সন্তানদের লালন পালন এবং তাদের প্রতি সার্বিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সময়ই দেখা যায় অভিভাবকেরা হাঁপিয়ে ওঠেন। এ ধরণের মানসিক চাপ এড়াতে মনস্তত্ত্ববিদগণ বেশ সহজ কিছু টিপস দিয়েছেন।
অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভবত পৃথিবীর সব থেকে বড় একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। এটি একদিকে যেমন সব থেকে মহান এবং উৎকৃষ্ট তেমনি মাঝে মধ্যে বেশ হতাশাজনকও বটে। কারণ, এই সমস্ত কাজগুলি যাদের ঘিরে পরিচালিত হয় তারা বেশ অভিমানী, আবেগপ্রবণ হয়।
হ্যাঁ সঠিক, আমরা শিশুদের কথা বলছি। এই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করলে একটি বিষয়ই আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে আর সেটি হলো পিতামাতার ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতা যা বিভিন্ন সময় তাদের অবসন্ন এবং পরিশ্রান্ত করে তোলে।
দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এমন কোন আশ্চর্যজনক ক্ষমতা কারও কাছেই নেই যার মাধ্যমে আপনার অবুঝ শিশুকে হঠাৎ করে সব কিছু বুঝিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আপনার চাপ কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।
তবে বেশ কিছু কৌশল আছে যেগুলির মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানের লালন পালন অনেকটা সহজভাবে পরিচালনা করতে পারবেন এবং আপনার সন্তান আরও গোছালো, আরও দক্ষ এবং সময়নিষ্ঠ আচরণ করবে।
শিশুর গঠনমূলক আচরণের প্রতি যেমন উৎসাহিত করার প্রয়োজন আছে তেমনি পিতামাতাকেও সেই রকম কৌশলের সাথে পরিচিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সন্তানকে এসব নিয়ে কোন ভাবেই চাপ প্রয়োগ বা বাধ্য করা যাবেনা। তাদেরকে মানসিকভাবে আপনি যেভাবে চাইছেন সেভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। যেমন- ধরুন, আপনার শিশু যদি সময়ের কাজ সময়ে করতে না চায় তাহলে আপনাকে এক রকম কৌশল অবলম্বন করতে হবে। আবার, আপনার শিশুর যদি কথা না শোনার মানসিকতা থাকে তাহলে আরেক রকম কৌশল অবলম্বন করতে হবে। এভাবে তার প্রতিটি অনাগ্রহ এবং অতি সংবেদনশীল মনোভাবকে কৌশলের মাধ্যমে একটি নিয়মের মাঝে নিয়ে আসার প্রয়াস করতে হবে। এই কৌশলগুলি নির্ধারণের পর সেই অনুসারে কাজ করলে আশা করা যায় শিশুর অসহযোগিতার কারণে আপনার যে মানসিক চাপ সেটি অবশ্যই নিরসন হবে।
প্রতিটি শিশুরই তাদের নিজস্ব জগত থাকে। তাদের সেই জগতে থাকেনা কোন নিয়মের বালাই এবং বিধিনিষেধ। তাই তাদেরকে তাদের মতো করে সবকিছু বোঝাতে হয়। তাদেরকে কোন রকম উপদেশ না দিয়ে যদি তাদের সামনে উৎকৃষ্ট উদাহরণ রাখা যায়; হতে পারে সেটি কোন আকর্ষণীয় গল্প কিংবা নিজেদের আচরণ, তাহলে সহজেই শিশুরা সেটি গ্রহণ করে এবং আপনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে আচরণ করবে। তাই উদ্বিগ্ন না অধৈর্য না হয়ে সব কিছুকে নিজের মতো করে গড়ে নিতে যা যা করতে হবে সেগুলি গঠনমূলক উপায়ে করুন। তাহলে শিশু অবশ্যই আপনার মনের মতো করেই সব কিছু করবে। আর সব থেকে বড় বিষয় হলো তাদের অনীহা। তাদের অগ্রাহ্য আচরণ সব সময় অত্যন্ত কঠিন ভাবে না নিয়ে তাদের শিশুসুলভ আচরণগুলি মাঝে মাঝে উপভোগ করুন। তাহলে অতি মাত্রায় অধৈর্য হবার প্রবণতা কমবে।
প্রত্যেক পিতামাতা একটি মহান দায়িত্ব পালন করেন যা অত্যন্ত শ্রদ্ধা এবং কৃতিত্বপূর্ণ একটি কাজ। উপরের কৌশলগুলি অনুসরণ করলে সন্তান লালন পালন কিছুটা হলেও সহজ হবে বলে প্রত্যাশা করা যায়।
সাইকোলজিটুডে থেকে অনুবাদ করেছেনঃ প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে