বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নুয়ে পড়ে আমাদের কর্মতৎপরতাও। কমে আসে নতুন কিছু শুরু করার ইচ্ছা। বুড়োদের আড্ডায় প্রায়ই বলা হয়, মনেরও তো বয়স বাড়ছে!
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, মনের বয়স বাড়বে না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিউজিল্যান্ডের ব্ল্যাককারেন্ট আমাদের মানসিকভাবে যুবক ও কর্মতৎপর রাখতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে পারকিনসন ও বিষণ্নতা রোগের ক্ষেত্রেও এটি রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
নিউজিল্যান্ডের ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যান্ট অ্যান্ড ফুড রিসার্চের বিশেষজ্ঞরা গবেষণায় এমন তথ্য পেয়েছেন। এতে সহযোগিতা করেছে যুক্তরাজ্যের নর্থঅ্যামব্রিয়া ইউনিভার্সিটি। তাদের মতে, ব্ল্যাককারেন্ট মানসিক কার্যক্রম, মনোযোগ, সুনির্দিষ্টতা ও ভাবাবেগের উপর প্রভাব ফেলে।
ব্ল্যাককারেন্টের রস মোনোয়েমিন অক্সিডেস’র কার্যকারিতা কমায়, যা সেরোটোনিন (মস্তিষ্কের স্নায়ুকে সংযোগকারী একটি নিউরো ট্রান্সমিটার) এবং ডোপামিন (হরমোন এবং ক্যাটেকোলামাইন ও ফেনাথ্যালামিন পরিবারের একটি নিউরো ট্রান্সমিটার) নিয়ন্ত্রণ করে।
এর সঙ্গে উদ্বিগ্নতা, বিষণ্নতা, ভাবাবেগ সম্পর্কিত জটিলতা, মানসিক চাপ ও পারকিনসন রোগের সম্পর্ক রয়েছে। ডা. আর্জান স্কেপেন্স এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। তিনিই প্রথম তুলে ধরেন, খাবারের সঙ্গেও মনের এমন প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে।
অতীতের গবেষণা অনুযায়ী, মোনোয়েমিন অক্সিডেস’র ক্ষেত্রে বেরিফ্রুট খাওয়ার পরামর্শ দিতেন চিকিৎসকরা। কিন্তু নাইজেরিয়ার ব্ল্যাককারেন্ট কেবল মোনোয়েমিন অক্সিডেস’র কার্যকারিতাই কমায় না, বরং মস্তিষ্কের সক্রিয়তাও বাড়ায়।
গবেষকদের মতে, খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাবা দরকার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য কোন খাবারগুলো বেশি ভালো। নাইজেরিয়ার ব্ল্যাককারেন্ট বাজারজাত করলে প্রতিষ্ঠান যেমন লাভবান হবে, একইভাবে জনসাধারণের মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে। গবেষণা পরবর্তী পরীক্ষায়ও এমন তথ্য উঠে এসেছে। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৩৬ জন্য অংশগ্রহণকারী রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে, মোনোয়েমিন অক্সিডেস এনজায়েম (এমএও) উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।