যেভাবে হ্রাস পেতে পারে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা

0
56

সবারই জীবনে কম-বেশি দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থাকে। দুশ্চিন্তা প্রকট হলে শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ব্যাহত হতে পারে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও।

দুশ্চিন্তা ২ ধরনের। মৃদু ও তীব্র ধরনের। মৃদু ধরনের দুশ্চিন্তা সামলানোর ক্ষমতা সাধারণত মানুষের থাকে। তবে তীব্র দুশ্চিন্তা শরীরের জন্য হুমকীস্বরূপ। দুশ্চিন্তার কারণে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ঘুম না হওয়া, পেটের সমস্যা, বুক ধড়ফড় করাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের ফলে মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু জটিল রোগের উৎস হলো দুশ্চিন্তা। এজন্য যতটা সম্ভব দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে-

দুশ্চিন্তাকে প্রশ্রয় না দেয়া: জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, হতাশা ভর করতেই পারে। তবে এগুলোকে কখনই প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। মনে করতে হবে, এগুলো আপনার সচেতন প্রচেষ্টাতেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যেসব ব্যাপার নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন এবং কীভাবে দুশ্চিন্তা দূর হবে তার উপায়গুলো লিখে রাখুন। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে মানসিক চাপের কারণগুলো অনেকটা গোছানো হবে। তাতে সমাধান খুঁজে পাওয়াও সহজ হবে।

তাছাড়া এইসময় প্রতিদিনের কিছু কার্যক্রম বেশ উপকারে আসে। যেমন-

গান শোনা: মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পছন্দের গান শুনতে পারেন। প্রিয় শিল্পীর গান এইসময় ভালো লাগবে। গবেষকরা বলছেন, পছন্দের গান নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ করা যেতে পারে। এতে একঘেয়েমি দূর হয়।

বই পড়া: জগতের সেরা বন্ধু হলো বই। ভালো বই ‘মনের খাদ্যদাতা’। বই পড়লে উৎসাহ বাড়ে, মানসিক শক্তি ফিরে আসে। প্রতিদিন অন্তত অল্প সময়ের জন্য হলেও বই পড়া দরকার।

পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে: পুষ্টির অভাব হলে মানসিক চাপ বেশি করে আঁকড়ে ধরে। তাই এইসময় পুষ্টিকর খাবারের প্রতি গুরুত্ব দিন। ফাস্ট ফুড বাদ দিন। বেশি মসলাযুক্ত খাবার তখন না খাওয়াই ভালো। ফলমূল খান। পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

ব্যায়াম করা: মানসিক চাপ শিথিল করতে ব্যায়ামের জুড়ি নেই। ব্যায়াম করলে স্নায়ু সচল হয়। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় এবং হতাশা কমে যায়। নতুন কাজের প্রতি উদ্যোম বাড়ে। তাই দুশ্চিন্তায় ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রেহাই পেতে ব্যায়াম করুন।

পর্যাপ্ত ঘুমানো: মানসিক চাপে থাকলে অনেকসময় ঠিকমতো ঘুম হয় না। ফলে সারাদিন ঝিমুনি ভাব থাকে, ক্লান্ত লাগে, পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম জরুরী।

আলো, বাতাসে থাকা: শোবার ঘর যতটা সম্ভব খোলামেলা রাখতে হবে। আলো, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় কিছুক্ষণ বসতে পারেন। কিংবা অফিস শেষ করে পার্ক বা খোলামেলা জায়গায় হাঁটাহাটি করা ভালো।

সামাজিকতা বাড়ানো: দিনশেষে মানুষই আমাদের বন্ধু হয়। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। প্রিয় মানুষের কাছে গেলে, দু-চার কথা বললে এমনিতেই হালকা লাগে। তাই মন খারাপ থাকলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন, প্রতিবেশির সঙ্গে গল্প করুন, পছন্দের মানুষদের সঙ্গে কোথাও ঘুরতে যান। বন্ধু, পরিবার ও প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটান।

মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কখনও কখনও নিজের হাতে নাও থাকতে পারে। তখন অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখা ভালো, মানসিক চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে শারীরিক নানা ক্ষতি হতে পারে।

এআরআই

 

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪
“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

 

Previous articleবেঁচে থাকাটাই আনন্দের- Cast away
Next articleমনের ভিতর প্রচন্ড ভয় হয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here