১২ মাসই পাওয়া যায় কলা। ভীষণ উপকারী ফল এই কলা। ডাক্তার ও পুষ্টিবিদরা বলেন, প্রতিদিন অন্তত একটি হলেও কলা খাওয়া উচিত যে কোনো সুস্থ মানুষের। দিনের শুরুতে একটি কলা হতে পারে সারা দিনের বন্ধু। কিন্তু কেন? কলায় থাকে তিনটি প্রাকৃতিক চিনি সুক্রোজ, ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ, যা শরীরকে জোগান দেয় তাৎক্ষণিক শক্তি।
কলায় থাকে ট্রিপটোফ্যান নামক প্রোটিন, যা শরীরে গিয়ে সেরোটোনিনে রূপান্তরিত হয়। সেরোটোনিন মনকে রিলাক্স করে, মুড ভালো হয়ে উঠতে সহায়তা করে। এতে থাকা ভিটামিন ‘বি’ স্নায়ু সচল করে মানসিক চাপ কমিয়ে কর্মক্ষম করে তোলে।
দীর্ঘ কর্মদিবসে বা পরীক্ষার সময় কলা হতে পারে অত্যন্ত উপকারী খাদ্য। কলা পটাশিয়ামের অত্যন্ত চমৎকার একটি উৎস।
একটি মাঝারি আকৃতির কলায় পটাশিয়াম থাকে প্রায় ৪০০ মিলিগ্রাম। এ উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম ও স্বল্পমাত্রার সোডিয়াম ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে, হার্ট অ্যাটাক ও হঠাৎ স্ট্রোকের প্রবণতা প্রতিরোধ করে। মানসিক অবসাদ থাকলে রক্তে দ্রুত পটাশিয়াম লেভেল হ্রাস পায়।
কলা পটাশিয়ামের মাত্রা ড্রাগ ছাড়া স্বাভাবিক রেখে অবসাদ কমাতে সহায়তা করে। পটাশিয়াম মানব-শরীরের হার্টবিট ঠিক রাখে। অক্সিজেন মস্তিষ্কে নিয়মিত পৌঁছে দেয়, শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে। কলায় রয়েছে প্রোটিয়েজ ইনহিবিটর, যা পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া (হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি) নির্মূলে সহায়তা করে। এই ব্যাকটেরিয়া পাকস্থলীর আলসারের প্রাথমিক কারণ। কলা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড। বুক, গলা জ্বালা করলে কলা খাওয়া যেতে পারে, নিরাময় হবে।
কলা পাকস্থলীর অম্লতা কমাতে সাহায্য করে। কলায় বিদ্যমান বি-৬, বি-১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে। সুতরাং ধূমপান ছেড়ে দেয়ার জন্য কলার জুড়ি নেই।
কলায় থাকে প্রচুর আয়রন। রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে কলা সাহায্য করে, ফলে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া দূর হয়। কলার উচ্চমাত্রার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই পেট পরিস্কার রাখতে কলা জাদুর মতো কাজ করে।