সন্তান লালন-পালন আর পুতুল খেলা এক জিনিস নয়। একজন মানুষের মানসিক বিকাশ হয় শিশু বয়সে। তাই এ সময়টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শিশুরা সবসময় সঙ্গ পছন্দ করে, মা-বাবা বা পরিচিতজনদের মাঝে থাকতে চায়। নতুন নতুন খেলনার আবদার করে। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেক মা-বাবারই দাবি, তাদের সন্তানরা আগের মতো তাদের সঙ্গে মিশছে না। খাওয়া-দাওয়া কিংবা ঘুমেও সমস্যা হচ্ছে তাদের। অনেকেই এর কারণ খুঁজে পান না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের এই এককেন্দ্রিকতার অন্যতম কারণ প্রযুক্তির ব্যবহার, বিশেষ করে সেলফোন। আমরা আমাদের দিনের অনেকটা সময় কোনো প্রয়োজন ছাড়াই অনলাইনে কাটিয়ে দেই। এটা এক ধরনের আসক্তি-ই বলা যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব আরো ব্যাপক। অনেকেই শিশুর কান্না থামাতে কিংবা তাদের বিনোদনের জন্য মোবাইলফোন তুলে দেন হাতে, যা একেবারেই অনুচিত।
অনেক অভিভাবকই বুঝতে পারেন না কত বছর বয়সে সন্তানদের হাতে ফোন দেবেন। এ বিষয়ে কথা বলেছেন স্বয়ং মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তিনি জানান, ১৪ বছর বয়সের আগে তার সন্তানদের কারো ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ছিল না।
কী অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন বর্তমান প্রযুক্তি-দুনিয়ার অন্যতম কর্ণধারের সন্তানরা ১৪ বছর বয়সের আগে ফোন ব্যবহার করতেন না – এটাও কী সম্ভব! হ্যাঁ, এটাই সত্যি। তার সন্তানদের বর্তমান বয়স যথাক্রমে ২০,১৭ ও ১৪ – হাইস্কুলে যাওয়ার আগে তাদের নিজস্ব কোনো ফোন ছিল না।
২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘কিডস অ্যান্ড টেক: দ্যা এভ্যুলুশন অব টুডে’স ডিজিটাল ন্যাটিভস’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গড়ে ১০ বছর তিন মাস বয়সে একজন শিশু নিজস্ব স্মার্টফোন পায়। এ গবেষণায় আরো উঠে আসে, গড়ে ১১ বছর ৪ মাস বয়সে একজন শিশু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম সাইটগুলোতে তাদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। মা-বাবাকে দেখেই তারা শেখে। আপনি যে কাজটি করা থেকে বিরত থাকতে পারছেন না, সন্তানকেও সে কাজটি করা থেকে আপনি বিরত রাখতে পারবেন না। তাই নেট-দুনিয়া থেকে দূরে সরে সন্তানকে সময় দেয়ার চেষ্টা করুন। সময় পেলেই কাছাকাছি কোথাও ঘুরে আসুন সন্তানকে নিয়ে। প্রকৃতি-পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিন তাকে। আর অবশ্যই ১৪ বছর বয়সের আগে তার হাতে ফোন তুলে দেবেন না।
অনুবাদ করেছেন: আফিয়া নিশি
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
https://timesofindia.indiatimes.com/life-style/parenting/teen/bill-gates-says-this-is-the-safest-age-to-give-a-cell-phone-to-your-child/articleshow/66379764.cms