বন্ধুত্বপূর্ণ যুগলবন্দী বৈবাহিক সম্পর্ককে সুন্দর ও দৃঢ় করে

বন্ধুত্বপূর্ণ যুগলবন্দী বৈবাহিক সম্পর্ককে সুন্দর ও দৃঢ় করে

বয়স যেমনই হোক, বৈবাহিক সম্পর্কে দুজন সঙ্গীর মধ্যে যদি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব এবং হাসি ঠাট্টার সম্পর্ক বজায় থাকে তাহলে সম্পর্ক আরও সহজ ও দৃঢ় হয় এবং সম্পর্কের উন্নতি সাধিত হয়।

সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, খুনসুটি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দুজন সঙ্গীর মধ্যে সামাজিক মেলামেশা এবং অন্তরঙ্গতা আরও বৃদ্ধি করে। খুনসুটি বা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বলতে প্রকৃতপক্ষে বোঝায় একে অপরের সাথে ঠিক বন্ধুর মতো আচরণ করা।

অধিকাংশ সময় দেখা যায় স্বামী স্ত্রীর মাঝে বয়সের বেশ পার্থক্য থাকার কারণে দুজনার মাঝে এমন মনোভাব কাজ করে যে তারা ভাবে তারা আসলে বন্ধু নয় বরং একজন বয়সে বড় যিনি গুরুজন এবং অপর জন বয়সে ছোট যে তার কথা মেনে চলবে। এমন হলে কখনোই দুজন মানুষ একে অপরের সাথে সহজ ভাবে মিশতে পারে না।

কিন্তু তারা যদি একে অপরকে ছোট বা বড় না ভেবে বরং একে অপরের প্রতি সমমনা সম্পন্ন দৃষ্টি ভঙ্গী রাখে এবং কথায় ও আচার-আচরণে ঠিক বন্ধুর মতো থেকে সহজ ভাবে সব কিছু একে অপরের সাথে শেয়ার করে তাহলে সম্পর্ক অনেক ইতিবাচক শক্তির আধার হয়ে ওঠে।

বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সাথে মজার অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করতে পারে। কিছুটা বোকা আচরণ কিংবা হাসি ঠাট্টা করতে পারে।

বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহজ সম্পর্কের মূল উপকারিতা হল এ ধরণের সম্পর্কে মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়া অনেক উন্নত হয়। আর বৈবাহিক বা অন্তরঙ্গ সম্পর্কে একে অপরের মনোভাব, ভালোলাগা মন্দ লাগা, আচার আচরণ ভালো ভাবে বুঝতে পারা তথা মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়া ভালো থাকা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়।

যে সব সম্পর্কে এ ধরণের বোঝাপড়া থাকে তারা সব ধরণের প্রতিকূল অবস্থা কাটিয়ে সম্পর্ককে এক নতুন মাত্রা প্রদান করতে সক্ষম হয়। কিন্তু যাদের মাঝে মানসিক যোগাযোগ থাকে না, যারা  নিজেদের মাঝে সম্পর্কের দেয়াল সৃষ্টি করে রাখা তারা কখনোই একে অপরের পরিপুরক হয়ে উঠতে পারে না।

তারা একে অপরের মনকে বুঝতে না পারায় প্রতিকূল অবস্থায় একে অপরের শক্তি হয়ে উঠতে ব্যর্থ হয়। তাদের মধ্যে ভরসা ও আস্থার সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে না। ফলে সম্পর্কে না চাইতেও অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং বোঝাপড়া না থাকায় সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

যে কোন সম্পর্কে খোলামেলা মনোভাব ও সাবলীলতা না থাকলে সে সম্পর্ক কখনোই গভীর হয় না। বন্ধুদের মাঝে অহংকার বোধের কোন স্থান নেই বলেই সে সম্পর্ক এতো প্রাঞ্জল এবং সুন্দর হয়।

দাম্পত্য জীবনেও যদি দুজন মানুষের মাঝে এই সহজ সরল মনভাব বজায় থাকে তাহলে সেই সম্পর্কও মধুর এবং নেতিবাচক প্রভাব মুক্ত থাকে। তাই মনস্তত্ত্ববিদ গণের মতে, বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহজ সম্পর্কই বৈবাহিক বা অন্তরঙ্গ সম্পর্কের ভিত্তি হওয়া উচিৎ। এতে সম্পর্ক আরও দৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী হয়।

তাই বলা যায় সম্পর্কে বয়সের পার্থক্য আছে বলে এক জনকে ঠিক বড়দের মতো এবং অপর জনকে ছোটদের মতো মনোভাব নিয়ে থাকতে হবে এমনটা কখনোই হওয়া উচিৎ নয়।

বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অর্থ একসাথে আনন্দে থাকা, মজা করা এবং মনস্তাত্ত্বিক বোঝাপড়া আরও সমুন্নত করা। এতে ইতিবাচক আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং নেতিবাচক মনোভাব ও ভুল বোঝাবুঝি কম হয়। ফলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় ও সুন্দর হয়।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/fulfillment-any-age/202107/4-ways-being-silly-can-improve-your-relationship

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleপরিচিতদের কোভিড-টিকা ভীতি দূর করতে আপনার করণীয়
Next articleসন্তানকে শেখাতে আগে নিজের রাগের প্রতিকার করুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here