কোভিড-১৯ অন্যান্যদের তুলনায় মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বহুলাংশেই বৃদ্ধি করেছে এবং এর ফলে তাদের মাঝে নানা ধরণের মানসিক সমস্যাও বেড়ে গেছে। যা অত্যন্ত চিন্তার কারণ।
সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে গেছে, মহামারী কালীন এই অস্থির অবস্থা মায়েদের মানসিক অবস্থার উপর অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি করেছে। করোনা মহামারী শুধু আমাদের সামাজিক জীবনকেই নয় বরং অর্থনৈতিক এবং পারিবারিক জীবনেও পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। অনেক অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে গেছে। পরিবারের বাড়তি চাপ পারিবারিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। খাদ্য, বাসস্থান এবং অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদা অনুসারে প্রাপ্তি হয়ে উঠেছে কষ্ট সাধ্য। আর পারিবারিক এসব সমস্যা মহামারী কালে মায়েদের মানসিক চাপ বাড়াচ্ছে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন করছে। এ ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে রয়েছে ঘুম কমে যাওয়া, দুঃস্বপ্ন দেখা, ক্ষুধা মন্দা বা অধিক পরিমাণে খাওয়া, মাথা ব্যাথা, পেটে ব্যাথা, অবসাদ ইত্যাদি।
আমাদের দেশে নারীরা সাধারণত পুরুষের তুলনায় একটু চাপা স্বভাবের হয়ে থাকে। মানসিক ও শারীরিক সমস্যায় পুরুষেরা যেখানে নির্দ্বিধায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় সেখানে নারীরা সেটিকে লুকিয়ে রাখে,এবং কোন রকম চিকিৎসা ছাড়া নিজ থেকে সেরে যাবার অপেক্ষা করেন । মহামারী কালীন সময়েও এ কারণে মায়েদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরও বেশী পরিমাণে বেড়েছে। তাদের যেমন নিজেদের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা নিয়ে দুশ্চিন্তা কাজ করছে তেমনি সন্তান ও পরিবারের সুরক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা যেন উভয় সংকটের মাঝে পড়েছে।
তাছাড়া যে সব মায়েদের সদ্য সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে তাদের মাঝে মাতৃত্ব কালীন অভিজ্ঞতা কম থাকায় বিভিন্ন অলীক কল্পনা এবং বাস্তব জীবনের সমস্যা সব মিলিয়ে এক ধরণের ঘোর কাজ করছে যা তাদের মাঝে দুশ্চিন্তাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া চাকুরীজীবী মায়েরা ঘরে থেকে বাড়ির সব গৃহস্থালির কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে সব কিছুর সাথে তাল মিলিয়ে উঠতে পারছেনা, সামাঞ্জস্য বিধান করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এতে তাদের মানসিক চাপ আরও বাড়ছে। করোনা কালে এই অতিরিক্ত মানসিক চাপ মায়েদের সাথে সাথে তাদের সন্তানদেরকেও প্রভাবিত করছে।
যেহেতু একজন মা শুধু নিজেকে নিয়েই নন, বরং পরিবার, সন্তান এবং স্বামীর সমস্ত ভালো মন্দ নিয়ে ভাবেন। তাই করোনা কালে মহামারীর সংক্রমণের পাশাপাশি সৃষ্টি হওয়া সামাজিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত সব ধরণের জটিলতা মায়েদের দুশ্চিন্তার কারণ যা তাদের অন্যান্যদের তুলনায় অধিক মানসিক পীড়ার সম্মুখীন করছে। তাই পরিবারের অন্যান্যদের উচিৎ নিজ উদ্যোগে তাদের মানসিক সমস্যাগুলির প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া। সর্বোপরি মায়েদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া এবং সুস্থ রাখা।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে