ট্রোক হয় আর প্রতি ৪ সেকেন্ডে ১ জন মারা যান। বাংলাদেশেও স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৯ লাখ। স্ট্রোকের পেছনে লুকিয়ে থাকা নানাবিধ কারণের মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, শারীরিক পরিশ্রম না করা বা ব্যায়ামের অভাবে সৃষ্ট স্থুলতা। আনুষ্ঠানিক খাতে যারা কাজ করেন তারা অতিরিক্ত কাজের চাপ, দুশ্চিন্তা, কর্মঘণ্টার মারপ্যাঁচে পড়ে ব্যায়াম করার পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়া ইত্যাদি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি এমনকি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

    আবার এদেশে আত্মহত্যা বিষয়ে আঁচল ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ এর ২৮ ফেব্রুয়ারির এই কোভিড সংক্রমণের সময়ে ১৪ হাজার ৪৩৬ জন আত্মহত্যার পথ বেছে নেন, যা ২০১৯ অপেক্ষা ৪৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি। পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক জরিপে উঠে আসে, দেশে কোভিডের সময়ে ১০ মাসে যখন করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু ৫ হাজার ২০০, সেখানে আত্মহত্যার ঘটনা ১১ হাজারেরও বেশি। রিপোর্ট মোতাবেক মহামারীর সময়ে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক কিংবা হার্ট ফেইলিউরে মারা গেছেন ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ। উপরের সংখ্যাগুলো কোনটিকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। আত্মহত্যার মৃত্যুগুলোর পেছনে হয়তোবা লুকিয়ে থাকে কত মানুষের না জানা গল্প- অনেকের দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মানসিক যন্ত্রণা, অতিরিক্ত চাপ, ঘুমের সমস্যা হতাশার কাহিনী যা বলা হয়ে ওঠেনি কখনো। অথচ যে যেখানে অধিষ্ঠিত সেখানে যদি তার একজন ভাল শ্রোতা, উত্তম সঙ্গী মিলত তবে সেই মানুষটি হাসিমুখে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে পারত। কাজের ক্ষেত্রে কর্মউদ্দীপনা, কর্মস্পৃহা বেড়ে যেত ফলে প্রতিষ্ঠান তথা রাষ্ট্র উপকৃত হত। আসুন আমরা প্রতিদিনই মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করি এবং কর্মক্ষেত্রসহ সকল স্তরে নিজে ভাল থাকি, অন্যকে ভাল রাখি।

    সুত্রঃ ইন্টারনেট

    স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
    করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
    মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

    “মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪
    করোনা ভাইরাস কোভিড ১৯ গবেষণা নারী পুরুষ মানসিক চাপ মানসিক রোগ মানসিক সমস্যা মানসিক স্বাস্থ্য স্ট্রেস হতাশা
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Reddit WhatsApp Telegram Email
    Previous Articleদক্ষিণ আফ্রিকায় লকডাউনে অপরাধ আচরণে মৌলিক পরিবর্তন ঘটেছে
    Next Article ‘পরিচালক হিসেবে আমাদের প্রচুর ফলোআপ রাখতে হয়’
    মনের খবর ডেস্ক

    Related Posts

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    July 5, 2025

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    July 3, 2025

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    Top Posts

    অভিভাবকত্ব শুধুমাত্র লালন-পালনের নাম নয়, এটি একটি সুসংগঠিত প্রক্রিয়া

    June 30, 2025277 Views

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    July 2, 2025194 Views

    অতিরিক্তি হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায়

    July 25, 2021102 Views

    অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়

    August 22, 202153 Views
    Don't Miss
    প্রতিদিনের স্বাস্থ্য July 5, 2025

    শিশুদের স্ক্যাবিস: ছোট্ট শরীরের বড় চুলকানি, প্রতিকার ও প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

    ডা. রিফাত আল মাজিদ জনস্বাস্থ্য গবেষক ও চিকিৎসক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ,  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ গ্রীষ্মের…

    মনে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি

    বাংলাদেশি মনোরোগ চিকিৎসকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

    শিশুদের কেন এবং কিভাবে পরার্থপরতার প্রেরণা দেয়া যায়

    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    প্রকাশক ও সম্পাদক:
    অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
    মোবাইল : (+88) 018-65466594, (+88) 014-07497696
    ইমেইল : info@monerkhabor.com

    লিংক
    • মাসিক ম্যাগাজিন প্রাপ্তিস্থান
    • কনফারেন্স-সেমিনার-ওয়ার্কশপ
    • প্রেজেন্টেশন
    • জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
    রিসোর্স
    • পরিচালনা পর্ষদ
    • মানসিক বিষয়ে সংগঠন
    • বিশেষজ্ঞ লোকবল
    • নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
    সোশ্যাল মিডিয়া
    • Facebook
    • YouTube
    • LinkedIn
    • WhatsApp
    © 2025 মনেরখবর সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ
    • গোপনীয়তা নীতি

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.