মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটাতে দিনপঞ্জির ভূমিকা

0
79
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটাতে দিনপঞ্জির ভূমিকা

দিনপঞ্জি আপনার পৃথিবীকে দেখার ধারণাকেই বদলে দিতে পারে। আপনি হয়ত কারও পরামর্শে বা নিজ থেকেই দিনপঞ্জি লেখেন। কিন্তু কখনো একটু নিবিড়ভাবে ভেবে দেখেছেন কি আপনার মন-মানসিকতা এবং চিন্তা ভাবনার উপর এই দিনপঞ্জির কি ভূমিকা রয়েছে? আপনার মন কিভাবে এর দ্বারা প্রভাবিত হয়? আজ আমরা জানার চেষ্টা করব কিভাবে দিনপঞ্জি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে এবং কিভাবে এটি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

দিনপঞ্জি হল আপনার নিত্য দিনের কাজকর্ম, চিন্তা ভাবনা এবং অনুভূতির বিবরণী। দিনপঞ্জি আপনার মধ্যে থাকা ভাল এবং খারাপ গুণাবলীগুলো খুঁজে বের করার সহজ একটি উপায়। এটা শুধু আপনার মানসিকতার উপরেই প্রভাব ফেলে তা নয় বরং আপনার শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরেও এর প্রভাব রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিজের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা গুলো নিয়ে যদি দৈনিক ২০ মিনিট ও লেখা যায় তাহলে আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি চার মাসের মধ্যেই লক্ষণীয় মাত্রায় চোখে পড়বে।
অনেক সময় শুধু লিখে নয়, একজন ব্যক্তি বিভিন্নভাবে দিনপঞ্জি তৈরি করতে করতে পারেন। যেমন, তিনি বিভিন্ন ছবি এঁকে এবং স্কেচ করে দিনপঞ্জিতে নিজের মনের ভাব ফুটিয়ে তুলতে পারেন। এই দৃশ্যমান দিনপঞ্জি একজন মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের পেছনে তার বিভিন্ন চিন্তা ভাবনা এবং মানসিকতা যেমন প্রকাশ করে, তেমনি তার আচার ব্যবহারেও বিভিন্ন পরিবর্তন নিয়ে আসতে সাহায্য করে।

নিজের দিনপঞ্জি আপনি আপনার ইচ্ছে মত করে লিখতে বা বানাতে পারেন। এটি তৈরি করার কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। আপনি আপনার মনের ভাব ইচ্ছা মত সময় নিয়ে ইচ্ছা মত দিনে মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন। এখানে মুখ্য হল আপনার মনের ভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো। এখানে আপনি আপনার নিজের মুখোমুখি দাঁড়ান। দিনপঞ্জি ঠিক আপনার মনের আয়নার মত। আপনি আপনার নিজের ছায়া এর মাঝে দেখতে পাবেন। আপনার ব্যক্তিত্ব এর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠবে।

অনেকে একের অধিক দিনপঞ্জিও বানিয়ে থাকেন। আপনি এর একটিতে আপনার দৈনন্দিন কার্যাবলীর বর্ণনা লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন এবং অন্যটিতে বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে আপনার মানসিক স্থিতি ফুটিয়ে তুলতে পারেন। আবার কখনো আপনার মনের কথাগুলো কোন রেকর্ডারের মাধ্যমেও ধারণ করতে পারেন। এতে আপনার সময় বাঁচবে এবং মনের ভাব প্রকাশেও ভিন্নতা আসবে।

দিনপঞ্জিতে আপনার দৈনন্দিন মনস্তাত্বিক এবং শারীরিক ক্রিয়াকর্মের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করা যেমন জরুরী তেমনি মাঝে মধ্যে সেগুলোতে চোখ বুলিয়ে দেখাও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আপনি কখন কিভাবে দেখবেন এটি সম্পূর্ণই আপনার নিজস্ব বিষয়। যখন আপনি আপনার পুরনো দিন গুলো ফিরে দেখবেন আপনি আপনার বর্তমান মানসিক অবস্থার সাথে সেই সময়ের তুলনা করতে পারবেন এবং বুঝতে পারবেন আপনি কতোটা মানসিক পরিপক্বতা অর্জন করেছেন। হয়তো দেখা যাবে ভবিষ্যৎ নিয়ে অতীতে আপনার মানসিক উৎকণ্ঠার কারণ গুলো আজ একদমই ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।  অতীতের এই অভিজ্ঞতা আপনার ভবিষ্যৎ মানসিক অবস্থা বিকাশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এভাবে দিনপঞ্জি লেখার এই সুন্দর অভ্যাসটি আপনাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে আরও উন্নত স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে সাহায্য করবে।

 

 

Previous articleমাদকাসক্তির চিকিৎসায় কেন দীর্ঘসময় প্রয়োজন
Next articleমহামারীর এই চরম দুঃসময়েও আশায় বুক বাধুন নতুন স্পৃহায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here