মহামারীর এই চরম দুঃসময়েও আশায় বুক বাধুন নতুন স্পৃহায়

0
144
মহামারীর এই চরম দুঃসময়েও আশায় বুক বাধুন নতুন স্পৃহায়

করোনা আমাদের চার পাশের চেনা জগতটাকে এক নিমিষে বদলে দিয়েছে। চারদিকে কেবল অবসাদ আর মৃত্যু। এমন অবস্থায় নতুন দিনের আশা করা খুবই কঠিন। কিন্তু নতুন আশা বুক বাঁধতে পারলেই আমরা সবাই মিলে এই দুর্যোগ মোকাবেলায় একসাথে সফল হতে পারব।

অবস্থা অনুকুল থাকলে মানুষ ভাল ফলাফলের আশা করে। সব কিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকলে  সুন্দর একটি ভবিষ্যতের কল্পনা করা বেশ সহজ। কিন্তু বর্তমান অবস্থা যদি সুখকর না হয় তাহলে ফলাফল হয় ঠিক এর বিপরীত। এতে কোন সন্দেহই নেই যে গত কয়েক মাস ধরে পৃথিবী স্মরণকালের সেরা দুঃসময় পার করছে। করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু বরণ করেছে। এখন পর্যন্ত এর কোন কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এমন অবস্থায় হতাশা, মৃত্যু, দুঃখ, হাহাকার এসব শব্দই মনে আসে।

বিশ্বজুড়ে মানুষ একটু শান্তি এবং আশার আলোর জন্য অপেক্ষা করছে যে কবে এই নোভেল করোনা ভাইরাসের সমাপ্তি ঘটবে। কিন্তু আশানরুপ কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। প্রকৃতপক্ষে এমন কোন জাদু নেই যা ব্যবহার করে চোখের নিমিষে আমাদের এই দুরবস্থা কাটিয়ে দেওয়া যাবে। এ সময়ে যদি কোন কিছু আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে পারে সেটি হল ভাল কিছুর জন্য প্রত্যাশা করা। আশা করা। যা এই দুরবস্থার মাঝেও আমাদের মনে সাহস যোগাবে। আশা এমন এক ক্ষমতা যা আপনাকে সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবে। চরম খারাপ অবস্থার মাঝেও আশাবাদী মানুষ সুখের অনুভূতি লাভ করতে সক্ষম। তারাই ভাল কিছুর জন্য নিরন্তর স্বপ্ন দেখতে পারে এবং এক সময় অবশ্যই তাদের সাথে ভাল কিছুই হয়। আশা কিভাবে নতুন করে আপনাকে বাঁচার সাহস যোগাবে আসুন সে সম্পর্কে কিছু বিষয় জানা যাক।

১) আশা করা মানে কোন অলীক বিষয় বিশ্বাস করা নয়ঃ আশা করা মানে এমন নয় যে আপনি অযৌক্তিক কিছু ভাবছেন। আশা করা মানে কোন স্বপ্নের দুনিয়ায় বসবাস করাও নয়। আশা করা হল বাস্তব সম্মতভাবে বর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তির পরিকল্পনা করা। আশাবাদী ব্যক্তি কখনোই বাস্তব জীবনের দুঃখ, হতাশাকে অস্বীকার করেনা। বরং সব কিছু মেনে নিয়ে বাস্তব সম্মত উপায়ে এর থেকে উত্তরণের উপায় ভাবে। আশা করা মানে এমন নয় যে কোন কাজ না করেই সব কিছু সহজেই বদলে যাবে। মানুষ আশা করে কারণ তারা জানে পরিবর্তনই নিয়ম। ইতিবাচক পরিবর্তন আসবেই। কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় ও আমাদের আশা রাখতে হবে যে মহামারীর প্রতিষেধক অবশ্যই খুব দ্রুত আবিষ্কৃত হবে এবং আমরা এই মহামারী মোকাবেলায় সমর্থ হব।

২) আশাই বাস্তবতার ধারণা প্রদান করেঃ আশা থেকেই ভবিষ্যৎ বাস্তবতা সৃষ্টি হয়। মানুষ যখন দৃঢ়ভাবে কোন কিছু বিশ্বাস করে তখন সে সেই অনুসারে কাজকর্ম করে। তার লক্ষ্য থাকে সেই কাজটি বাস্তবায়ন করা। এক সময় সেটি বাস্তব হয়ে ধরা দেয়। কোন কিছু অসম্ভব বলে ভাবলে সেটি নিয়ে আমরা আর কোন কিছু ভবিনা। ভয় থেকে তৈরি হয় এক অজানা আশঙ্কা এবং পরিকল্পনার অভাবে সেগুলি কখনোই বাস্তবায়িত হয়না। অসম্ভবই থেকে যায়। তাই আশাবাদী মানুষ অন্যান্য মানুষদের তুলনায় অধিক সফল হয়।

৩) আশা করা নতুনের জন্য পরিকল্পনার শামিলঃ কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের অস্থিরতার এক অথৈ সাগরে নিমজ্জিত করেছে। আমরা এখন আগামীর দিনগুলো সুন্দর করার আশায় নতুন নতুন পরিকল্পনা করছি যা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় আমাদের সহায়ক হবে। আশা করাই এখন আমাদের সব থেকে বড় হাতিয়ার কারণ এর মাধ্যমেই আমরা নতুন দিনের সূর্য দেখার পরিকল্পনা করতে পারব। আমাদের আশা করোনা মোকাবেলা করা এবং সেই লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত আমরা কাজ করে চলেছি নতুন নতুন বাস্তব সম্মত পরিকল্পনার মাধ্যমে। আশাহত মানসিকতা কোন বিপদের মোকাবেলা করতে পারেনা। কারণ আশাহত ব্যক্তির কাছে কোন পরিকল্পনাই অবশিষ্ট থাকেনা।

করোনা মোকাবেলা হতাশার কোন স্থান নেই। অসম্ভব বলে কোন শব্দ নেই। আমরা আশা করব এই দুঃসময় খুব তাড়াতাড়িই দূর হবে এবং আমরা একটি সুস্থ সুন্দর পৃথিবীতে নতুন করে বাঁচবো।

Previous articleমানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটাতে দিনপঞ্জির ভূমিকা
Next articleকরোনার মৃদু উপসর্গ দেখা দিলে যা করবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here