করোনাভাইরাসে শিশুদের উপসর্গ কম হলেও ঝুঁকি কম নয়:গবেষণা

0
14
শিশুদের মাধ্যমে নীরবে ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস

কোভিড-১৯ এখন বৈশ্বিক মহামারী, যা থেকে কোনো বয়সের মানুষই নিরাপদ নয়। নতুন করোনাভাইরাসের প্রকোপের প্রথম দিকে অনেকেই ধারণা করেছিলেন এই ভাইরাসে বৃদ্ধরাই শুধু মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছেন, তবে এখন পরিস্থিতি ভিন্ন।
করোনাভাইরাস সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির ‘রেস্পিরাটরি ড্রপলেট’ বা শ্বাসতন্ত্র থেকে নিঃসৃত লালাকণার মাধ্যমে ছড়ায়। ওই আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে কোভিড-১৯’য়ের উপসর্গ থাকুক আর না থাকুক, তার মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
এপর্যন্ত জানা তথ্য মতে, এই রোগের উপসর্গ হিসেবে সামান্য সর্দি-কাশি, জ্বর, শুকনা কাশি, শ্বাসকষ্ট, অন্ত্রের বিভিন্ন জটিলতা ইত্যাদি দেখা দেয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই ঝুঁকির বাইরে না থাকলেও এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা কম।
আবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “আক্রান্ত হলেও কোভিড-১৯’য়ের সাধারণ উপসর্গ যেমন- জ্বর, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মাঝে দেখা যায় কম।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)’ নতুন এই গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮২জন ‘কোভিড-১৯’ রোগীকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়, যার মধ্যে ২,৫৭২ জনের বয়স ১৮ বছরের কম। রোগীদের উপসর্গ, রোগের তীব্রতা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্যাদি পর্যালোচনা করে দেখা যায় শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সাধারণ উপসর্গগুলো দেখা গেছে, তবে সবার মধ্যে নয়।
তবে পরিণত, বয়স্ক সকল রোগীর একই ধরনের সাধারণ উপসর্গ ছিল। অর্থাৎ, সকল কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত শিশুর মাঝে সাধারণ উপসর্গ দেখা যায় না।
আরও দেখা যায়, যেসব শিশুর ‘কোভিড-১৯’ পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের মধ্যকার মাত্র ৫ শতাংশ শিশুর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন ছিল। আবার শিশুদের মৃত্যুর হারও অনেক কম।
এক বছর বা তার কম বয়সি শিশুরদের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা অন্য সবার থেকেই বেশি। তবে যত তাদের বয়স বাড়ে, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ‘অ্যান্টিবডি’ তৈরি হয়।
করোনাভাইরাসের প্রাথমিক দিনগুলোতে চীনের এক পুরানো গবেষণার প্রতিবেদনের সঙ্গে এই তথ্যগুলো মিলে যায়। চীনের গবেষণা বলে, ১৮ বছরের কম বয়সিদের কোভিড-১৯’য়ের তীব্রতা কম পরিণত বয়স্কদের তুলনায়, তাদের উপসর্গও ভিন্ন হতে পারে।
অভিভাবকদের করণীয়
এই সময়ে সন্তানের সুস্থতা নিয়ে চিন্তিত থাকাটাই স্বাভাবিক। শিশুদের করোনাভাইরাস আক্রমণ করলেও তার সংখ্যা তুলনামূলক কম। আর আক্রান্ত হলেও তার তীব্রতা থাকে কম।
তারপরও শিশুদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত পরিষ্কার করা এবং ঘরে থাকার শিক্ষা দিতে হবে।
শিশুদের মাঝে উপসর্গ দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে ঘরেই নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে এবং ভাইরাস থাকতে পারে এমন পরিবেশ থেকে দূরে রাখতে হবে। ঘরের অন্যান্য সদ্যসদের সঙ্গে তার মেলামেশা কমাতে হবে। তাদের মাস্ক পরাতে হবে, তরল এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে।
গলা ব্যথা, পেটের গোলমাল, মাথাব্যথা, পানিশূন্যতা ইত্যাদি উপসর্গ তিন দিনের বেশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হাসপাতালে সরাসরি না গিয়ে আগে ফোনে যোগাযোগ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিন।

Previous articleকোভিড ১৯: মানসিক চাপে ভুগছেন সিকিউরিটি গার্ড পেশায় কর্মরতরা
Next articleসন্তানের স্মরণশক্তি কম হতে পারে পরোক্ষ ধূমপান থেকে:গবেষণা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here