একজন মানুষ অপর এক জনের প্রতি আকর্ষণ বোধ করবেন। কথাবার্তা, গুণ, রুচি ও চরিত্রের দৃঢ়তা এ সবই আকর্ষণের কারণ হিসাবে কাজ করবে। মানুষে-মানুষে আকর্ষণের
নেপথ্যে না কি এর বাইরেও অনেক মনস্তাত্ত্বিক ও বৈজ্ঞানিক কারণ আছে।
বিদেশের নানা মনোবিদ ও ব্যবহার বিশেষজ্ঞদের মতে, হরমোনের নানা কারিকুরি, চার পাশের অবস্থান, পরিস্থিতি এ সবের ভূমিকা ওই রূপ-গুণ-রুচি-মতের মিলের চেয়েও বেশি। ঠিক কী কী অদ্ভুত বিষয়কে প্রেমে পড়া বা বন্ধুত্ব স্থাপনের কারণ হিসাবে দাবি করছেন গবেষকরা।
দু’জনকে ঘিরে তৈরি হওয়া কোনো প্রত্যাশা বা ভিত্তিহীন কোনও প্রচারও ওই দুই মানুষের মনে এক অদ্ভুত প্রভাব ফেলে। দু’জন সহপাঠীকে নিয়ে তৈরি হওয়া কোনও গুজব তাদের সত্যিই কোনও সম্পর্কে বেঁধে দিয়েছে এমন নজির বিরল নয়। আবার তারকাদের ক্ষেত্রে রিল লাইফের সেরা জুটিরা রিয়েল লাইফেও প্রেমে পড়েছেন।
দু’জনকে নিয়ে ক্রমাগত চর্চা- মানুষের হাইপোথ্যালামাসকে প্রভাবিত করে। প্রথম প্রথম উড়িয়ে দিলেও অবিরাম চর্চা চলতে থাকলে, তা নিয়ে উত্তেজিত হলে শরীরে যে হরমোনঘটিত আবেগ তৈরি হয়, তার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ভালবাসার বীজ! বিজ্ঞানীদের মতে, চর্চা ও তাদের জুটি নিয়ে মানুষের নানা মন্তব্য প্রভাবিত করে মানুষকে।
নৈকট্য বা কাছাকাছি অবস্থানকেও এই আকর্ষণের পিছনে কলকাঠি নাড়ার অন্যতম বিষয় হিসাবে ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। কোনও পরিস্থিতিতে একই সঙ্গে থাকতে শুরু করা বা জীবনের একই পরিস্থিতির মোকাবিলা করাও একজনকে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল করে তোলে। সুস্থ-স্বাভাবিক মনের মানুষের ক্ষেত্রে প্রেমে পড়ার অন্যতম কারণ এই সহানুভূতি।
ক্লেটন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, প্রেম বা সম্পর্কে এগোনোর ক্ষেত্রে শারীরিক চাহিদা ও মিলন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। পরিস্থিতিগত কারণে দু’জন মানুষ যদি দু’জনের প্রতি সম্মান-সহ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন, তবে তাপিটুইটারি গ্রন্থিকে উদ্দীপ্ত করে মানসিক আকর্ষণেরও জন্ম দেয়।
জৈবিক যে সব কারণে কোনও মানুষের প্রতি আকর্ষণ তীব্র হতে পারে, তার অন্যতম চেহারা। সাধারণত, রূপের চেয়েও শরীরের গঠন, উচ্চতা, পেশীবহুল চেহারা এ সব মানুষের হাইপোথ্যালামাসে ভাল লাগার বার্তা পৌঁছায়। তখনই ডোপামিন হরমোন মস্তিষ্কে প্রেমের বার্তা পৌঁছায়।
কোনো মানুষের সঙ্গে তীব্র বিবাদ বা লাগাতার ছোটখাটো বিষয়ে সমস্যা লেগেই থাকে? সাবধান! এখান থেকেও প্রেমে পড়া অস্বাভাবিক নয় মোটেই। বরং এই সব খিটিমিটি উল্টে কখনও ডোপামিনকে উত্তেজিত করে। তাই ঝগড়ার মানুষটার প্রতিও কোথাও মায়া কাজ করে কোনো কোনও মানুষের মনে। বহু সিনেমাও এমন গল্পের সাক্ষী।
প্রেমে পড়ার বেশির ভাগ কাজটাই হরমোনের খেলা। তাই ‘বিপরীত মেরু একে অন্যকে টানে’- এমন তত্ত্বে খুব একটা ভরসা জোগাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, আধুনিক জীবনযাত্রা, কর্মব্যস্ত সময়ে মানুষ খুব সংঘাতে যেতে রাজি নন। তাই অনেক সময় মতামতের ডোপামিন ক্ষরণ হয় না। বরং মতে মেলে এমন মানুষকেই সে বেছে নিতে চায়।
Previous Articleআত্মহত্যা ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক হচ্ছে কাউন্সেলিং
Next Article মনের খবর সম্পাদকের জন্মদিন উদযাপিত