গবেষণায় দেখা গেছে যে, বেশ কিছু মজাদার এবং বিস্ময়কর পদ্ধতি রয়েছে যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করবে।
নিচে এমন কিছু ক্রিয়া কৌশল উল্লেখ করা হল যেগুলো খুব সহজ এবং আনন্দদায়ক উপায়ে মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখবে।
১) গুণ গুণ করে গান করাঃ বিগত বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, মনের আনন্দে গুণ গুণ করে গান করলে এবং বিভিন্ন সুরেলা যন্ত্র বাজালে মন ও মস্তিষ্কের উপর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরণের মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী দুশ্চিন্তা এবিং বিষণ্ণতা থেকে আমাদের মনোযোগ ইতিবাচক দিকে স্থানান্তরিত হয়। সম্প্রতি হওয়া কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের গান গাইবার পুরনো অভ্যাস রয়েছে তাদের মানসিক সুস্থতার হার যারা এই অভ্যাসের সাথে সম্পৃক্ত নন বা স্বল্প মাত্রায় সম্পৃক্ত তাদের তুলনায় বেশী। তাদের মাঝে একাকীত্বের হার কম এবং তারা তাদের বয়সের সাথে জীবনটাকে আরও বেশী উপভোগ করতে শেখেন।
২) স্টিম বাথঃ কিছুটা অন্যরকম হলেও সত্যি যে, সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, স্টিম বাথ নেওয়া এবং মানসিক বিভিন্ন দুর্ভাবনা মুক্ত থাকার সাথে একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। কিভাবে এটি হয়? দেখা গেছে মানসিক সুস্থতার জন্য গোসলের পানির উষ্ণতা একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলে। এটি আমাদের কার্ডিওভাসকিউলার ক্রিয়া উত্তম ভাবে পরিচালনায় সহায়তা করে, ঘুম ভালো হয়, দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ কমায়, এবং রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। তবে এক্ষেত্রে উত্তাপ নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরী। সঠিক তাপমাত্রা ব্যতিরেকে অত্যধিক তাপ বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
৩) তাই-চি অনুশীলনঃ তাই-চি হল একটি চাইনিজ ধীর গতির ধ্যান এবং আত্মরক্ষার অনুশীলন। এ ধরণের অনুশীলন আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা, সময়ানুবর্তিতা, এবং একসাথে বিভিন্ন দিক সামলানোর মতো মানসিক স্থিরতা প্রদান করে। এই অনুশীলনটি অন্যান্য পরিচিত অনুশীলন থেকে মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যধিক ফলপ্রসূ এবং সাম্প্রতিক সময়ে মানসিক সুস্থতা রক্ষায় এর চর্চা বহুলাংশে বেড়েছে।
৪) বয়স বৃদ্ধির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখাঃ বয়স বৃদ্ধি এবং আমাদের শারীরিক পরিবর্তনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার প্রতি নেতিবাচক অনুভূতি আমাদের স্মরণ শক্তি এবং স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা বয়স বৃদ্ধি এবং আমাদের শারীরিক পরিবর্তনকে ইতিবাচক ভাবে গ্রহণ করতে পারেন এবং মেনে নিতে পারেন তাদের স্মরণ শক্তি অন্যদের তুলনায় ভালো থাকে। তারা মানসিক ভাবে অন্যদের থেকে অনেক দৃঢ় থাকতে পারেন এবং শারীরিক অনুস্থতাকেও অন্যদের তুলনায় দ্রুত হার মানাতে পারেন। তারা তাদের জীবনটাকে অন্যদের তুলনায় বেশী উপভোগ করতে পারেন এবং তাদের মানসিক অবস্থা অন্যদের তুলনায় ও ভালো থাকে।
৫) অনুপ্রেরণা নিয়ে বাঁচুনঃ সব শেষে, বেঁচে থাকার একটি অনুপ্রেরণা লালন করুন। নিজেকে নিয়ে খুশী থাকুন। সবাইকে ভালো রাখার প্রয়াসের সাথে সাথে নিজেদের সুখী করার সর্বোত্তম প্রয়াস করুন। নিজের গুণ গুলিকে কাজে লাগান। প্রতিভা গুলির বিকাশ ঘটানোর প্রচেষ্টা করুন। নিজের সখের মূল্য দিন এবং আরও দীর্ঘ জীবন উপভোগ করুন। মনে মনে যখন আপনি ভাববেন যে, আপনার জীবন নিরর্থক নয় বরং সেটি অনেক মূল্যবান এবং আপনার বাঁচার অর্থ জীবনকে উপভোগ করা, তখন আপনি আরও খুশী থাকবেন, আপনার মানসিক স্বাস্থ্য আরও ভালো থাকবে।
মূল কথা, মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিজের জীবনকে উপভোগ করতে শিখুন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতিকূলতা আসবে, কারণ জীবন কখনোই এক রকম ভাবে যাপিত হয়না। কিন্তু সর্বপরি আপনাকে সব কিছুর প্রতি ইতিবাচক থাকতে হবে। সব পর্যায়ে আনন্দ খুঁজে নিতে হবে। তাহলে মানসিক ভাবে সুস্থ থাকা যাবে এবং সেটিও হবে আনন্দের সাথে।
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
সূত্র: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/changepower/202102/10-odd-and-fun-activities-keep-your-brain-healthy
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে
https://youtu.be/WEgGpIiV6V8