শিশুকে বাগান করায় আগ্রহী করে তোলার উপকারিতা

0
120

খুব কম মানুষই আছে যারা কখনো বাগান করেন নি। আমরা সবাই কম-বেশি বাড়ির পাশে অথবা বাসার ছাদে বাগান করেছি। আর বাগান করা নিয়ে স্কুলে রচনা লিখেনি এমন মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে না হয়তো! ছোট বেলায় বাগান করা আমাদের অনেকেরই প্রিয় শখ ছিলো, অনেকের বড় বেলায়ও আছে। আমাদের শৈশবের কথা একবার ভাবুন তো, আমরা কতটা যত্ন নিতাম আমাদের বাগানের, বাগানের প্রতিটা গাছ নিয়ে আমরা কতটা ভাবতাম? কতটা চিন্তিত থাকতাম? বাগানের প্রতিটা গাছকে আমরা কতটা ভালোবাসতাম। আমাদের শৈশবের একটা বড় অংশ জুড়েই বাগান করার প্রভাব ছিলো। একটু ভাবলে দেখবেন আমাদের মধ্যে অনেক গুণাবলী এই বাগান করার মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে। আপনার সন্তানকে বাগান করার প্রতি আগ্রহী করে তুলে তার ভেতরেও কিছু গুণাবলী গড়ে তুলতে পারেন।
আসুন শিশুর জন্য বাগান করার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই-
শারীরিক কার্যক্ষমতা বাড়ায়
বাগান করার মাধ্যমে শিশুরা বাগানের আনুসঙ্গিক কাজ করতে করতে তাদের শারীরিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গাছ রোপণ করা, আগাছা পরিষ্কার করা, গাছের জন্য পানি বহন করে নিয়ে আসা ইত্যাদির মাধ্যমে শিশুর শারীরিক কার্যক্ষমতা বাড়ে। একই সাথে শারীরিক অবকাঠামোর উন্নয়নও হয়। শিশুর শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের পেশীও সমৃদ্ধ হয়।
বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী করে
বাগানের গাছ কিভাবে বেড়ে উঠে? সূর্যের আলো ও পানি গাছের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে গাছ নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করে থাকে; এমন অনেক বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় সে আগ্রহী হবে, জানতে পারবে নতুন কিছু। বাগানের গাছগুলোর ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানিক নাম ও বিভিন্ন গাছের জীবণচক্র ইত্যাদি জানার জন্য তার আগ্রহ জন্মাবে।
ধৈর্যশীল করে তোলে
ভাবুনতো, আপনার লাগানো গোলাপ গাছটায় কয়দিন পর ফুল এসেছিলো? পেয়ারা গাছের ফলের জন্য কতদিন ধৈর্য ধরেছিলেন? গাছে ফুল, ফল আসার পর কতটা খুশি হয়েছিলেন? ছোটবেলার এই চর্চাগুলোই কিন্তু আমাদেরকে ধৈর্যশীল হতে সাহায্য করেছিলো। বাগান করার মাধ্যমে একই চর্চা ও গুণাবলী আপনার সন্তানের মাঝেও গড়ে উঠবে।
পরিবেশের যত্ন নিতে শেখে
বাগান করার মাধ্যমে শিশুরা যত্নশীল হয়ে উঠে। বাগানের গাছের সঠিক পরিচর্যা, গাছের যত্ন নেয়া, সময় মতো পানি দেয়া, বাগানের আগাছা পরিষ্কার করা ইত্যাদির চর্চা তাকে বাগানের পাশাপাশি নিজের প্রতি ও অন্যান্য বিষয়ের প্রতিও যত্নশীল করে তোলে। এই চর্চার মাধ্যমে শিশুর মাঝে গুছিয়ে চলার মতো গুণাবলীও গড়ে উঠে।

মানসিক স্বাস্থ্যের সব খবর নিয়ে ‘মনের খবর’ জানুয়ারি সংখ্যা এখন সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে। আজই সংগ্রহ করে নিন আপনার কপিটি।

পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল হয়
শিশুর মাঝে ছোট থেকেই প্রকৃতিগতভাবে প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয়। বাগান করার মাধ্যমে প্রকৃতি প্রেম আরো দৃঢ় হয় ও শিশু প্রকৃতির প্রতি আরো দায়িত্বশীল হয়ে উঠে। গাছ পরিবেশ দূষণরোধে ভূমিকা রাখে, গাছ থেকে আমরা অক্সিজেন পাই; শিশুকে এমন ধারণা দিলে সে পরিবেশের উপর তার প্রভাব বুঝতে পারে ও দায়িত্বশীল হয়।
পরিকল্পনা করার ক্ষমতা জন্মে
রোপণের কত দিন পর পেয়ারা গাছে ফল হয়? গোলাপ গাছে ফুল পেতে হলে কতদিন আগে লাগাতে হবে? কত সময় পর গাছে পানি দিতে হবে? কখন গাছের আগাছা ও মরা ডালপালা পরিষ্কার করতে হবে? তার বাগানের কোন পাশে নতুন ফুল গাছটা লাগাবে? এইসব নিয়ে পরিকল্পনা করার মাধ্যমে সে বাস্তব জীবনেও পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া শিখবে।
আমাদের সুন্দর শৈশবে যেমন বাগান করার একটা অবদান ছিলো, বাগান করার মাধ্যমে তেমনি আমাদের সন্তানদের শৈশবও সুন্দর ও শিক্ষণীয় হয়ে উঠুক।

Previous articleযথাযথ তদারকির অভাবই মাদকাসক্তের চিকিৎসার অন্তরায়
Next articleবিশেষ ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের তহবিল সংগ্রহে সিআরপি’র হাঁটা কর্মসূচি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here