২০০৮ সালে অভিষেকের পর থেকে টানা এক যুগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। নামের পাশে আছে ৭০টি আন্তর্জাতিক শতক। কিন্তু ক্যারিয়োরের সর্বশেষ দুই বছরে একবারও ছুঁতে পারেননি তিনের ঘর। ক্যারিয়ারের ভাটার সময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সফল এ ক্রিকেটার।
কেবল শতক কিংবা অতিমানবীয় পারফরম্যান্স বিবেচনা নয়, কোহলির মানসিক দৃঢ়তা প্রমাণ পায় দলকে জেতানো ম্যাচে এই ক্রিকেটারের অসাধারণ পরিসংখ্যান দিয়েও। তবে ক্রিকেটার কোহলিও দিন শেষে মানুষ। মানুষ হিসেবে মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকির মুখে পড়তে হয়েছিল তাকেও। অকপটে সেটা স্বীকারও করেছেন। দিয়েছেন অন্যদেরকে পরামর্শ।
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কোহলি জানিয়েছেন, এমন সময়ও পার করেছেন, যখন চারপাশে পরিচিত মানুষ থাকা সত্ত্বেও একাকীত্ব পেয়ে বসেছিলো। অর্থাৎ চারপাশে হাজার মানুষ থাকলে নিজেকে একা লাগতো বিরাট কোহলির।
সাক্ষাৎকারে কোহলি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার এই অভিজ্ঞতা। যখন আমি এমন একটি লোকভর্তি ঘরে আছি, যে লোকগুলো আমাকে সমর্থন করে এবং ভালোবাসে তখনো আমি একাকি বোধ করছি। কোহলি বলেন, আমি নিশ্চিত যে, এই অনুভূতি আরো অনেক মানুষেরই হয়েছে।
আর তাই সব অ্যাথলেটদের কেবল নিজের পারফরম্যান্স নয় নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে বলেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের এই তারকা।
বিরাট আরো বলেন, একজন অ্যাথলেটের ক্ষেত্রে, খেলোয়াড় হিসেবে খেলাটি তার সেরাটা বের করে আনতে সক্ষম, কিন্তু একই সঙ্গে ক্রমাগত যে পরিমাণ চাপের মধ্যে থাকতে হয়, তা তার মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা যত বেশি দৃঢ় থাকার চেষ্টা করি না কেন, এটা আমাদের আরো ধ্বংস করে দিতে পারে।
সুতরাং নিজের জন্য সময় বের করতে হবে এবং নিজের ভেতরের মূল সত্ত্বার সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে হবে। যদি সেই সংযোগ হারিয়ে যায়, তাহলে নিজের চারপাশের বাকিসব ভেঙে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
উচ্চাকাঙ্ক্ষী অ্যাথলেটের জন্য আমার পরামর্শ হবে, হ্যাঁ, শারীরিক সুস্থতা এবং সতেজ থাকার ওপর মনোনিবেশ করা একজন ভালো অ্যাথলেট হওয়ার মূল চাবিকাঠি। কিন্তু একই সময়ে ভেতরের সত্ত্বার সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে যোগাযোগ রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
শুধু পরামর্শ দিয়েই থেমে থাকেননি নিজেও সেটা পালন করছেন ঘটা করে। সময় দিচ্ছেন নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে। গত শনিবার দেখা যায় মুম্বাইয়ের রাস্তায় স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন বিরাট কোহলি। সঙ্গে তার স্ত্রী আনুষ্কা শর্মা।
জানা যায়, বিরাট এবং অনুষ্কা একটি প্রোজেক্টের শুটিং করতে গিয়েছিলেন। মাধ আইল্যান্ডে বিজ্ঞাপনের শুটিং শেষ করে বাড়ি ফেরার পথেই হঠাৎ স্কুটিতে সওয়ার হন তারকা দম্পতি। মুম্বাইয়ের বৃষ্টির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্যই যুগলে বেরিয়ে পড়েন।
তবে কালো হেলমেটে মুখ ঢেকে রাখার ফলে প্রথমটায় তাদের চিনতে পারেননি স্থানীয় মানুষ। সাবেক ভারত অধিনায়কের পরনে ছিল সবুজ টি-শার্ট এবং কালো প্যান্ট। আপাদমস্তক কালো পোশাকে সেজেছিলেন অনুষ্কা
স্কুটি সফরের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ভাইরাল হয়ে যায়। সামনেই এশিয়া কাপ। স্কোয়াডে রয়েছেন বিরাট। তাই ধারণা করা হচ্ছে ছুটি কাটিয়ে, বিশ্রাম নিয়ে তরতাজা হওয়া চেষ্টা করছেন বিরাট কোহলি। সেই সাথে নিজেকে প্রস্তুত করছেন মানসিকভাবেও।
/এসএস/মনেরখবর/